শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার উপায় – আমাদের জীবনে প্রতিনিয়তই আমরা বিভিন্ন শারিরিক অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হই। অফিস থেকে ফিরে, খেলার মাঠে অথবা রৌদ্রতাপে গরমের কারনে আমরা কখনো কখনো একটু বেশি অস্বস্তি বোধকরি।
শরীরের তাপমাত্রার অস্থিতিশীলতা আমাদের কখনো বেশ অসুবিধায় ফেলে। তাই আমাদের সক্ষমতা বজায় রাখতে শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার উপায় গুলি সকলের জানা দরকার।
Table of Contents
শরীরে তাপমাত্রা বাড়ার কারণ
আমাদের রক্তের প্রকৃতি উষ্ণ এবং বায়ুমন্ডলের অস্থিতিশীল তাপমাত্রায় বাস করেও আমরা আমাদের শরীরের স্থির তাপমাত্রা বজায় রাখতে সক্ষম। আমাদের শরীরের হাইপোথ্যালামাস অংশটি প্রয়োজনে তাপ উৎপাদন এবং নিঃস্বরণ এর মাধ্যমে শরীরের তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখে।
মূলত হাইপোথ্যালামাস এর স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় কিছু বাহ্যিক প্রতিকূলতার কারণে তাপমাত্রা অস্থিতিশীল হয়ে পড়ে। যেমন অধিক সময় ধরে উত্তাপে অবস্থান করা, পানি কম খাওয়া, ত্বকে বাতাস রোধ করা সহ বিভিন্ন কারন।
হাইপোথ্যালামাস এর প্রক্রিয়া
চামড়ায় থাকা স্নায়ুরা বাহ্যিক পরিবেশের তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারনা নেয় এবং সেই তথ্য মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশে পাঠায় তখন দেহের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য সেটি বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়। যেমন শরীরের ভেতরের তাপ ত্বকের মাধ্যমে বাতাসে ছাড়ার জন্য ধমনীগুলির প্রসার, ঘাম নিঃসরণ করে ত্বক ঠান্ডা করা, বিপাক হ্রাস সহ আরো অনেক প্রক্রিয়া।
শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার উপায় সমূহ
১. পানি পান করা
শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার প্রধানতম উপায় পর্যাপ্ত পানি পান করা। অতিরিক্ত উত্তাপে শরীর গরম হলে অভ্যন্তরীন প্রকৃয়ায় ঘাম নিঃস্বরণ হয়। এর ফলে ত্বকে একটি ঠান্ডা আবর্তন তৈরি হয়। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা উচিৎ। এতে শরীরের তাপমাত্রা ঠিক থাকে এবং পানিশূন্যতাও রোধ হয়।
২. ত্বকের শ্বাস
ত্বকের মাধ্যমে শরীরের অতিরিক্ত তাপমাত্রা বেরিয়ে যায়। তাই যতটা সম্ভব গরম কালে এমন কাপর পরা যা খুব বেশি টাইট ফিটিং নয় বরং যার মধ্যে দিয়ে শরীরে বাতাস লাগতে পারে।
৩. বরফ পানি
কোনো ভারী কাজ শেষে অধবা বাইরে থেকে এসে শরীরে বেশি গরম অনুভূত হলে গামলা বা বালতিতে ২০ মিনিট পা ডুবিয়ে রাখুন।
৪. প্রোটিন নিয়ন্ত্রণ
অতিরিক্ত প্রোটিন খাবার অভ্যাস শরীরে তাপ উৎপাদন করে। তাই প্রোটিন খাবার অভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৫. ডাবের জল পান
ডাবের জলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ইলেকট্রোলাইট থাকে, যা আপনার শরীরকে ভিতর থেকে শীতল থাকতে সাহায্য করে।
৬. মৌসুমি ফল খাবার অভ্যাস
মৌসুমি ফলে পর্যাপ্ত পানি থাকে। যা স্বাভাবিক ক্ষুধা মেটায় এবং শরীরকে পানির যোগান দেয়।
৭. একাধিকবার গোসল
গোসলের মাধ্যমে ত্বকে ঠান্ডা স্পর্শ পরে এবং ঘাম দূর হয় যার মাধ্যমে ত্বক স্বাভাবিক অবস্থায় আসতে পারে। গরমের দিনে একাধিকবার গোসল বরং ভালো অভ্যাস।
৮. শীতের পোষাক
শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা সংরক্ষণ করার জন্য আমাদের ত্বক সঙ্কুচিত হয়। যার মাধ্যমে আমাদের ত্বক ফেটে যায়। সেসময় আমাদের শরীর গরম কাপড়ে আবৃত রাখা এবং গরম খাবার খাওয়া প্রয়োজন।
শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার উপায় এর সাথে সাথে এর বিপরীত প্রভাবটিও আমাদের জানা প্রয়োজন।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
শেষ কথা
অতিরিক্ত গরমে বেশিক্ষণ অবস্থান করলে ঘাম নির্গমন প্রকৃয়ায় পানিশুন্যতা দেখা দিতে পারে। তার সাথে সাথে প্রয়োজনীয় লবণ বের হয়ে যায়। তাতে একটা সময় শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ প্রকৃয়া নষ্ট হয়ে স্ট্রোক হবার সম্ভাবনা থাকে।
অতিরিক্ত গরমে ত্বকের বিভিন্ন রোগ হতে পারে স্বাভাবিক বায়ুচলাচল এর সংস্পর্শে না এলে। রক্তচাপ কমে যাওয়া, দুর্বল লাগা, মাথা ঝিমঝিম করা সহ বিভিন্ন শারিরিক সমস্যায় পড়তে হয়।
তাই শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক রাখার উপায় গুলো জেনে রাখা এবং এর ব্যবহার আমাদের আমাদের উপকারে আসবে।