চোখের জ্যোতি বৃদ্ধিতে গাজরের উপকারিতা সম্পর্কে আমরা প্রায় সবাই জানি। কিন্তু এছাড়াও যে এর আরো কিছু উপকারিতা আছে তা কী আপনারা জানেন?
আজ গাজরের আরো কিছু অজানা বিষয় নিয়ে আমরা আলোচনা করবো। জানতে হলে লেখাটি পড়তে থাকুন শেষ পর্যন্ত।
Table of Contents
গাজরের উপকারিতা; ১৫টি অজানা গুণ
ডায়বেটিস ও ক্যান্সারের ঝুঁকি রোধ করার পাশাপাশি গাজর আমাদের শরীরের নানাবিধ উপকার করে। এতে বিদ্যমান এন্টি অক্সিডেন্ট ও পটাশিয়াম যেমন শরীরের শক্তি বৃদ্ধি করে পাশাপাশি বিভিন্ন শারীরিক সমস্যাও দূর করে। আসুন বিস্তারিত জানা যাক।
ভিডিওঃ গাজরের অজানা ১৫টি উপকারিতা
১. চোখের জ্যোতি বৃদ্ধি
গাজরে আছে বিটা ক্যারোটিন। বয়স্কদের চোখের সমস্যা দূরীকরণে এটি ভীষণ কার্যকর। এছাড়াও এতে বিদ্যমান ভিটামিন সি চোখের অবক্ষয় রোধে সাহায্য করে।
২. হৃদপিন্ড সচল রাখে
গাজর রক্তের কোলেস্টেরল এর মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কম হয়। এছাড়াও গাজর রস করে খেলে হৃদপিন্ডের উপকার হয়।
৩. ক্যান্সার প্রতিরোধে
গাজরে রয়েছে এসিটিলিন ও ফ্যালকারিনল জাতীয় উপাদান। এটি ক্যান্সারের কোষগুলি বিকাশ হতে দেয় না। তাই নিয়মিত গাজর খেলে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।
৪. উজ্জ্বল ত্বক
উজ্জ্বল ত্বক পেতে গাজর খেতে পারেন। গাজরে উপস্থিত পটাশিয়াম ও খনিজ ত্বককে সতেজ রাখে। এবং শুকিয়ে যাওয়া ও দাগ পড়া ত্বককে নিমিষেই উন্নত করে।
৫. হজম শক্তি বৃদ্ধি
গাজরে রয়েছে ফাইবার। এটি লিভারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করার পাশাপাশি হজমে সহায়তা করে। তাই যারা হজমের সমস্যায় ভুগছেন তারা প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় গাজর রাখতে পারেন।
৬. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ
গাজর উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। গাজরে থাকা নাইট্রেট এমন এক রাসায়নিক দ্রব্য যা রক্তনালি প্রশস্ত করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। এছাড়াও গাজরে উপস্থিত পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে দারুণ কার্যকর।
৭. বার্ধক্য
গাজরে যে বিটা ক্যারোটিন থাকে তা ত্বককে র্যাডিক্যালস ও ইউভি রশ্মি থেকে রক্ষা করে। ফলে ত্বক সহজেই বুড়িয়ে যায় না। তাই শুকনো ত্বক, বলিরেখা, পিগমেন্টেশন দূর করতে গাজর দারুণ উপকারি।
৮. হাড় মজবুত করে
জাপানে এক গবেষণায় দেখা গেছে যারা তাদের খাদ্যতালিকায় গাজর নিয়মিত রাখেন তাদের হাড়ের ঘনত্ব বেশি। এই গবেষণার ভিত্তিতে বলা যায়, গাজর হাড় মজবুত করতেও সহায়ক।
৯. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে বিটা ক্যারোটিন এর অবদান অনেক। এবং গাজর বিটা ক্যারোটিন এর একটি উৎস। তাই প্রতিদিন দুটি করে গাজর অথবা এক গ্লাস গাজরের রস খেলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পাবে।
১০. অতিরিক্ত ওজন হ্রাস
গাজরে উপস্থিত ফাইবার হজমে সহায়তা করে। পরোক্ষভাবে এটি তাই ওজন হ্রাসে বেশ সহায়ক। এছাড়াও এতে ক্যালরি কম থাকায় ডায়েটের জন্য উপযুক্ত খাদ্য।
১১. ডায়াবেটিস নিরসনে
চীনের একটি ল্যাবে ইঁদুরের উপর প্রয়োগকৃত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, গাজর রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ইনসুলিন ও এন্টিঅক্সিডেন্টের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই ডায়াবেটিস প্রতিরোধে গাজর দারুণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য গাজর খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
১২. গর্ভাবস্থায়
গর্ভাবস্থায় গাজরের উপকারিতা অনেক। কেননা এতে ফোলেট নামক একটি ভিটামিন আছে যা অনাগত শিশু ও মাকে বিভিন্ন রোগবালাই থেকে দূরে রাখে। তাই অনেকেই শিশুর মানসিক বিকাশ ও সুস্বাস্থ্যের জন্য গাজর খেয়ে থাকেন।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
১৩. শরীরের অভ্যন্তরীণ পরিষ্কার
ক্রোমিয়াম নামের একটি যৌগ আমাদের শরীরে ভাইরাস সৃষ্টি করে। এই ধরনের ভাইরাস অপসারণে গাজরের জুড়ি নেই। গাজরে থাকা গ্লুটাথিওন এইসকল ভাইরাস অপসারণে ভীষণ কার্যকর।
১৪. চুলের যত্নে
গাজরে বিদ্যমান খনিজ আমাদের চুলের সুস্থতা বজায় রাখে। এছাড়াও এতে আছে প্রোটিন, আয়রন ও ভিটামিন সি। এসকল উপাদান চুলকে রাখে ঘন এবং সমৃদ্ধ।
১৫. রোদে পোড়া ত্বকে
রৌদ্রে পোড়া ত্বকে ঠান্ডা গাজর প্রয়োগ করতে পারেন। এতে ত্বক নরম হয় ও স্বাভাবিক উজ্জ্বলতা ফিরে পায়। গাজরে উপস্থিত ভিটামিন সি ত্বকের যত্নে বেশ উপকারি।
সমাপ্তি
নানান গুণে সমৃদ্ধ গাজর খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে আপনি তাই লাভবান হবেন। কেননা, গাজরের উপকারিতা বলে শেষ হবার নয়। পরম উপকারি এই উপাদান তাই আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যোগ করুন।
আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!