এশিয়া কাপে নিজেদের ১ম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার সাথে হারের পর ২য় ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত জয়ে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ।
অন্যদিকে, গ্রুপ-এ’তে নেপালকে বড় ব্যবধানে হারানোর পর ভারতের সাথে বৃষ্টি বিঘ্নিত পরিত্যক্ত ম্যাচে সর্বপ্রথম দল হিসেবে সুপার ফোর নিশ্চিত করেছিল পাকিস্তান।
ফলে, সুপার ফোরের ১ম ম্যাচে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে স্বাগতিক পাকিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। টসে জিতে প্রত্যাশিতভাবে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
বাংলাদেশের একাদশে ছিল একটি পরিবর্তন। ইনজুরিতে এশিয়া কাপ থেকে ছিটকে যাওয়া নাজমুল হোসেন শান্তর পরিবর্তে একাদশে জায়গা পান লিটন কুমার দাস।
বাংলাদেশের ন্যায় পাকিস্তানের একাদশেও ছিল একটি পরিবর্তন। অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নাওয়াজের পরিবর্তে দলে আসেন আরেক অলরাউন্ডার ফাহিম আশরাফ।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, নাঈম শেখ, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, শামীম পাটোয়ারী, আফিফ হোসেন, হাসান মাহমুদ, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম।
পাকিস্তান একাদশ: বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান, শাদাব খান, সালমান আলি আগা, ফাহিম আশরাফ, ইফতেখার আহমেদ, ফখর জামান, ইমাম উল হক, শাহীন আফ্রিদি, নাসিম শাহ, হারিস রউফ।
ম্যাচের ১ম ইনিংস
বাংলাদেশের হয়ে আবারও ওপেনিং করেন নাঈম শেখ ও গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে গতবারের মতো এবার আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি মিরাজ। নাসিম শাহর করা ২য় ওভারেই কোনো রান না করে ফিরেন এই অলরাউন্ডার।
তারপর একে একে উইকেট হারাতে থাকেন বাংলাদেশী ব্যাটাররা। ১৬ রান করে লিটন, ২০ রান করে নাঈম ও মাত্র ২ রান করে সাজ ঘরে ফিরেন তরুণ তাওহীদ হৃদয়। ১০ ওভার শেষে ৪৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে সাকিবের দল।
এরপর দলের হয়ে হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই দুই তারকা। মাঝে নিজের অর্ধ শতক তুলে নেন সাকিব। মুশফিকের সাথে ১০০ রানের পার্টনারশিপ পূরণ করে আউট হন অধিনায়ক।
সাকিবের ডাগ আউটে ফেরার পরপরই নিজেও হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান মুশফিক। এরপর তিনিও আর বেশিক্ষণ মাঠে থিতু হতে পারেননি। ৮৭ বল খেলে ৬৪ রান করে হারিস রউফকে উইকেট দিয়ে মাঠ ছাড়েন মিস্টার ডিপেন্ডেবল।
তার আগে ১৬ রানে আউট হন শামীম পাটোয়ারী। তারপর তাসকিনের ০(১), আফিফের ১২(১১) ও শরিফুলের ১(৩) রানের পর মাত্র ৩৮.৪ ওভার খেলে ১৯৩ রানে অলআউট হয় কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
ম্যাচের ২য় ইনিংস
১৯৪ রানের ছোট্ট টার্গেট তাড়া করতে নামা দুই পাকিস্তানি ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম উল হক শুরু থেকেই নিজেদের স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেথে থাকেন। ১০ম ওভারে এসে প্রথম উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ। এলবিডব্লিউতে ফখর জামানকে ২০ রানে থামান শরিফুল।
ফখরের পর ক্রিসে আসেন পাক অধিনায়ক বাবর আজম। তবে তিনিও বেশিক্ষণ ইমামকে সঙ্গ দিতে পারেননি। মাত্র ১৭ রান করে তাসকিনের বলে বোল্ড আউট হয়ে ফিরেন ডাগ আউটে।
এরপর অবশ্য আর অঘটন ঘটেনি পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে। ইমামকে সাথে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে নিয়ে যান মোহাম্মদ রিজওয়ান। মাঝে নিজের ১৯তম ওয়ানডে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ইমাম উল হক।
৩৩তম ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে ৭৮ রান করে ইমামকে থামতে হলেও ততক্ষণে জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায় পাকিস্তানের। ইমামের পর মাঠে আসেন আগা সালমান।
সালমানকে সাথে নিয়ে ৩৭তম ওভারে নিজের ফিফটির পাশাপাশি ৩৯.৩ ওভারেই দলকে ৭ উইকেটের জয় উপহার দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন পেসার হারিস রউফ।
ম্যাচ স্কোরবোর্ড (Match Scoreboard)
বাংলাদেশ ১৯৩/১০ (৩৮.৪ ওভার)
মুশফিকুর রহিম – ৬৪ (৮৭)
হারিস রউফ – ৪/১৯ (৬ ওভার)
পাকিস্তান ১৯৪/৩ (৩৯.৩ ওভার)
ইমাম উল হক – ৭৮ (৮৪)
শরিফুল ইসলাম – ১/২৪ (৮ ওভার)
ম্যাচ সেরা – হারিস রউফ