আইপিএলের অন্যতম ফ্যান ফেবারিট দল দিল্লি ক্যাপিটালস। বাংলাদেশেও এটার পরিচিতি অনেক বেশি। এটার মূল কারণ মুস্তাফিজুর রহমান রয়েছে দিল্লিতে। তবে গত তিন ম্যাচে কোন প্রকার সুবিধা করতে পারেনি দিল্লি ক্যাপিটালস।
তিন ম্যাচই বড় ব্যাবধানে পরাজিত হয়েছে। তাই আজ দলে কিছুটা পরিবর্তন এনেছে দিল্লি এতে আজ প্রথম দলে জায়গা পেয়েছে মুস্তাফিজ।
আজ মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের বিপরীতে মাঠে নামে দিল্লি ক্যাপিটালস। টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় মুম্বাই। দিল্লির পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে ডেভিড ওয়ার্নার ও পৃথ্বি শো। শুরুটা ভালোই করে দু’জনে। তবে ওপেনিং জুটি খুব বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। চতুর্থ ওভারে হৃতিক শোকেনের বলে ক্যামেরুন গ্রীনের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে শো।
১০ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে ফিরে শো। ওয়ার্নারকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে মানিস পান্ডে। ওয়ার্নার আস্তে ধীরে রান এগিয়ে নিচ্ছিল। পান্ডে দ্রুত রান তোলার চেষ্টা করে। এতে দ্রুতই ফিরতে হয় তাকেও। ১৮ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে চাওয়ার বলে সাজঘরে ফিরে পান্ডে।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে ৩ টি উইকেটে হারায় দিল্লি ক্যাপিটালস। ৪ বলে ২ রান আউট হয় ধুল। এরপর রোভমান পাওয়েল ৪ বলে ৪ রান করে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়। এরপর লালিত ইয়াদভও মাত্র ৪ বলে ২ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে। এরপর ডেভিড ওয়ার্নারকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে আক্সার পাটেল। পাটেল এসেই ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করে।
এতে দ্রুত রান এগোতে শুরু করে দিল্লির। এতে খুব দ্রুতই হাফ সেঞ্চুরি পূর্ন করে পাটেল। অপরদিকে ওয়ার্নারও হাফ সেঞ্চুরির দেখা পায়। অবশেষে তাদের জুটি ভাঙে জ্যাসন। ১৯তম ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই পাটেলকে সাজঘরে ফেরায় জ্যাসন। ৫ ছক্কা ও ৪ চারে ২৫ বলে ৫৪ রানের অসাধারণ ব্যাটিং করে সাজঘরে ফিরে পাটেল।
একই ওভারের তৃতীয় বলে ৪৭ বলে ৫১ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে ডেভিড ওয়ার্নার। এরপর আর কেউ দাঁড়াতেই পারেনি ক্রিজে। মাত্র ১ রানে আউট হয় পোরেল। শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে কূলদ্বীপ ইয়াদভ। আনরিচ নর্টজে ৫ রান নিয়ে সাজঘরে ফিরলে ১০ উইকেট হারায় দিল্লি।
এতে ১৯.৪ ওভারে ১০ উইকেট হারিয়ে দিল্লির সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭২ রান। মুম্বাইয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট শিকার করে জ্যাসন ও চাওলা।
১৭৩ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে মুম্বাইয়ের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে রোহিত শর্মা ও ঈশান কিষান। মুম্বাইয়ের শুরুটাও অসাধারণ হয়। দুই ওপেনার অসাধারণ জুটিতে দ্রুত এগোতে থাকে মুম্বাই। অষ্টম ওভারে দলীয় ৭১ রানে প্রথম উইকেট হারায় মুম্বাই।
২৬ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে ঈশান কিষান। ঈশান ফিরলে রোহিতকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে তিলাক ভারমা। ভারমা এসেও দ্রুত রান তুলতে মনোযোগ দেয়।
বোলিংয়ে কোনভাবেই সুবিধা করতে পারছিল না দিল্লি। মুস্তাফিজও প্রথম ওভারে ১৩ রান দেয়। অবশেষে সফলতার দেখা পায় মুকেশ কুমার। ১৬তম ওভারে পঞ্চম বলে ২৯ বলে ৪১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে ভারমা।
তার পরের বলেই শূন্য রানে সূর্যকুমার ইয়াদভকেও সাজঘরে ফেরায় মুকেশ। এরপরের ওভারে বোলিংয়ে আসে মুস্তাফিজ। ওভারের পঞ্চম বলে ৪৫ বলে ৬৫ রান করা রোহিতকে সাজঘরে ফেরায় মুস্তাফিজ। এতে আশার আলো দেখতে পায় দিল্লি।
শেষ দুই ওভারে মুম্বাইয়ের প্রয়োজন ছিল ২০ রান। বোলিং করতে আসে মুস্তাফিজ। তবে এবারে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি। শর্ট লেন্থে বল দিয়ে ছক্কা খায় মুস্তাফিজ। একই ওভারের শেষ বলে আবারও মুস্তাফিজকে ছক্কা হাঁকায় টিম ডেভিড।
এতে শেষ ওভারে মুম্বাইয়ের প্রয়োজন ছিল মাত্র ৫ রান। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ২ রান। শেষ অসাধারণ ড্রাইভে দুই রান নিয়ে জয় পায় মুম্বাই। এতে ৬ উইকেটে জয় পায় মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। ১১ বলে ১৩ রান করে অপরাজিত ছিল ডেভিড।
অপর প্রান্তে ৮ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল ক্যামেরন গ্রীন। দিল্লির পক্ষে সর্বোচ্চ দু’টি উইকেট শিকার করে মুকেশ কুমার ও একটি উইকেট শিকার করে মুস্তাফিজুর রহমান। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে রোহিত শর্মা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
দিল্লি ক্যাপিটালস – ১৭২/১০ (১৯.২)
আক্সার পাটেল ৫৪ (২৫)
ডেভিড ওয়ার্নার ৫১ (৪৭)
মানিস পানডে ২৬ (১৮)
পিয়ুস চাওলা ৩ – ২২ – ৪
জ্যাসন ৩ – ২৩ – ৩
মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স – ১৭২/৪ (২০)
রোহিত শর্মা ৬৫ (৪৫)
তিলক ভার্মা ৪১ (২৯)
ঈশান কিষান ৩১ (২৬)
মুকেশ কুমার ২ – ৩০ – ২
মুস্তাফিজুর রহমান ১ – ৩৮ – ৪