অনেকের মধ্যেই অতিরিক্ত ঘুমের প্রভাব দেখা যায়। অনিদ্রার চিকিৎসা হলো ঘুম। কিন্তু অতিরিক্ত ঘুম কমানোর উপায় কী? আসলে রাতের ঘুমটা পুরোপুরি না হলে সারাদিনে ঘুম ঘুম ভাবটা থেকে যায়।
কিন্তু প্রথমেই জানতে হবে অতিরিক্ত ঘুমের কারনটা কী ? তাই আজ শেয়ার করবো কিছু টিপস যা অতিরিক্ত ঘুম কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করবে।
Table of Contents
ঘুম কমানোর উপায় কী? জানুন ৮টি কার্যকরি উপায়
অনিদ্রা যেমন শরীরের জন্য ক্ষতিকর, তেমনি অতিরিক্ত ঘুমও শরীরে নানা সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে । পিঠে ব্যথা, ওজন বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি অতিরিক্ত ঘুমের কারনেই হয়ে থাকে। চলুন তাহলে ঘুম কমানোর উপায় গুলো যেনে নেয়া যাক।
১. রাতের ঘুম পরিপূর্ণ করুন
রাতের ঘুম পরিপূর্ণ করতে রাতে তাড়াতাড়ি শুয়ে পরুন এবং ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমোনোর চেষ্টা করুন। কারন সারাদিন পরিশ্রমের পর রাতে শরীরের প্রয়োজন উপযুক্ত বিশ্রাম। রাতে বিশ্রাম না পেলে বা যথেষ্ট ঘুম না হলে সারাদিন শরীরে ক্লান্তি আসবে এবং ঘুম ঘুম ভাবটা থেকে যাবে। আর তাই রাতের ঘুমটা পরিপূর্ণ করুন এবং অনেক রাত পর্যন্ত জেগে থাকার অভ্যাসটি দূর করুন।
২. শরীরচর্চা করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
শরীরকে ফিটনেস রাখতে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করুন। ঘুম কমানোর উপায় গুলোর মধ্যে ব্যায়াম অন্যতম। ব্যায়াম করলে শরীর যেমন সতেজ থাকে পাশাপাশি দেহের যন্ত্রপাতিও ঠিক থাকে। নিয়মিত ব্যায়ামে রাতে ভালো ঘুম হয়। যার ফলে দুপুরে ক্লান্তি ও ঘুমের ভাবটা থাকে না।
৩. মোবাইল বন্ধ করে ঘুমান।
রাতে অনিদ্রা এবং সারাদিন ঘুম পাওয়ার অন্যতম কারন হলো রাতে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা। রাতে ফোন নিয়ে শোয়ার ফলে রাত অনেকটা কেটে যায় এবং ঘুম দেরিতে আসে। যার ফলে শরীরে পর্যাপ্ত বিশ্রাম হয় না। আর তাই সকালে ঘুম ভাঙে না এবং সারাদিন ঘুম পায়। এছাড়াও মোবাইল মাথার কাছে নিয়ে শোয়ার ফলে ব্রেনের ক্ষতি হয়। তাই রাতে ঘুমানোর সময় মোবাইল ফোন বন্ধ করুন বা দূরে রাখুন।
৪. ঘুম দূর করতে চা,কফি খান।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অনেকেই চা, কফি পান করেন। এই চা, কফি খাওয়ার অভ্যাসটি দুপুরেও গড়ে তুলুন। কারন এতে অতিরিক্ত ঘুমের সমস্যা অনেকটা কমে যাবে। তবে সন্ধ্যাবেলা এবং রাতে ঘুমানোর ৬ থেকে ৭ ঘন্টা আগে কোন চা, কফি খাবেন না। তাহলে রাতে ঘুম আসবে না। এছাড়াও রাতে হালকা খাবার খান।
৫. পানি পান করুন।
প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর এক থেকে দুই গ্লাস পানি পান করুন। এতে আপনার শরীর যেমন সতেজ হবে, ঘুমের ভাবটাও কেটে যাবে। এছাড়াও ঘুম থেকে উঠে ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ মুখ ধুয়ে ফেলুন এবং গোসল করুন। কারন গোসল করলে শরীর ফ্রেশ হবার পাশাপাশি দেহ থেকে ক্লান্তি ভাবটাও দূর হয়ে যাবে এবং সারাদিন ঘুম ঘুম ভাবটা আর থাকবে না।
৬. ঘুমোনোর সময় নির্দিষ্ট করুন।
প্রতিদিন রাতে একই সময়ে ঘুমোতে যান এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময়টাও নির্দিষ্ট করুন। সকালের নাস্তাটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই করে ফেলুন। ঘুম থেকে একই সময় ওঠার কারনে আপনার শরীর যেমন ঠিক থাকবে, তেমনি সমস্ত কাজ-কর্ম নিয়ম অনুযায়ী শুরু করতে পারবেন।
৭. দুপুরের ঘুম বর্জন করুন।
অনেকেরই দুপুরে খাবার পর ঘুমানোর অভ্যাস রয়েছে। আপনি যদি শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ থাকেন, তবে দুপুরের ঘুম থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। কারন দুপুরের ঘুমটা আপনার রাতের ঘুমের ছন্দটাকে নষ্ট করে দিতে পারে। তাই দুপুরে না ঘুমিয়ে এমন কোন কাজে ব্যস্ত থাকুন যেন সময়টা কেটে যায়।
৮. নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখুন।
রাতে ভালো ভাবে ঘুমাতে হলে নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত রাখতে চেষ্টা করুন। কারন দুশ্চিন্তা আর হীনমন্যতা আপনার রাতের ঘুমে বাধা সৃষ্টি করবে।
এছাড়াও রাতে ঘুমানোর পূর্বে ঘর যেন নিঃশব্দ থাকে সেদিকে লক্ষ রাখুন। ঘরের আলো নিভিয়ে দিন। সব টেনশন ভুলে শান্ত সুন্দর পরিবেশে ঘুমান। এতে সারাদিন ঘুম ঘুম থাকবে না, বরং শরীর ও মন দুটোই চাঙা থাকবে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
অতিরিক্ত ঘুমোনোর কুফল
একটা সুস্থ মানুষের জন্য স্বাভাবিক ঘুম হলো ৬ থেকে ৭ ঘন্টা। কিন্তু একটা মানুষ যখন ৯ থেকে ১০ ঘন্টা ঘুমায়, তখন সেটি অতিরিক্ত ঘুম বলে ধরা হয়। এই অতিরিক্ত ঘুমোনোকে চিকিৎসা বিজ্ঞানীরা “হাইপারসোমনিয়া” বলে থাকেন।
এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে কিছু লক্ষন দেখা দেয়। যেমন-
- দুশ্চিন্তা বা কোন বিষয় নিয়ে উদ্বীগ্ন হওয়া
- শারীরিক দূর্বলতা
- স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা ইত্যাদি
এই সমস্ত কারনে অনিদ্রাহীনতা দেখা দেয়। ফলে তারা ঘুমের আদর্শ সময় পার করেও অতিরিক্ত ঘুমোতে চায়।
এছাড়াও হৃদযন্ত্রের সমস্যা, থাইরয়েড, স্লিপ অ্যাপোনিয়া, ডিপ্রেশনের কারনেও অতিরিক্ত ঘুম হতে পারে। কিছু কিছু ওষধের প্রভাবে এবং অনিয়মিত জীবনশৈলীর কারনেও অনেকে অতিরিক্ত ঘুমায়।
তবে অতিরিক্ত ঘুমের পেছনে যদি শারীরিক সমস্যা না থাকে, তাহলে উল্লেখিত ঘুম কমানোর উপায় গুলি অনুসরণের মাধ্যমেই অতিরিক্ত ঘুমের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে।
শেষ কথা
পরিশেষে বলা যায়, উপরে উল্লেখিত ঘুম কমানোর উপায় গুলো অনুসরণের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হবেন। এছাড়াও শারীরিক সুস্থতা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও স্বাস্থ্যকর খাবার খান। এতে শরীর ও মন ভালো এবং সতেজ থাকবে।
আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে ক্লিক করুন!