বিভিন্ন কারণে আমাদের নখে বিভিন্নরকম সংক্রমণ দেখা দেয়। এসব নখের রোগ ও চিকিৎসা জানলে সহজেই তা প্রতিহত করা যায়। তাই আজ আমরা নখের রোগগুলি ও এর প্রতিকার নিয়ে আলোচনা করবো।
Table of Contents
নখের রোগ ও চিকিৎসা
প্যারোনাইকিয়া নখের অন্যতম একটি রোগ। দীর্ঘক্ষণ পানিতে থাকার কারণে এই রোগ হয়। এন্টিফাঙ্গাস ক্রিম ব্যবহারে এই রোগ প্রতিহত করা সম্ভব৷
এরকম আরো কিছু নখের রোগ ও এর চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে লেখাটি পড়ে ফেলুন ঝটপট।
নখের ৫টি ভয়ানক রোগের কার্যকরি সমাধান
বিভিন্ন মানুষের নখ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। তবে বেশিরভাগই ছত্রাক বা ফাঙ্গাসজনিত। এছাড়াও অনেক সময় নখের কুনি আটকে গিয়ে রোগের সৃষ্টি হয়।
নিম্নে নখের সাধারণ ৫টি রোগ ও এর চিকিৎসা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
১. প্যারোনাইকিয়া
নখের ভাঁজে প্রায়শই Infection বা ঘা হতে দেখা যায়। বাড়ির মেয়েরা, যাদের বেশিরভাগ সময় পানি নাড়াচাড়া করতে হয়, তাদেরই এই রোগ বেশি হয়। এবং ডায়বেটিস রোগীরা নখের প্যারোনাইকিয়া রোগে বেশি আক্রান্ত হয়।
চিকিৎসা: স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এড়িয়ে চলতে হবে। পানি থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবে। এবং ডাক্তারের পরামর্শে এন্টিফাঙ্গাল ক্রিম ব্যবহার করতে হবে।
২. টিনিয়া আনগুইয়াম
এটি নখের ছত্রাকজনিত রোগ। পানি থেকেই এর উৎপত্তি। প্রথমে একটি নখ এতে আক্রান্ত হয়। এবং ধীরে ধীরে সবগুলো নখে ছড়িয়ে পড়ে। এই রোগে আক্রান্ত হলে নখ মোটা হয়ে যায়।
চিকিৎসা: এন্টিফাঙ্গাল ঔষধ ব্যবহারে নখের ছত্রাক রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। আক্রান্ত স্থানের পরিমাণ বেশি হলে অবশ্যই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। আক্রান্ত স্থানটি ছেঁচে নিয়ে রোগ নির্ণয় করলে এর দ্রুত চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হয়।
৩. নককুনি
নখ কাটার পর অনেকসময় নখের কুনি থেকে যায়। পরবর্তীতে এটি মাংসাল অংশে ঢুকে পড়ে। এবং আস্তে আস্তে ব্যাকটেরিয়ায় সংক্রমিত হয়ে ঘা হয়৷ এবং পুঁজ জমে।
চিকিৎসা: প্রদাহ কম হলে ট্রাইক্লোরো অ্যাসিটিক এসিড বা সিলভার নাইট্রেট ব্যবহারে উপকার মেলে। এছাড়াও অনেকসময় কুনি কেটে ফেলা গেলে তা কেটে ফেলতে হয়। এবং ইনফেকশন হলে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার আবশ্যক। চুলের খুশকি দূর করার উপায় জেনে নিন!
৪. ইন গ্রোন নেইল
অতিরিক্ত চর্বিবহুল পায়ে নখের গ্রোথ বাধাগ্রস্ত হয়। ফলে নখ ঠিকমতো বৃদ্ধি না পেয়ে ভেতরে ঢুকে যায়। এবং পা ফুলে যায় ও ব্যথা অনুভূত হয়। একেই নখের ইন-গ্রোন রোগ বলে। এছাড়াও সবসময় শক্ত জুতা পায়ে দিয়ে থাকলে এমনটা হতে পারে।
চিকিৎসা: ইন-গ্রোন নখের ফলে পায়ে অতিরিক্ত ব্যথা অনুভূত হলে হালকা গরম পানিতে ২০ মিনিট করে দিনে ৩ বার পা ডুবিয়ে রাখতে পারেন। এবং চিকিৎসকের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। অতিরিক্ত ব্যথায় পেইন কিলার খাওয়ার অনুমতি রয়েছে।
৫. ফ্রেজাইল নেইল
নখে সাদা বা হলুদ রঙ অথবা নখ ভঙ্গুর হয়ে যাওয়াকে ফ্রেজাইল নেইল রোগ বলে। ভিটামিন ও মিনারেলের অভাবে এটি হয়ে থাকে। তাই পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এই রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা। ত্বকের যত্নে মুলতানি মাটির ১২টি উপকারিতা ও অপকারিতা জেনে নিন!
চিকিৎসা: আয়রন, জিংক ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেহেতু এই রোগে রোগীর কোনো অসুবিধা হয় না তাই এর আলাদা কোনো চিকিৎসা নেই। পুষ্টিকর খাবার খেলেই এই রোগ নিরাময় করা যায়।
নখের ফাঙ্গাস কেন হয়
টাইট জুতো ও দীর্ঘক্ষণ মোজা পড়ে থাকলে নখ ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়াও পূর্বের আঘাত থেকে সৃষ্ট ঘা ফাঙ্গাসের জন্ম দিতে পারে। অসাবধানতাবশত যদি পায়ে আঘাত পান, তাহলে নখে ফাঙ্গাস হবার সম্ভাবনা থাকে।
এন্টিবায়োটিক ক্রিম ব্যবহারই নখের ফাঙ্গাস রোগের একমাত্র চিকিৎসা। এছাড়া পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকলে, স্বাভাবিক জুতো পড়লে এবং পা ভালোমতো পরিষ্কার করলে এই রোগ এড়িয়ে চলা যায়।
নখের কুনি দূর করার উপায়
দুই কাপ উষ্ম গরম পানিতে এক কাপ সাদা ভিনেগার দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন। পনেরো মিনিট পর পরিষ্কার কাপড় দিয়ে পা মুছে নিন। এছাড়াও ট্রাইক্লোরো অ্যাসিটিক এসিড নখের কুনি দূর করার ঔষধ হিসেবে ব্যবহার হয়। তবে এটি ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
নষ্ট নখ ভালো করার উপায়
আপনার নখ যদি কোনো কারণে নষ্ট হয়ে পড়ে তবে নীচের টোটকা অনুসরণ করে পূনরায় আপনি সুস্থ নখ ফিরে পেতে পারেন।
- কুসুম গরম পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করুন।
- পেস্টটি নখের উপর লাগিয়ে রাখুন।
- পনেরো মিনিট পর পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
- এভাবে ২/৩ দিন করলে আপনার নখ আবার প্রাণ ফিরে পাবে।
এছাড়াও জুতোর ভেতরে বেকিং সোডা ছিটিয়ে রাখতে পারেন।
উপসংহার
নষ্ট নখ থাকলে মানুষের সামনে পা বের করতেও লজ্জা লাগে। তাই সাদা ধবধবে নখের প্রয়োজন রয়েছে। নখের রোগ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানলে প্রাণবন্ত নখ পাওয়া যায়। তাই উপরের লেখাগুলি আপনার জন্য হতে পারে সহায়ক।