আগামী ৩০ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাচ্ছে এশিয়া কাপের ১৬তম আসর। ওয়ানডে ফরম্যাটে এবারের এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ করছে মোট ছয়টি দল।
যেখানে এবারের আসরের আয়োজক পাকিস্তান হলেও ভারতের আপত্তির প্রেক্ষিতে পাকিস্তানের সাথে আয়োজক হিসেবে শ্রীলঙ্কার নামও যুক্ত করা হয়েছে।
মোট ১৩ ম্যাচের এশিয়া কাপে ৩০ আগস্ট থেকে ৫ সেপ্টেম্বরের গ্রুপ পর্ব, ৬ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বরের সুপার ফোর পর্ব এবং সবশেষ ১৭ সেপ্টেম্বরের ফাইনালের মধ্যে দিয়ে পর্দা নামবে এবারের এশিয়ান ক্রিকেট শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ের।
Table of Contents
এশিয়া কাপ ২০২৩ টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণকারী দলসমূহ – Asia Cup 2023 Update
এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল (এসিসি)-র ৫টি পূর্ণাঙ্গ দেশ:- ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও শ্রীলঙ্কার পাশাপাশি প্রথমবারের মতো বাছাইপর্ব পেরিয়ে আসা নেপালসহ ৬টি দলকে দেখা যাবে এশিয়া কাপে।
৬টি দলকে দুইটি গ্রুপে বিভক্ত করে অনুষ্ঠিত হবে গ্রুপ পর্ব। গ্রুপ পর্বে প্রতিটি দল খেলবে ২টি করে ম্যাচ। যেখানে, গ্রুপ পর্বের সকল ম্যাচ শেষে প্রতিটি গ্রুপের শীর্ষ দুই দল যাবে সুপার ফোরে। সুপার ফোরের প্রতিটি দলের ৩টি করে ম্যাচ শেষে শীর্ষ দুই দলের মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে ফাইনাল।
গ্রুপ – এ | গ্রুপ – বি |
পাকিস্তান | বাংলাদেশ |
ভারত | আফগানিস্তান |
নেপাল | শ্রীলঙ্কা |
এশিয়া কাপের আয়োজক ও ভেন্যু
প্রথমবারের মতো যৌথভাবে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায় আয়োজিত হতে যাওয়া এশিয়া কাপের ম্যাচগুলো হবে দুই দেশের মোট ৪টি ভেন্যুতে। মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১টি ও লাহোরের গাদ্দাফি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩টি করে মোট ৪টি ম্যাচ আয়োজন করবে পাকিস্তান।
অন্যদিকে, ক্যান্ডির পাল্লেকেল্লে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ৩টি ও কলম্বোর আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ফাইনালসহ মোট ৬টি করে ৯টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে শ্রীলঙ্কায়।
আসরের সদ্য প্রকাশিত সময়সূচি
বহুল প্রতিক্ষা ও নাটকীয়তার পর অবশেষে গতকাল (বুধবার) প্রকাশিত হয়েছে এশিয়া কাপের ১৬তম আসরের সময়সূচি। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)-য়ের নিরাপত্তা ইস্যুতে পাকিস্তানে দল না পাঠানো, পাকিস্তানের নিজ দেশে এশিয়া কাপ আয়োজনের অনড় অবস্থাসহ নানা জটিলতায় এতোদিন আটকে ছিল এশিয়া কাপের সময়সূচি।
অবশেষে অনেক আলোচনা ও জল্পনা-কল্পনার অবসানের পর পাকিস্তানের পাশাপাশি সহআয়োজক হিসেবে শ্রীলঙ্কার নাম যুক্ত করে সময়সূচি প্রকাশ করলো এসিসি। যেখানে, উদ্বোধনী ম্যাচে ৩০ আগস্ট পাকিস্তানের মুখোমুখি হবে এশিয়া কাপে অভিষেক হতে যাওয়া নেপাল।
ম্যাচ নং | দল | তারিখ | ভেন্যু |
১ | পাকিস্তান – নেপাল | ৩০ আগস্ট ২০২৩ | মুলতান |
২ | বাংলাদেশ – শ্রীলঙ্কা | ৩১ আগস্ট ২০২৩ | ক্যান্ডি |
৩ | পাকিস্তান – ভারত | ২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ক্যান্ডি |
৪ | বাংলাদেশ – আফগানিস্তান | ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | লাহোর |
৫ | ভারত – নেপাল | ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | ক্যান্ডি |
৬ | শ্রীলঙ্কা – আফগানিস্তান | ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | লাহোর |
৭ (সুপার ফোর পর্ব) | এ(১) – বি(২) | ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | লাহোর |
৮ (সুপার ফোর পর্ব) | বি(১) – বি(২) | ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | কলম্বো |
৯ (সুপার ফোর পর্ব) | এ(১) – এ(২) | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | কলম্বো |
১০ (সুপার ফোর পর্ব) | এ(২) – বি(১) | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | কলম্বো |
১১ (সুপার ফোর পর্ব) | এ(১) – বি(১) | ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | কলম্বো |
১২ (সুপার ফোর পর্ব) | এ(২) – বি(২) | ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | কলম্বো |
১৩ (ফাইনাল) | সুপার ফোর ১ম ও ২য় দল | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | কলম্বো |
এশিয়া কাপের ইতিহাস ও পরিসংখ্যান
এশিয়া কাপের সর্বপ্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয় সংযুক্ত আরব আমিরাতে ১৯৮৪ সালে। ওয়ানডে ও টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হওয়া পূর্বের ১৫টি আসরের ৭টিতেই শিরোপা জিতে এখন পর্যন্ত এশিয়ার সবচেয়ে সফলতম দল ভারত। সবশেষ, ২০২২ সালের টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে আয়োজিত এশিয়া কাপে ৬ষ্ঠ বারের মতো শিরোপা ঘরে তুলে শ্রীলঙ্কা।
এবারের এশিয়া কাপে অংশগ্রহণ করতে যাওয়া ৬ দলের মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান আগে শিরোপার দেখা পেলেও এখন পর্যন্ত এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট মাথায় তোলা হয়নি বাকি ৩ দল বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও নবাগত নেপালের।
এশিয়া কাপের ব্যাটিং ও বোলিং পার্ফম্যান্সের পরিসংখ্যানের দিক দিয়ে এগিয়ে আছে শ্রীলঙ্কা। এশিয়া কাপের এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া ১৫টি আসরের মধ্যে ১২২০ রান নিয়ে সর্বাধিক রান সংগ্রহকারী খেলোয়াড় সানাত জয়াসুরিয়া। অপরদিকে, ৩০ উইকেট নিয়ে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারী বোলার মুত্তাইয়া মুরালিধরন।
আসর (ক্রমিক) | সাল (আয়োজক) | বিজয়ী | রানার্সআপ |
১ | ১৯৮৪ (স. আরব আমিরাত) | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
২ | ১৯৮৬ (শ্রীলঙ্কা) | শ্রীলঙ্কা | পাকিস্তান |
৩ | ১৯৮৮ (বাংলাদেশ) | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
৪ | ১৯৯০-৯১ (ভারত) | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
৫ | ১৯৯৫ (স. আরব আমিরাত) | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
৬ | ১৯৯৭ (শ্রীলঙ্কা) | শ্রীলঙ্কা | ভারত |
৭ | ২০০০ (বাংলাদেশ) | পাকিস্তান | শ্রীলঙ্কা |
৮ | ২০০৪ (শ্রীলঙ্কা) | শ্রীলঙ্কা | ভারত |
৯ | ২০০৮ (পাকিস্তান) | শ্রীলঙ্কা | ভারত |
১০ | ২০১০ (শ্রীলঙ্কা) | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
১১ | ২০১২ (বাংলাদেশ) | পাকিস্তান | বাংলাদেশ |
১২ | ২০১৪ (বাংলাদেশ) | শ্রীলঙ্কা | পাকিস্তান |
১৩ | ২০১৬ (বাংলাদেশ) | ভারত | বাংলাদেশ |
১৪ | ২০১৮ (স. আরব আমিরাত) | ভারত | বাংলাদেশ |
১৫ | ২০২২ (স. আরব আমিরাত) | শ্রীলঙ্কা | পাকিস্তান |
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের পার্ফম্যান্স
এশিয়া কাপের ১৫টি আসরের ১৪টিতেই অংশগ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত শিরোপার মুখ দেখেনি টাইগাররা। ২০১২, ২০১৬ এবং ২০১৮ সালে ফাইনালের মঞ্চে উঠলেও রানার্সআপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয় বাংলাদেশকে।
গত বছরের এশিয়া কাপের টি টোয়েন্টি ফরম্যাটে গ্রুপ পর্ব থেকে বাদ পড়লেও এবারের আসরে নতুন কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের অধীনে বিশ্বকাপের আগে নিজেদের সেরাটা দিয়ে এশিয়া জয় করতে মরিয়া টাইগার বাহিনী।