মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে

আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৫ উইকেটে জয় ভিক্টোরিয়ান্সের!

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৩৮তম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয় ফরচুন বরিশাল ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। আসরের শুরু থেকেই অসাধারণ ফর্মে আছে বরিশাল। প্রথম দিকে কিছুটা খারাপ করলেও অসাধারণ ফর্মে আছে কুমিল্লাও। 

মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথম বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। টসে হেরে বরিশালের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে এনামুল হক ও ফজলে মাহমুদ। তবে ওপেনিং জুটি তেমন একটা সুবিধা করতে পারেনি।

ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই উইকেট তুলে নেয় তানভীর ইসলাম। ৬ বলে ৩ রানের ইনিংস খেলে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে এনামুল হক। 

এরপর মাঠে নামে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। রিয়াদ নেমে দলকে আস্তে ধীরে টানতে শুরু করে। একদিকে মাহমুদউল্লাহ টিকে থাকলেও অপর প্রান্তে ক্রমাগত উইকেট হারাতে থাকে বরিশাল। চতুর্থ ওভারে সুনীল নারিনের বলে রান নিতে গেলে রান আউট হয় ফাজলে মাহমুদ। এরপর রিয়াদকে সঙ্গ দিতে মাঠে নামে সাকিব আল হাসান।

অসাধারণ ফর্মে থাকা সাকিব আজকে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়। সপ্তম ওভারে স্লো ডেলিভারিতে সাকিবকে বোল্ড করে মুকিদুল ইসলাম। ১২ বলে ৬ রানের স্লো ইনিংস খেলে বিদায় নেয় সাকিব। এরপর ইফতিখারও ৮ বলে ৪ রানের ইনিংস খেলে আন্দ্রে রাসেলের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে। 

নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়তে থাকলেও দলকে টানছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে অবশেষে রিয়াদকে থাকাতে সক্ষম হয় মুকিদুল ইসলাম। ২৬ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে মাহমুদউল্লাহ। এরপর দলের হাল কাঁধে তুলে নেয় মেহেদী হাসান মিরাজ ও করিম জানাত। তাদের অসাধারণ পার্টনারশিপে দ্রুত রান এগোতে থাকে বরিশালের।

অবশেষে ১৭তম ওভারে বোলিংয়ে এসে মিরাজকে সাজঘরে ফেরায় মুস্তাফিজুর রহমান। ১৮ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলে আউট হয় মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর করিম জানাতও বেশিক্ষণ টিকেনি। পরের ওভারেই ২৬ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে মুকিদুল ইসলামের বলে তানভীর ইসলামের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে করিম জানাত। 

এরপর বরিশালের পক্ষে আর কেউ ক্রিজে তেমন দাঁড়াতে পারেনি। করিম জানাতকে আউটের পরের বলেই মোহাম্মদ ওয়াসিমকেও তুলে নেয় মুকিদুল ইসলাম। আবারও শেষ ওভারে বোলিংয়ে এসে প্রথম বলেই চতুরাঙ্গ তি সিলভাকে তুলে নেয় মুকিদুল।

এতে ১৯.১ ওভারেই ১০ উইকেট হারায় ফরচুন বরিশাল। এতে বরিশালের মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ১২১ রান। কুমিল্লার পক্ষে সর্বোচ্চ ৫ টি উইকেট শিকার করে মুকিদুল ইসলাম। একটি করে উইকেট শিকার করে আন্দ্রে রাসেল, তানভীর ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান। 

১২২ রানের ছোট সংগ্রহ তাড়া করতে কুমিল্লার পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও লিটন দাস। প্রথম ওভার থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে রিজওয়ান। তবে ফরচুন বরিশালের মতো কুমিল্লাও দ্বিতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায়। ৬ বলে ১১ রানের ইনিংস খেলে মোহাম্মদ রিজওয়ান আউট হলে লিটনকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে জাকের আলী।

তবে জাকের আলীও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। সপ্তম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে ১৬ বলে ১০ রানের ইনিংস খেলে বোল্ড হয় জাকের। 

একপ্রান্তে লিটন টিকে থাকলেও অপর প্রান্তে ক্রমাগত উইকেট হারাতে থাকে কুমিল্লা। ১০ বলে ৫ রানের ইনিংস খেলে আউট হয় ইমরুল কায়েস। এরপর মোসাদ্দেক হোসেনও মাত্র ১ রান করে সাজঘরে ফিরে। এরপর খুশদীল শাহ্ নেমে লিটনকে সঙ্গ দেয়। অবশেষে লিটনকে সাজঘরে ফেরাতে সক্ষম হয় এবাদত হোসেন। ৩৯ বলে ৩৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে লিটন দাস। 

শেষ পর্যন্ত আন্দ্রে রাসেলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দ্রুত স্কোর আগাতে থাকে কুমিল্লার। আর কোন উইকেট না হারিয়েই লক্ষ্য পৌঁছে যায় কুমিল্লা। রাসেলের ২ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসে ৯ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। এতে ৫ উইকেটে জয় পায় কুমিল্লা।

১৯ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল খুশদীল শাহ্। অপর প্রান্তে ১৬ বলে ৩০ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল আন্দ্রে রাসেল। বরিশালের পক্ষে সর্বোচ্চ দু’টি উইকেট শিকার করে এবাদত হোসেন। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ফরচুন বরিশাল – ১২১/১০ (১৯.১)

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩৬ (২৬)

করিম জানাত ৩২ (২৬)

মেহেদী হাসান মিরাজ ১৭ (১৮)

মুকিদুল ইসলাম ৫ – ২৩ – ৩.১

মুস্তাফিজুর রহমান ১ – ১৯ – ১৯

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স – ১২২/৫ (১৮.৩)

লিটন দাস ৩৬ (৩৯)

আন্দ্রে রাসেল ৩০ (১৬)

খুশদীল শাহ্ ২৩ (১৯)

এবাদত হোসেন ২ – ১৮ – ৪

সাকিব আল হাসান ১ – ২১ – ৪

ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে মুকিদুল ইসলাম।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top