আমাদের বাড়িতে প্রতিদিনই ভাত রান্না হয়। তবে অনেকেই ভাতের মাড় ফেলে দিই। কিন্তু আপনি জানেন কী ভাতের মাড়ের উপকারিতা অনেক?
শুধু খাবার হিসেবেই নয়, ত্বক ও চুলেও ভাতের মাড় ব্যবহার করা যায়। বিস্তারিত জানতে লেখাটি পড়তে থাকুন শেষ পর্যন্ত।
ভিডিওঃ ভাতের মাড়ের যে উপকারিতা জানলে আপনি অবাক হবেন!
Table of Contents
ভাতের মাড়ের উপকারিতা অজানা ১০টি গুণ
ভাতের মাড়ের অসাধারণ সব স্বাস্থ্যউপকারিতা এখানে তুলে ধরা হলো। এর মধ্যে অনেককিছুই হয়তো আপনার অজানা।
পুষ্টি যোগায়
ভাতের মাড়ে রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভিটামিন বি এবং ই। এছাড়াও লৌহ, আমিষ, শর্করা, ফসফরাস ইত্যাদিতে পূর্ণ ভাতের মাড়। তাই যারা অপুষ্টিতে ভোগেন, ডাক্তাররা তাদের ভাতের মাড় খাওয়ার পরামর্শ দেন।
জটিল রোগের উপশম
চীনা বিজ্ঞানি মি. লিন গবেষণা করে দেখেছেন ভাতের মাড়ে পাওয়া যায় অতি প্রয়োজনীয় ক্যালসিয়াম, লৌহ, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, মেলেনিয়াম-এ ইত্যাদি। এইগুলো যেকোনো জটিল রোগের জন্য অতি প্রয়োজনীয় উপশম।
বাচ্চাদের হেলদি ড্রিংক
ভাতের মাড়ে থাকে শতকরা ১৫% ক্যালরি, ১৫% আমিষ, ১০% শর্করা, ৫০% লৌহ, ৫০% ফসফরাস, ৪০% আয়োডিন ইত্যাদি। তাই অন্যান্য যেকোনো পানীয়ের থেকে বাচ্চাদের ভাতের মাড় খেতে দিন। এতে তাদের দ্রুত মানসিক ও দৈহিক বিকাশ হবে।
ত্বকের যেকোনো সমস্যায়
পানির সাথে ভাতের মাড় মিশিয়ে গোসল করলে ত্বকের যেকোনো ধরনের জ্বালাপোড়া দূর হয়। এছাড়াও কোনোরকম ফুসকুড়ি বা চুলকানি থাকলে তা দূর হয়। এবং এতে ত্বকও বেশ ঝকঝকে হয়।
ব্রণ/ফুসকুড়ি
ভাতের মাড় ঠান্ডা করে একটি তুলায় নিয়ে ব্রণের অংশে লাগালে ব্রণ সেরে যাবে। এক্ষেত্রে এক নাগাড়ে দিনে দুই থেকে তিন বার এটি করতে হবে। ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে অতি দ্রুতই ব্রণ দূর করে ভাতের মাড়।
খসখসে ত্বকের নিরাময়
ভাতের মাড় মুখের আর্দ্রতা বজায় রাখে। যৌবন ধরে রাখতে তাই অনেকেই ভাতের মাড় ব্যবহার করেন। ঠান্ডা করে ত্বকে লাগালে এটি আপনার ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখার পাশাপাশি ত্বককে করবে উজ্জ্বল।
চুলের কন্ডিশনার
ড্যামেজ চুল রিপেয়ার এবং চুলের শাইনি ভাব বজায় রাখতে ভাতের মাড় কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে। শ্যাম্পু করার পর চুল মুছে নিন। এরপর ভাতের মাড় ঠান্ডা করে এক মগ জলের সাথে মিশিয়ে তা চুলে ঢালুন। ৩ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। পার্থক্য আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন। চুলের যত্নে পড়ুন…
পেটের যেকোনো সমস্যায়
ভাতের মাড়ে আছে এন্টিঅক্সিডেন্ট, খনিজ, ও ভিটামিন ই। যা আমাদের হজম শক্তি বাড়ায় এবং পেট ঠিক রাখে। গ্যাস ও অম্বলের মতো অসুখ নিরাময়ে ভাতের মাড় ভীষণ উপকারি। তাই পেটের যেকোনো সমস্যায় ভাতের মাড় খেতে পারেন।
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত দুই গ্লাস করে ভাতের মাড় খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়৷ এটি বাওয়েল মুভমেন্টের উন্নতি ঘটিয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দারুণ ভূমিকা রাখে।
এনার্জির ঘাটতি দূর করে
যেকোনো ধরনের শরীর চর্চার আগে ১ গ্লাস ভাতের মাড় খেলে শরীরে এনার্জির পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। এটি ৮টি এমাইনো এসিডের পরিমাণ বৃদ্ধি করে এক্সারসাইজের সময় পেশি গঠনে সহায়তা করে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
ভাতের মাড় দিয়ে চুলের যত্ন
ভাতের মাড়ে থাকা কার্বোহাইড্রেড চুলের ঘর্ষণকে হ্রাস করে গোড়া থেকে মজবুত করে তোলে। এতে থাকা বিভিন্ন পুষ্টিউপাদান চুলকে চকচকে ও নমনীয় করে।
এছাড়া যারা খুশকি সমস্যায় ভুগছেন তারা শ্যাম্পু করার পর ভাতের মাড় দিয়ে চুল ধুতে পারেন। সপ্তাহখানেক ব্যবহার করলেই আপনার খুশকির সমস্যা দূর হবে। আরো সুন্দর চুল পেতে ভাতের মাড়ের সাথে আভোকাডো মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
ভাতের মাড় দিয়ে ত্বকের যত্ন
ভাতের মাড় মুখে দিলে ত্বকের ছিদ্র ছোট হয়, বলিরেখা কমে, ত্বক টানটান হয়, এবং মরা চামড়া দূর হয়। এছাড়াও এটি ত্বক ময়েশ্চারাইজ করে এবং ত্বকের অতিবেগুনী রশ্মি শোষণের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এবং ব্রণ ও বয়সের ছাপ দূর করার পাশাপাশি ত্বকের নানারূপ উপকার সাধন করে।
জাপানি নারীরা যৌবন ধরে রাখতে তাই প্রতিনিয়ত ভাতের মাড় ত্বকে ব্যবহার করেন। তবে ভাতের মাড় মুখে লাগানোর পর কথা বলা থেকে বিরত থাকতে হবে৷ এবং ৩০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।
ভিডিওঃ ভাতের মাড়ের অবাক করা ১০ উপকারিতা।
শেষ কথা
ভাতের মাড়ের উপকারিতা অনেক। তাই ফেলে না দিয়ে এটি কাজে লাগাতে পারেন। প্রাচীন ভারতের ঋষি মূনিরাও ভাতের মাড় খেতেন। অসাধারণ পুষ্টিগুনের জন্য অন্যান্য দেশের বিভিন্ন বিজ্ঞানীরা এটি নিয়ে গবেষণা করছেন এবং ডাক্তারেরা এটি খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!