রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায়

রাতারাতি ফর্সা হবার ১১ টি উপায় ও ঘরোয়া কিছু ফেসপ্যাক!

রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় জানতে মানুষ কিনা করতে পারে তার দৃষ্টান্ত দেখা যায় শহরগুলোর দেওয়ালে, ব্যানারে বা বড় কোনো স্থাপনায়। ফর্সা হবার জন্য গড়ে উঠেছে বাহারি সব বিউটি পার্লার এবং বিউটি পার্লার ট্রেনিং সেন্টার। 

বর্তমানে অনলাইন জগতের সাথে পরিচিত বেশির ভাগ মানুষই তাদের মুখ সুন্দর করার উপায়টা ভিন্ন সব প্লাটফর্মে খুজে বেড়ায়। বিশেজ্ঞগণ এই বিষয়ে একমত যে প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার ‍উপায়গুলি তুলনামূলকভাবে অনেকটা নিরাপদ।  

অনেক চিকিৎসকের মতে, অনেকে ফর্সা হওয়ার খাবার হিসেবে অনেকরকম বাজে ঔষধ কিংবা খাবার খেয়ে থাকে। ফলাফলস্বরুপ, দেহে নানা রকম রোগবালাই বাসা বাঁধে সারা জীবনের জন্য। তাই আজকের এই আর্টিকেলে জানবো কীভাবে একজন ব্যক্তি নিরাপদ উপায়ে রাতারাতি ফর্সা হতে পারে। 

রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায় – প্রাকৃতিক ও ঘরোয়া পদ্ধতি 

উজ্জ্বল ফর্সা ত্বকের প্রতি দুর্বলতা রয়েছে সবারই। একজন মানুষের যোগ্যতার মধ্যে তার গায়ের রঙটিও পুজিবাদি এই সমাজে বিবেচ্য! যার ফলে শ্যামলা বা কালো বর্ণের মানুষ হীনম্মন্যতায় ভোগেন এবং মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়েন। আর এসব মানসিক অশান্তি থেকে বাঁচতেই রাতারাতি ফর্সা হতে বেছে নেন বিভিন্ন ক্ষতিকারক রাসায়নিক মিশ্রিত ক্রিম। 

তবে বাজারের ক্রিম যতটা না কাজ করে তার চেয়ে বেশি ত্বকের ক্ষতি করে। এসব ক্ষতিকারক ক্রিমের ওপর ভরসা না করে প্রাকৃতিক উপায়েই এর সমাধান করুন। তাই জেনে নিন প্রাকৃতিক উপায়ে রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায়। 

ভিডিওঃ শীতে ত্বকের যত্ন নিতে ৭টি ঘরোয়া টিপস | শীতকালীন রুপচর্চা

লেবু দিয়ে রাতারাতি ফর্সা হওয়ার উপায়

ভিটামিন সি সমৃদ্ধ লেবুর ব্যবহারে আমরা অতি দ্রুত ত্বকের ময়লা পরিষ্কার করে ত্বককে আরও উজ্জ্বল করতে পারি। লেবু ব্যবহার করে ফর্সা হবার জন্য আপনাকে একটি মিশ্রণ তৈরি করতে হবে, মিশ্রণটি তৈরি করার জন্য আপনার যা যা প্রয়োজন: 

  • এক টেবিল চামচ চিনি গুরু
  • এক টেবিল চামচ মধু
  • এক টেবিল চামচ লেবুর রস

প্রথমে এক টেবিল চামচ চিনি নিয়ে ভালোভাবে গুঁড়ো করে পাউডার বানিয়ে নিতে হবে। তারপর এর সাথে এক টেবিল চামচ লেবুর রস এবং এক টেবিল চামচ মধু যোগ করে নিতে হবে। এগুলোকে একটি বাটিতে নিয়ে ভালোভাবে মিশ্রন করে পেস্ট বানিয়ে ব্যবহার করতে হবে। 

উক্ত মিশ্রণটি মানুষের ত্বকের জন্য ভীষণ উপকারী, ইহা সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক একটি মিশ্রণ হওয়াতে আমরা ফেসওয়াশ এর পরিবর্তে এই মিশ্রণটি ব্যবহার করতে পারি। মানুষের চেহারা থেকে দ্রুত ময়লা অপসারণে এটি বেশ কার্যকরী।

মধু দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

বিন্দুমাত্র ক্ষতি ছাড়াই ত্বক ফর্সা এবং সুন্দর করুন মধু ব্যবহারের মাধ্যমে। সু-প্রাচীন কাল থেকেই রুপচর্চায় মধুর ব্যবহার বেশ প্রচলিত। তেমনি বর্তমান সময়েও মধুর ব্যবহার হচ্ছে। রোদে পুড়ে যাওয়া অংশে মধু এপ্লাই করে দেখা যেতে পারে।

সরিষা দিয়ে ফর্সা হওয়ার উপায়

রুপচর্চার ক্ষেত্রে সরিষার প্রস্তুতি যদিও কিছুটা সময় সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য তবুও ত্বক ফর্সা হওয়ার ক্ষেত্রে উহা বেশ উপকারী। সরিষাতে  বেশ কিছু উপকারী উপাদান রয়েছে,  যা ত্বকের কালো ভাব দূর করে ফর্সা ভাবে নিয়ে আসে। তাই ত্বকের যত্নে এবং ফর্সা হওয়াতে সরিষা ব্যবহার করা যেতে পারে।

প্রাকৃতিক ফর্সা হওয়ার উপাদানে তৈরি ঘরোয়া কিছু ফেসপ্যাক

সাধারণত পার্লার কিংবা বিভিন্ন বিশেষজ্ঞগণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই প্রাকৃতিকভাবে ফর্সা হওয়ার ‍উপায় কেই বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। আশা করি প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করে ফর্সা হওয়ার পদ্ধতিকে বেশ ভালোভাবেই গ্রহণ করতে পারবেন।

হলুদ: রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে হলুদের ফেসপ্যাক লাগাতে পারেন। প্যাক বানাতে ১ চা চামচ হলুদ গুঁড়ার সঙ্গে সমপরিমাণ ওটমিল, মধু এবং লেবুর রস মিশিয়ে পেস্ট করে মুখে লাগান। পনের-বিশ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন।

পাকা পেঁপে: পাকা পেঁপে ও মধু একসাথে মিশিয়ে মুখে মাখলে তা প্রাকৃতিক উপায়ে ত্বককে সুন্দর করে। এই মিশ্রণে মুখের দাগছোপ দূর হবে, ত্বকের রঙও উজ্জ্বলও হবে।

কাঠবাদাম: কাঠবাদাম বা আমন্ডের পেস্ট দুধে মিশিয়ে নতুন মিশ্রণ তৈরি করে মুখের ত্বকে লাগান। ১০-১৫ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেলুন।

ডাবের পানি: ডাবের পানি ত্বকের জন্য খুবই উপকারী উপাদান। ত্বকের জেল্লা-লাবণ্য ফেরাতে এবং কালো ছোপ দূর করতে এর জুড়ি নেই।

টকদই:  ত্বকের রঙ ফর্সা করতে টকদই ও লেবুর রসের মিশ্রণ তৈরি করে পেস্টটি মুখে ব্যবহার করুন। এটি সুন্দর কাজ করে।

চন্দনের গুঁড়া: চন্দন কাঠের গুঁড়া ত্বককে রাতারাতি ফর্সা করতে খুবই কার্যকরী একটি উপায় হতে পারে। চন্দনের গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি করে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ঠাণ্ডা পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন আর পেয়ে যান উজ্জ্বল ত্বক। 

ভালো মানের ফেসওয়াশ: বাজারে বিভিন্ন রকমের ফেসওয়াশ পাওয়া গেলেও আপনাকে অবশ্যই নকল এড়িয়ে আসল প্রডাক্ট কিনতে হবে। অনেক ক্ষেত্রে নকল প্রোডাক্ট গুলোয় বিভিন্ন সংস্থার অনুমতির সিল থাকেনা এবং লেখা থাকে অস্পষ্ট। ভালো মানের ফেসওয়াশ আপনার মুখের যত্নে অনেক কাজে দিবে।

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

দৈনন্দিন খাবার দিয়ে স্পেশাল বডি প্যাক 

ঘরোয়া পদ্ধতিতে স্পেশাল প্যাক বানাতে যে সকল উপকরণ আমাদের হাতের কাছে রাখতে হবে…

  • আধা কাপ মিষ্টিকুমড়ার পেস্ট
  • তিন টেবিল চামচ পাকা পেঁপের পেস্ট
  • তিন টেবিল চামচ গোল আলুর পেস্ট
  • দুই টেবিল চামচ ভাতের মাড়

যেভাবে ব্যবহার করবেন এই প্যাক:

উপকরণ গুলো একসাথে ভালোমতো ব্লেন্ডার করে প্রথমে মিক্স করে নিবেন। এরপরে এই প্যাকটি শরীরের প্রয়োজনীয় অংশে লাগিয়ে আমরা অন্ততপক্ষে বিষ-ত্রিশ মিনিট অপেক্ষার পর গোসল করে ফেলব। গোসল শেষে শরীর মুছে নিয়ে আপনারা ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন। তারপর আপনারা বুঝতে পারবেন কি পরিমান আপনার ত্বকের রঙ পরিবর্তন হয়ে গেছে।

মাত্র একবার ব্যবহারে আপনি হাতেনাতেই এর ফলাফল টি অনুভব করবেন এবং এমন ভালোভাবে আপনার ত্বক ফর্সা হবে যে আপনি হাজারো ব্যস্ততার মাঝে থেকেও এই প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহারের কথা ভুলে যাবেন না শিউর।

স্থায়ীভাবে ফর্সা করতে আমাদের দেওয়া এইসব টিপস আপনারা নিয়মিত ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন আর হঠাৎ করে দ্রুত ত্বকের রঙ পরিবর্তন করতে চাইলেও কিন্তু আপনারা এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারবেন।

ত্বকের যত্নে কিছু প্রয়োজনীয় টিপস

স্বেচ্ছায় প্রতিদিন অবশ্যই ত্বকের যত্ন নিতে হবে। কিন্তু দৈনিক এটা কীভাবে নেওয়া যায়?  দৈনন্দিন জীবনে আমাদের ঘরের বাহিরে চলাচল করতে হয় প্রচুর। তাই ব্যাগে ছোট ফেসওয়াশ রাখুন এবং কাজ-কর্মের মধ্যও মুখ ধৌত করুন, আমরা চাইলে আমাদের ত্বকের যত্ন নিতে পারি সানস্ক্রিন ব্যবহার করেও।

বর্তনান সময়ে সূর্য ভীষণ তাপ প্রদান করায় কাপড়ের বাহিরে দেহের যেসব অংশ থাকে তা দ্রুত পুড়ে যায়, এই সমস্যার সহজ সমাধান হতে পারে সানস্ক্রিন। ত্বকের যত্নে আপনি শসা ও গাজরও খেতে পারেন। আমরা সবাই জানি শসা বা ক্ষীরায় শুধু পানীয় উপাদান বিদ্যামান, বিক্ষিপ্ত আবহাওয়ায় শসা খেলে তা আপনার দেহ ও মনকে সজীব রাখবে।

চামড়ার নিচের অংশ শীতল রেখে দেহের উজ্জ্বলতার ভারসাম্য ধরে রাখবে। নিয়মিত গাজর খেতে পারলে ভিতর থেকে আপনার ত্বক ধীরে ধীরে উজ্জ্বল হতে থাকবে। দীর্গসময় রূপ লাবন্য ধরে রাখতে গাজরের বিকল্প নেই। 

শেষকথা 

রাতারাতি ত্বক ফর্সার উপায়ের কথা বলে বর্তমানে বিভিন্ন ফার্মেসি এবং কসমেটিক দোকানে অবৈধভাবে এক দিনে ফর্সা হওয়ার উপায় হিসেবে নানা টাইপের ত্বকের ক্ষতিকর ক্রিম রাখে। যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর। 

ত্বকের কালো দাগ দূর করতে এবং কালচে ভাব দূর করতে প্রাকৃতিক এসব ঘরোয়া উপায় ফলো করলে আশা করা যায় অতি দ্রুত এসব সমস্যার সমাধান করতে পারবো।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top