ভিনেগার কি

ভিনেগার কি; জেনে নিন এর ব্যবহার ও স্বাস্থ্য উপকারিতা জানুন!

ভিনেগার কি তা অনেকেই হয়তো জানেন না। একে রাসায়নিক ভাষায় বলা হয় অ্যাসিটিক এসিড। এসিড হলেও এর স্বাস্থ্য উপকারিতার অনেক। খাবারের স্বাদ বাড়াতে এটি ব্যবহার করা হয়। কীভাবে এটি ব্যবহার করবেন জেনে নিন বিস্তারিত। 

ভিডিওঃ ভিনেগার এর ব্যবহার নিয়ে কিছ্য অজানা তথ্য!

ভিনেগার কি

সাধারণত ৪% – ১০% অ্যাসিটিক এসিডের জলীয় দ্রবণকে ভিনেগার বলা হয়। ভিনেগারের বৈজ্ঞানিক সংকেত হলো (CH3-COOH)।

নানা রকমের অাচার, চাটনি এবং সালাদে ভিনেগার ব্যবহার হয়ে থাকে। বিশেষ করে বিদেশে রান্নার কাজে ভিনেগার বেশি ব্যবহৃত হয়। বর্তমান সময়ে এর চাহিদা বেড়েছে। আমাদের দেশে হোয়াইট ভিনেগার এর চাহিদা  অনেক বেশি।  রান্নার স্বাদ বৃদ্ধির পাশাপাশি এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য উপকারিতায় এটি অনেক ভূমিকা রাখে। 

ভিনেগারের স্বাস্থ্য উপকারিতা 

ভিনেগার আমাদের শরীরের বিভিন্ন উপকারে আসে তা আগেই বলেছি। এবার চলুন জেনে নিই সেসব উপকারিতাগুলো কী কী। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি 

ভিনেগারে প্রচুর পরিমানে আঁশ ও ফাইবার থাকায় এটা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতায় কার্যকর ভূমিকা পালন করে। 

বিভিন্ন জটিল রোগের উপশম

বর্তমান সময়ে বহুল প্রচলিত জটিল রোগ যেমনঃ ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হার্টের সমস্যা, হাই কোলেস্টেরল ইত্যাদি রোগ নিরাময়ে মোক্ষম ভূমিকা পালন করে।

ওজন নিয়ন্ত্রণ 

নিয়মিত ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাস করলে ওজন এর সমস্যা দূর হয়। যারা অধিক ওজন সমস্যায় ভুগছেন। তারা প্রতিদিন ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন।

ক্লান্তি ও অবসাদ দূর

আমাদের শরীরের রক্ত চলাচল ঠিক রাখতে এবং রক্তে অক্সিজেন এর পরিমান সচল রাখতে ভিনেগার কার্যকরী ভূমিকা রাখে। নিয়মিত ভিনেগার খাওয়ার অভ্যাস করলে দৈনন্দিন কাজে ক্লান্তি ভাব দূর হয়। যার ফলে দৈনন্দিন কাজ সঠিকভাবে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে করা যায়। 

সর্দিকাশি নিরসন

এছাড়াও ঠান্ডাজনিত রোগ এবং গলাব্যথা, অনিদ্রা দূর ইত্যাদি রোগ নিরাময়ে কার্যকরী ভুমিকা পালন করে ভিনেগার।

ভিনেগার কীভাবে রান্নায় ব্যবহার করবেন 

ভিনেগার কি তা হয়তো জানতে পেরেছেন তবে এটি কিভাবে রান্নায় ব্যবহার করবেন জানেন কী? চলুন জেনে নেওয়া যাক। 

  • যেকোনো চর্বিযুক্ত খাবারে ভিনেগার ব্যবহার এর ফলে খাবারের স্বাদ বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও মাংস জাতীয় খাবারে একধরনের গন্ধ পাওয়া যায় যা অনেকেরই পছন্দ না। এই গন্ধ দূর করার জন্য ভিনেগার ব্যবহার হয়ে থাকে। 
  • সুন্দর যে কোনো জিনিস মন অকৃষ্ট করে। যে কোনো তরকারির সৌন্দর্য্য বাড়ানোর জন্য  একটুখানি ভিনেগারই যথেষ্ট। 
  • এ ছাড়াও যেকোনো কাঁচা তরকারি ভিনেগার মিশ্রিত পানিতে ডুবিয়ে রাখলে তরকারির সব রোগজীবাণু মারা যায়। তাছাড়াও অতিসহজে পচনও ধরে না। 
  • অনেকেই আবার খাবারে কম ঝাল খান, সেক্ষেত্রে খাবারে অল্প একটু ভিনেগার দিলেই খাবারে ঝালের তীব্রতা কমে। 
  • আমরা অনেকেই  মাংস সেদ্ধ হওয়ার ঝামেলায় পড়ে থাকি। মাংস সিদ্ধ করতে অল্প পরিমানে ভিনেগার দিলে খুব সহজেই মাংস সিদ্ধ হয়। এতে মাংসও যেমন সেদ্ধ হয়, অতিরিক্ত সময়ও বেঁচে যায়। 
  • আমাদের শরিরের জন্য অতিরিক্ত লবন অনেক ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে তরকারিতে অল্প পরিমানে লবন ব্যবহার করুন এবং একটুখানি ভিনেগার। এর ফলে তরকারিতে লবনের স্বাদও বজায় থাকবে এবং শরীরের ক্ষতিও হবে না। 
  • এছাড়াও, প্রায় সবধরনের তরকারিতে আপনি একটুখানি ভিনেগার ব্যবহার করতে পারবেন। এতে তরকারির মান এবং স্বাদ দুইটো বজায় থাকে। 

ভিডিওঃ ভিনেগার কি; জেনে নিন এর ব্যবহার ও স্বাস্থ্য উপকারিতা জানুন!

ভিনেগার কোথায় পাবেন 

ভিনেগার বর্তমান সময়ে একটি নিত্য প্রয়োজনীয়  জিনিস। ভিনেগার কি এবং ভিনেগার এর উপকারিতা আমাদের সবারই কম বেশি জানা হলো। তবে এখন প্রশ্ন হলো এটি কোথায় পাবেন। 

মূলত ভিনেগার সাধারনত মুদিখানার দোকানে পাওয়া যায়। এছাড়াও বড় বড় এন্টারপ্রাইজে গেলে ভিনেগার পেতে পারেন। যেকোনো কনফেকশনারির দোকানে গেলেও ভিনেগার পেয়ে যাবেন অতিসহজেই। ভিনেগার প্রয়োজনীয় এবং চাহিদাবহুল পন্য হওয়ায় সবখানে এটি স্বল্পমূল্যেই পাওয়া যায়। 

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

ভিনেগার কীভাবে খাদ্য সংরক্ষণ করে

ভিনেগারের মূল উপাদান হলো অ্যাসিটিক এসিড। মৃদু এসিড হওয়ায় এটি খাবারের সাথে মিশলে এসিড বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো সম্ভবনা থাকে না বরং দেহে pH এর সমতা বজায় থাকে। এটি অম্লিয় দ্রবণ হওয়ার কারনে খাদ্যে pH এর মান কমিয়ে দেয়। pH এর মান কমে যাওয়ার  ফলে ভাইরাস এবং ব্যাকট্যরিয়া জন্মাতে পারেনা। 

ভিনেগারে ৫% অ্যাসিটিক এসিড থাকালে এর pH এর মান প্রায় ২.৪ হয় যা যেকোনো  ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের জন্য উপযোগী। যেহেতু ভিনেগার জলীয় দ্রবনে মিশে যায়, তাই খাদ্যের  পানির সাথে সহজেই মিশতে পারে এবং খাদ্যের সুষম মান বজায় রাখে।

যদি কোনো খাবারে pH এর মান কমানোর  প্রয়োজন পরে তাহলে সেই খাবারে ভিনেগার দিলেই হবে। ভিনেগারের স্ফুটনাঙ্ক পানি অপেক্ষা বেশি হওয়ায় খাদ্য সংরক্ষণ এর সময় বাষ্পীভূত হয়ে উড়ে যায় না। যার ফলে খাবার টিকে থাকে বহুদিন।

ভিনেগার দিয়ে আচার, চাটনি, শাক সবজী, ফলমূল, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং সংরক্ষণ  অতিসহজেই করা যায়। ভিনেগার সহজলভ্য ও পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়াহীন হওয়ায় সারাবছর এর সংরক্ষণ করা যায়। আপেল সিডার ভিনেগার খাওয়ার নিয়ম – ২০ টি স্বাস্থ্যকর টিপস!

উপসংহার 

ভিনেগার কি এবং কেন ভিনেগার ব্যবহার করবেন আশাকরি তা জানতে পেরেছেন। রান্না সুস্বাদু ও মজাদার করে তোলার জন্য ও খাবার সঠিক ভাবে সংরক্ষণ এর জন্য ভিনেগারের গুরুত্ব অপরিসীম। এবং যেহেতু এটি আমাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্যউপকারে আসে সেহেতু আপনিও চাইলে ভিনেগার খাবার অভ্যাস করতে পারেন। 

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top