বেকিং সোডা শুধু খাবার বেলাতেই নয়, রূপচর্চার কাজেও ব্যবহৃত হয়। কীভাবে এটি খাবারে বৈচিত্র্য নিয়ে আসবে এবং আপনার রূপকে করে তুলবে দ্বিগুণ আকর্ষণীয় তা জানতে আমাদের আজকের লেখাটি পড়ে ফেলুন ঝটপট।
আমরা যারা বাড়িতে কেক বানাতে ভীষণ পছন্দ করি, তারা বেকিং সোডার সাথে পরিচিত। রান্নাঘরে এটি যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি উপাদান। তবে অনেকেই এই উপাদানটি সম্পর্কে জানেন না। অনেকে আবার এটিকে বেকিং পাউডারের সাথে গুলিয়ে ফেলেন।
ভিডিওঃ ভিনেগার কি; জেনে নিন এর ব্যবহার ও স্বাস্থ্য উপকারিতা জানুন!
Table of Contents
বেকিং সোডা কি ?
বেকিং সোডা কি এটি মূলত একটি পাউডার। অনেকটা বেকিং পাউডারের মতোই। তবে দুটোর কার্যকারিতা ভিন্ন। নান, লুচি, বাটারমিল্ক, বটোরার মতো ভাজা খাবারে বেকিং সোডার ব্যবহার হয়।
আবার কেক বা কুকিজ জাতীয় খাবারে এই দুটোই একত্রে ব্যবহার করা যায়। বেকিং পাউডার খাবারকে নরম রাখতে সাহায্য করে এবং বেকিং সোডা খাবারকে ফোলাতে৷
বেকিং সোডার রাসায়নিক নাম সোডিয়াম বাই-কার্বোনেট। এটি বেকিং পাউডারের সাথে বিক্রিয়া করে কার্বোন-ডাইঅক্সাইড তৈরি করে যা খাবারকে ফুলিয়ে রাখে। অর্থাৎ আপনি যখন একটি কেক বানাবেন, তখন কেকটিকে ফোলাতে বেকিং পাউডার ও বেকিং সোডা দুই-ই প্রয়োজন হবে।
বেকিং সোডা ও বেকিং পাউডারের মধ্যে পার্থক্য
দুটি উপাদান মাঝে মাঝে একই খাবারে ব্যবহার হলেও এদের কাজ ভিন্ন। তাই এই দুটির পার্থক্য না জানলে হিতে বিপরীত হতে পারে। চলুন তবে বেকিং সোডা ও বেকিং পাউডারের পার্থক্য জেনে নিই।
বেকিং সোডা | বেকিং পাউডার |
১/ বেকিং সোডা হলো পিওর সোডিয়াম বাই-কার্বোনেট। | ১/ বেকিং পাউডার বেশকিছু এসিডের মিশ্রণ যেখানে স্বল্প পরিমাণ সোডিয়াম বাই-কার্বোনেট আছে। |
২/ দই, বাটারমিল্ক, লেবুর রসের মতো টক এবং নান, লুচির মতো ভাজা জিনিসের ক্ষেত্রে বেকিং সোডা ব্যবহার হয়। | ২/ কেক, কুকিজের মতো খাবার যেগুলো ভাজা হয় না, সেগুলোতে বেকিং সোডার সাথে বেকিং পাউডার ব্যবহার হয়। |
৩/ বেকিং সোডার পরিবর্তে বেকিং পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে। | ৩/ বেকিং পাউডারের পরিবর্তে বেকিং সোডা ব্যবহার করা যায় না। |
৪/ বেকিং সোডা মূলত দানা দানা হয়ে থাকে। | ৪/ বেকিং পাউডার ময়দা এবং সাধারণ পাউডারের মতো মসৃণ হয়৷ |
৫/ খাবার ফোলাতে সাহায্য করে। | ৫/ খাবার নরম করতে ব্যবহার হয়। |
রান্নার কাজে বেকিং সোডা
বেকিং সোডা মূলত খাবার সোডা নামেই পরিচিত। রান্নাবান্নায় এর ব্যবহার দীর্ঘদিন থেকেই হয়ে আসছে। কেক, বিষ্কুট, পাউরুটি ইত্যাদিতে এটি ব্যবহার হয়। নানরুটি, কেক, লুচি ফোলাতে এর জুড়ি নেই। আবার রান্নার সময় কোনোকিছু সিদ্ধ করতে বেকিং সোডা ভূমিকা রাখে।
বেকিং সোডা সাধারণত একটি এসিড যা স্বাদে খানিকটা লবণাক্ত। হজমে সমস্যা হলে লেবুর রসের সাথে এটি মিশিয়ে খেলে আরাম পাওয়া যায়। এটি এন্টি এসিড হিসেবেও কাজ করে ফলে লিভার পরিষ্কার রাখে এবং বাজে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকাংশেই কমিয়ে আনে।
আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!
রূপচর্চায় বেকিং সোডা
বেকিং সোডা কি ভাবে রূপচর্চায় বেকিং সোডার রয়েছে অভূতপূর্ব অবদান। এটি যেমন ত্বকের যত্নে সাহায্য করে তেমনি চুলের খুশকি ও দাঁত পরিষ্কার রাখতে এর ভূমিকা অপরিসীম। রূপচর্চায় বেকিং সোডার অবিশ্বাস্য কিছু ব্যবহার নীচে তুলে ধরা হলো।
- ত্বকের ব্রণ দূর করতে বেকিং সোডার সাথে পানি মিশিয়ে পেস্ট করে গালে লাগিয়ে রাখুন। ফলাফল আপনি নিজের টের পাবেন।
- বাথটাবে অল্প একটু বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। জীবাণু ও রোদে পোড়া দাগ দূর হবে নিমিষেই।
- শ্যাম্পুর সাথে ১ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে চুলে মাসাজ করুন। খুশকির ঝামেলা থেকে মুক্তি পাবেন।
- ৩ ভাগ বেকিং সোডার সাথে ১ ভাগ পানি মিশিয়ে পেস্ট করুন। এরপর গোড়ালি ও কনুইয়ে লাগিয়ে রাখুন। কালচে ভাব দূর হবে৷
- টুথপেষ্ট এর বদলে বেকিং সোডা ব্যবহার করুন। ২ সপ্তাহ পর আবিষ্কার করবেন সাদা ঝকঝকে দাঁত।
- ত্বক উজ্জ্বল করতে ১ চামচ মধুর সাথে ১ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন। দুই মিনিট মাসাজ করুন। এবং ঠান্ডা পানিয়ে ধুয়ে ফেলুন। ফলাফল পাবেন খুব দ্রুতই।
ত্বকের যত্নে আরও পড়ুন…
শেষ কথা
বেকিং সোডা কি এবং বেকিং সোডার ব্যবহার জানলে অনেক সমস্যাই দূর করতে পারবেন নিমিষে। এবং আপনার রান্না করা খাবার হবে সুন্দর এবং সুস্বাদু। তাই বেকিং সোডা সম্পর্কে সম্পূর্ণ ধারণা নিয়ে এর পরিপূর্ণ কার্যকারিতা ভোগ করুন।
এছাড়া আপনার মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে সরাসরি জানিয়ে দিন আমাদের কমেন্ট বক্সে। আমরা পাঠকদের সহায়তায় সদা তৎপর।
পুষ্টিকর খাবার নিয়ে পড়ুন…