ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ যদি কারো শরীরে ধরা পড়ে তবে স্বাভাবিকভাবেই তা আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বস্তুত, ক্যান্সার শব্দটিই বড় আতঙ্কের। কেননা, এটি মানুষকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়। তবে এ যুগের উন্নত চিকিৎসা পদ্ধতি বিপ্লব বয়ে এনেছে। চিকিৎসার মাধ্যমে এখন ক্যান্সার ভালো হয়। এবং ক্যান্সারে মৃত্যুর হার সারা পৃথিবীব্যাপী অনেকটাই কমে এসেছে। সময়ের পরিক্রমায় ব্লাড ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা পদ্ধতিও পাল্টেছে। সেইসাথে হয়েছে উন্নত।
ব্লাড ক্যান্সার হলো শ্বেত রক্তকণিকার ক্যান্সার। এটিকে আমরা লিউকেমিয়া বলে থাকি। লিউকেমিয়া রোগে যদি কেউ আক্রান্ত হয় বা কারো শরীরে যদি ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ ধরা পড়ে তবে তার জীবন পুরোপুরি থমকে যায়। এক গভির কালো অন্ধকারে তার জীবন আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তবে আশার আলো হয়ে দেখা দেয় বর্তমান চিকিৎসা পদ্ধতি। লিউকেমিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিও একসময় সুস্থ হতে শুরু করে। ফিরে পায় নতুন জীবন।
পাঠক, আজ আমরা ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ নিয়ে আলোচনা করবো। যদি কখনো এমন কালো অধ্যায় আপনার জীবনে নেমে আসে তবে তা মোকাবিলা করতে এ বিষয়গুলি জেনে রাখা ভালো। তাহলে চলুন, শুরু করা যাক।
(পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত) মেডিসিন কিনুন আমাদের শপ থেকে!
Table of Contents
ব্লাড ক্যান্সার কেন হয় ?
ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ জানার আগে যদি আমরা ব্লাড ক্যান্সার হওয়ার কারণগুলো জেনে ফেলতে পারি এবং এই কারণগুলো প্রতিরোধ করার ক্ষমতা যদি আমাদের হাতে থাকে, তবে সহজেই আমরা এর মোকাবিলা করতে পারি। যদিও বিজ্ঞানিরা ব্লাড ক্যান্সার হওয়ার সঠিক কারণ এখনো খুঁজে বের করতে পারেনি তবে ধূমপান, তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাব, রাসায়নিক বর্জ্য, কীটনাশক, ভাইরাস ইত্যাদি বিষয়গুলোকে ব্লাড ক্যান্সারের কারণ হিসেবে দায়ী করা হয়।
এর পেছনে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা হলো, উপরিউক্ত বিষয়গুলির কারণে মানুষের শরীরে জীনে মিউটেশন ঘটে। কোষ বিভাজনে অস্বাভাবিক সংকেত যায়। ফলে অস্বাভাবিক কোষগুলি রক্তপ্রবাহে এসে মিশে যায়। ফলস্বরূপ ব্লাড ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি রোগ হানা দেয়।
ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণগুলো কী কী ?
ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ নিয়ে অনেকেই বেশ সন্ধিহান। দীর্ঘদিনের জ্বর, ত্বকে লাল র্যাশ, হাড়ে ব্যথা, দাঁতের মাড়ি দিয়ে রক্তপাত ইত্যাদি লক্ষণ নিয়েই ব্লাড ক্যান্সার ধরা দেয়। তবে এগুলো ছাড়াও আরো বেশকিছু লক্ষণ রয়েছে। গবেষণা অনুসারে নীচে ব্লাড ক্যান্সারের ১০টি লক্ষণ তুলে ধরা হলো।
১. দীর্ঘস্থায়ী ক্লান্তি: ব্লাড ক্যান্সার এবং মলদ্বারের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে এই উপস্বর্গ দেখা দেয়। যদিও অন্যান্য যেকোনো রোগের কারণে শরীরে ক্লান্তি অনুভূত হতে পারে তবে আপনি যদি অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করেন তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়াই ভালো।
২. আকষ্মিক ওজন হ্রাস: যেকোনো ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হলো ওজন কমে যাওয়া। তাই হঠাৎই যদি আপনার ওজন কমতে শুরু করে তবে সেটা ভাবনার কারণ।
৩. দীর্ঘদিনের ব্যথা: কোনো কারণ ছাড়াই যদি দীর্ঘদিন আপনি শরীরে কোনো ব্যথা অনুভব করেন তবে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন।
৪. অস্বাভাবিক মাংসপিন্ড: শরীরে অস্বাভাবিক মাংসপেশি পরিলক্ষিত হলে সেটা ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে। তাই এরকম কোনোকিছু দেখা দিলে বা শরীরে যেকোনো কিছুর পরিবর্তন ঘটলে ডাক্তারের কাছে যান।
৫. ঘন ঘন জ্বর: ক্যান্সার শরীরে বাসা বাধলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রোধ করে দেয়। ফলে ঘন ঘন জ্বর দেখা দিতে পারে।
৬. ত্বকের পরিবর্তন: ত্বক লালচে হয়ে যাওয়া, অস্বাভাবিক ফুস্করি দেখা দেওয়া, অতিরিক্ত তিল ও আচিল হওয়া ক্যান্সের উপস্বর্গ হতে পারে।
৭. দীর্ঘস্থায়ী কাশি: জ্বী, দীর্ঘস্থায়ী কাশি শুধু যক্ষারই লক্ষণ নয়। এটি ক্যান্সারের উপস্বর্গও হতে পারে।
৮. মল-মূত্র ত্যাগের আভাসে পরিবর্তন: যদি আপনাকে মল-মূত্র ত্যাগের জন্য ঘন ঘন শৌচাগারে যেতে হয় তবে এটা ক্যান্সারের উপস্বর্গ হতে পারে।
৯. অকারণে রক্তক্ষরণ: কাশির সময় রক্তক্ষরণ হওয়া ক্যান্সারের বড় একটা লক্ষণ হিসেবে ধরা দিতে পারে।
১০. খাবার গ্রহণে সমস্যা: বদহজম কন্ঠনালির ক্যান্সারের অন্যতম এক উপস্বর্গ। তাই কেউ যদি খাবার গ্রহনে কোনো সমস্যায় ভুগেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
আরো পড়ুন: হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঘরোয়া টিপস
ব্লাড ক্যান্সার কী ভালো হয় ?
ব্লাড ক্যান্সারকে মরণব্যাধি রোগ হিসেবে ধরা হলেও বর্তমান চিকিৎসা ব্যবস্থায় এই রোগ সেরে ওঠে। তাছাড়া সব ব্লাড ক্যান্সারই মরণব্যাধি নয়। প্রকারভেদ অনুসারে এর চিকিৎসাও ভিন্ন। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কেমোথেরাপি দিয়ে রোগীকে সুস্থ করা হয়।
বস্তুত, বেশকিছু বিষয়ের উপর ব্লাড ক্যান্সার চিকিৎসার ফলাফল নির্ভর করে। যেমন, রোগের প্রকারভেদ, ব্যক্তির অর্থ ব্যয় করার সামর্থ্য, ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ ও উন্নত চিকিৎসা ইত্যাদি।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
ব্লাড ক্যান্সার প্রতিরোধক খাবার :
এখন পর্যন্ত ক্যান্সার প্রতিরোধে নির্ভরযোগ্য কোনো মেডিসিন আবিষ্কৃত হয়নি। তবে ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ ধরা দেওয়ার আগেই কিছু খাবার গ্রহনের মাধ্যমে আমরা তার প্রতিকার করতে পারি। প্রবন্ধের এই অংশে আমরা এমনই কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধক খাবার উল্লেখ করবো। চলুন একনজর দেখে নেওয়া যাক সেসকল খাবারগুলো।
উপরিউক্ত খাবারগুলি গ্রহণ করলে ক্যান্সার থেকে দূরে থাকা সম্ভব। তাই আসুন আমরা চেষ্টা করি প্রতিদিন না হলেও মাঝে মাঝে এসব খাবার গুলো আমরা গ্রহণ করার।
শেষ কথা:
কোনো মেডিসিন আবিষ্কার না হলেও বিভিন্ন থেরাপির মাধ্যমে ব্লাড ক্যান্সার সারাবিশ্বে এখন মোকাবিলা করা হচ্ছে। এবং ব্লাড ক্যান্সার থেকে সুস্থ হয়ে ফিরে আসা রোগীর সংখ্যাও এখন দিনকে দিন বেড়ে চলেছে। তাই কখনো ব্লাড ক্যান্সারের লক্ষণসমূহ আপনার বা আপনার পরিবারের কারো দেখা দিলে ঘাবড়ে যাবেন না। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চললে এই মরণব্যাধি থেকেও ফিরে আসা সম্ভব।