গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায়

গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় | লক্ষণ সমূহ এবং ঘরোয়া চিকিৎসা!

গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় –  বর্তমানে বেশিরভাগ মানুষই গ্যাস্ট্রিক সমস্যায় ভোগে। মূলত সঠিকভাবে খাবার গ্রহণ না করার কারণে বেশিরভাগ সময়ে আমরা এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি। খাবারে একটু অনিয়ম হলেই গ্যাস্ট্রিকের মারাত্মক ব্যথা হতে পারে। বেশিরভাগ সময়ই আমাদের অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে গ্যাস্ট্রিক আলসারে পরিণত হয়।  

তাই এই নিবন্ধে আমরা জানবো গ্যাস্ট্রিক সমস্যার লক্ষণ এবং গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় সমূহ।  বেশ কয়েকটি ঘরোয়া উপায় এর মাধ্যমে আপনি চাইলে আপনার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন।

অম্লনাশক ও আলসার নিরাময়কারক (পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত) মেডিসিন কিনুন আমাদের শপ থেকে!

 তাহলে চলুন জেনে নি গ্যাস্ট্রিক সমস্যার লক্ষণ এবং গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় :

গ্যাস্ট্রিক সমস্যার লক্ষণ- 

গ্যাস্ট্রিক হলে প্রথমেই হয়তোবা লক্ষণ গুলো বুঝা যায় না।  হেলিকো বেকটর ফাইলরি  নামের এক ধরনের ক্ষুদ্র ব্যাকটেরিয়ার কারণেই গ্যাস্ট্রিকের মতো সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। গ্যাস্ট্রিক সমস্যার প্রাথমিক লক্ষণ গুলির মধ্যে রয়েছেঃ

বমি- বেশিরভাগ সময়েই গ্যাস্ট্রিক এর কারণে বমি ভাব এবং পরবর্তীতে বমি হয়ে থাকে।  মূলত একটি খাবারের সংক্রমণের কারণে হয়ে থাকে। তাই অনিয়মিতভাবে খাবার গ্রহণ পরিত্যাগ করে,  আমাদের নিয়মিত সঠিক ভাবে খাবার গ্রহণ করতে হবে। বমি ছাড়াও গলা জ্বলা, পেট ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

ভিটামিন বি ১২ এর অভাব-  শুধু গ্যাস্ট্রিক নয় ভিটামিন বি ১২ এর অভাবে  ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, গ্যাস, ডিপ্রেশন সমস্যার মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই আপনার প্রতিদিনের খাবার রুটিনে  পুষ্টিকর খাবার রাখুন।

>> ভিটামিন বি কমপ্লেক্স কি | ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার এবং এর অভাবজনিত রোগ সহ বিস্তারিত!

ডায়রিয়া ও পেট ব্যথা- গ্যাস্ট্রিক সমস্যার অন্যতম লক্ষণ হলো  এই ডায়রিয়া ও পেটে ব্যথা।  আপনি কি প্রায়ই ডায়রিয়া বা পেটে ব্যথা থাকে।  যদি ঘন ঘন সমস্যা দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই আপনার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আছে। বেশিরভাগ সময়টা ফুট পয়জনের কারণে হয়ে থাকে।

খিদে পেলে দ্রুত পেট ভরে যায়-  গ্যাস্ট্রিক সমস্যার অন্যতম লক্ষণ।  আপনার খিদা থাকা সত্ত্বেও যদি অল্প খাবার গ্রহণ  করেই পেট ভরে যায়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা রয়েছে।  

>> গ্যাস্ট্রিক আলসার এর লক্ষণ । আলসার ভালো করার উপায় সহ বিস্তারিত!

*গ্যাস্ট্রিক সমস্যার আরো বেশ কিছু লক্ষণ রয়েছে। চলুন এবার জেনে নেই গ্যাস্ট্রিক কমানোর উপায় সমূহ।  বেশ কিছু ঘরোয়া চিকিৎসার মাধ্যমে আপনি চাইলেই আপনার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা  কমিয়ে এর থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

গ্যাস্ট্রিক  কমানোর ঘরোয়া উপায় সমূহ

দারুচিনি:

দারুচিনি হজমশক্তি উন্নত করে।  এটি পেটের গ্যাস দূর করতে এবং প্রাকৃতিক এনটাসিড হিসেবে বেশ ভালো কাজ করে থাকে। আধা চা চামচ দারচিনির গুঁড়ো  এক কাপ পরিমান গরম পানি নিয়ে  সেদ্ধ করুন। পানি ঠান্ডা হলে পান করুন।  এভাবে দিনে দুই থেকে তিনবার এটি করতে পারেন।

রসুন:

বহু বছর থেকেই গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর করতে রসুন কার্যকরী ভূমিকা পালন করে আসছে।  প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোষ রসুন চিবিয়ে খেলে আপনার গ্যাস্ট্রিক সমস্যা দূর হবে।  তাই আপনার যদি গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে থাকে,  তাহলে দেরি না করে এখন থেকেই প্রতিদিন সকালে এক কোষ রসুন খেতে পারেন।

বেকিং সোডা:

এক গ্লাস পানিতে হাফ চা চামচ বেকিং সোডা মিশ্রন করুন।  এটি আপনার পেটের এসিডের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দারুন ভাবে সহায়তা করবে।

পরিমান মত পানি:

আমরা অনেকেই পরিমাণ মত পানি পান করি না।  আর পরিমান মত পানি পান না করার কারণে আমরা নানা ধরনের অসুখের সম্মুখীন হয়ে থাকে।  তাই প্রতিদিন কমপক্ষে ৮ থেকে ১০ গ্লাস পানি পান করুন।  এটি যেমন আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা নিয়ন্ত্রনে রাখতে সহায়তা করবে।  পাশাপাশি আপনাকে অন্যান্য রোগ থেকেও মুক্তি দেবে।

পুদিনা পাতা:

এই পাতা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা কমাতে দারুন ভাবে সহায়তা করে।  কয়েকটি পুদিনা পাতা নিয়ে গরম পানিতে সেদ্ধ করুন।  এবং দিনে দুই থেকে তিনবার এই পানি পান করুন।  দেখবেন যে খুব দ্রুতই গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

আদা:

গ্যাসের সমস্যায় আদা খুবই কার্যকরী।  এটি আপনার বদহজম দূর করবে।  আপনি চাইলে প্রতিদিন কয়েক টুকরো আদা চিবিয়ে খেতে পারেন।  এছাড়াও নিয়মিত আদা চা খেলে গ্যাস্ট্রিক সমস্যা পরিত্রাণ  হবে।

পেয়ারা পাতা:

কিছু পেয়ারা পাতা নিয়ে গরম পানিতে সেদ্ধ করুন।  ভালো করে ফুটিয়ে পানি ঠান্ডা হলে পান করুন।  প্রতিদিন কমপক্ষে দু’বার এটি পান করলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থেকে মুক্তি পাবেন।

আপেল সিডার ভিনেগার:

গ্যাস্ট্রিক থেকে তাৎক্ষণিক মুক্তি পেতে আপেল সিডার ভিনেগার বেশ কার্যকরী।  এক গ্লাস হালকা গরম পানিতে ২ টেবিল চামচ আপেল সিডার ভিনেগার মিশিয়ে পান করুন।  এটি তাৎক্ষণিক আপনার গ্যাস্ট্রিকের কারণে পেটের ব্যথা কমাতে সহায়তা করবে। 

পেঁপে:

পেঁপেতে রয়েছে পাপাই নামের এক ধরনের এনজাইম।  যা হজম শক্তি উন্নত করে।  নিয়মিত পেঁপে খেলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।

ডাবের পানি:

ডাবের পানি হজম ক্ষমতা উন্নত করে।  এবং নিয়মিত এটি খেলে গ্যাসের সমস্যা থেকে মুক্তি মেলে।  তাই চেষ্টা করুন  আপনার খাবার রুটিনে নিয়মিত ডাবের পানি রাখতে। 

গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা সমাধানে উপরের ঘরোয়া চিকিৎসা গুলো তে যদি আপনার কাজ না হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার নিকটস্থ ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top