বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ২৬তম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও ফরচুন বরিশাল। সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে প্রথমে টসে জিতে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় ফরচুন বরিশাল।
চট্টগ্রামের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে মেহেদী মারুফ ও ম্যাক্স ও’দাঊদ। তবে শুরুটা ভালো হয়নি চট্টগ্রামের। দ্বিতীয় ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় চট্টগ্রাম। দ্বিতীয় ওভারে ৩ বলে ৫ রান করে মোহাম্মদ ওয়াসিমের বলে তার হাতেই ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে মেহেদী মারুফ। উনমুক্ত চান্দ দ্বিতীয় উইকেটে নেমে ম্যাক্সকে সঙ্গ দিতে থাকে। শুরুটা ভালোভাবে করলেও তাকেও ফিরতে হয়ে শীঘ্রই। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলেই চান্দকে তুলে নেয় খালেদ মাহমুদ।
ম্যাক্স টিকে থাকলেও দলের সংগ্রহ সেভাবে আগাচ্ছিল না। আফিফ নেমেই ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করে। দ্রুত দলকে এগিয়ে নিতে থাকে আফিফ। অপরদিকে ম্যাক্স সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিল। তবে তাকেও তুলে নেয় খালেদ মাহমুদ। ৩৪ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে ম্যাক্স। এরপর শুভাগত হোম এসেই বিদায় নেয়। ৫ বলে ২ রানের ইনিংস খেলে করিম জানাতের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে শুভাগত হোম।
এরপর মাঠে নামে কুর্টিস ক্যাম্পহের। কুর্টিস অসাধারণ সাপোর্ট শুরু করলেও আফিফকে আর এগোতে দেয়নি কামরুল ইসলাম রাব্বি। ২৩ বলে ৩৭ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে আফিফ হোসেন। এরপর দলকে দ্রুত টানতে শুরু করে কুর্টিস। কুর্টিসকে সঙ্গ দিতে শুরু করে ইরফান শুকুর। ইনিংসের শেষ বলে ১৯ বলে ২০ রানের ইনিংস খেলে রান আউট হয় শুকুর।
এতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬৮ রান। ২৫ বলে ৪৫ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল কুর্টিস। বরিশালের পক্ষে দু’টি করে উইকেট শিকার করে কামরুল ইসলাম রাব্বি ও খালেদ মাহমুদ।
১৬৯ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে বরিশালের পক্ষে মাঠে নামে এনামুল হক সাইফ হাসান। দুজনেই ধীরে সুস্থে ইনিংস শুরু করে। প্রথমে একেবারেই রান এগোচ্ছিল না। তারপরই বাউন্ডারি হাঁকাতে শুরু করে এনামুল হক বিজয়। সাইফ হাসানও এনামুলের মতো আগ্রাসী ভুমিকায় খেলতে মেহেদী হাসান মেহেদী হাসান রানার শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে।
এরপর মাঠে নামে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। এবারের আসরের সর্বোচ্চ রান করা সাকিব আজকে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়। ৬ বলে ২ রানের ইনিংস খেলে নিহাদুজ্জামানের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে সাকিব।
এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নেমে প্রথমেই ওয়াইড বলে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়। এতে ০ বলে ০ রান নিয়েই ফিরতে হয় রিয়াদকে। অপরদিকে দ্রুতই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয় এনামুল হক। এক প্রান্তে এনামুল দ্রুত গতিতে রান তুলতে থাকলেও উইকেট পড়তে থাকে অন্য প্রান্তে। রিয়াদের পরে চতুরাঙ্গ ডি সিলভাও স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়। অবশেষে ইফতিখার আহমেদ এসে আউটের ধারা থামায়। ইফতিখার তেমন রান না তুললেও দ্রুত স্কোর এগিয়ে নিচ্ছিল এনামুল। অবশেষে এনামুলকে বোল্ড আউট করে মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ছয়টি করে চার ও ছক্কায় ৫০ বলে ৭৮ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে এনামুল হক বিজয়। পরের ওভারে ইফতিখারকেও তুলে নেয় নিহাদুজ্জামান। ২০ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় ইফতিখার।
এরপর সালমান হোসেন ও করিম জানাতের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দিশেহারা হয়ে যায় চট্টগ্রাম। শেষ ওভারে যখন প্রয়োজন আর মাত্র ২ রান তখন ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে আউট হয় করিম জানাত। ১২ বলে ৩১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে বিদায় নেয় করিম জানাত। এরপর মোহাম্মদ ওয়াসিম নেমে একটি চার হাঁকিয়ে জয় এনে দেয় ফরচুন বরিশালকে। এতে ৪ বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটে জয় পায় ফরচুন বরিশাল। ১৪ বলে ১৮ রান করে অপরাজিত ছিল সালমান হোসেন। চট্টগ্রামের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ টি উইকেট শিকার করে নিহাদুজ্জামান। ২ টি উইকেট পেয়েছে মেহেদী হাসান রানা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স – ১৬৮/৬ (২০)
কুর্টিস ক্যাম্পহের ৪৫ (২৫)
আফিফ হোসেন ৩৭ (২৩)
ম্যাক্স ও’দাঊদ ৩৩ (৩৪)
খালেদ মাহমুদ ২ – ২৬ – ৪
কামরুল ইসলাম রাব্বি ২ -৩৮ -৪
ফরচুন বরিশাল – ১৭১/৭ (১৯.২)
এনামুল হক বিজয় ৭৮ (৫০)
করিম জানাত ৩১ (১২)
সালমান হোসেন ১৮ (১৪)
নিহাদুজ্জামান ৪ – ১৭ -৪
মেহেদী হাসান রানা ২ – ৪২ – ৩.২
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন এনামুল হক বিজয়।