এশিয়া কাপের ২য় ম্যাচে পাল্লেকেল্লে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। নিজেদের পছন্দের ওয়ানডে ফরম্যাটে অনুষ্ঠিত হওয়া এশিয়া কাপে ভালো কিছু করার আশা নিয়েই দেশ ছেড়েছিল কোচ হাথুরুসিংহের শিষ্যরা।
অন্যদিকে, এশিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা জয়ের মিশনে এবারের আসরের অন্যতম ফেভারিট দল ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কা।
গ্রুপ বি এর প্রথম ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন টাইগার অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। যেখানে, ওয়ানডেতে বাংলাদেশের হয়ে অভিষেক হয় তরুণ তানজিদ হাসান তামিমের। ইনজুরি বিঘ্নিত উভয় দলের একাদশেই ছিল কিছু তরুণ মুখ।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), পাথুম নিসানকা, দিমুথ কারুনারাত্নে, কুশল মেন্ডিস, সাদিরা সামাউইকরামা, চারিত আসালাঙ্কা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দুনিথ উইল্লালাগে, মাহিশ থিকশানা, কাসুন রাজিতা, মাথিশা পাথিরানা।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নাঈম শেখ, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মাহেদী, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান।
ম্যাচের ১ম ইনিংস
টসে জিতে ব্যাটিং নেওয়া বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করতে মাঠে নামেন নাঈম শেখ ও তানজিদ হাসান তামিম। কিন্তু, অভিষেকটা মোটেও সুখকর হয়নি জুনিয়র তামিরের জন্য। ম্যাচের ২য় ওভারেই মাহিশ থিকশানার ২য় বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে শূন্য রানে মাঠ ছাড়েন এই তরুণ ওপেনার। এরপর তিনে ব্যাটিং করতে নামেন নাজমুল হোসেন শান্ত।
শান্তকে সাথে নিয়ে ভালো কিছু করার আভাস দিলেও ৮ম ওভারে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার বলে কাঁটা পড়েন আরেক ওপেনার নাঈম শেখ। দলের হয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলতে থাকলেও অপরপ্রান্তে সকলেই ছিলেন আসা যাওয়ার মধ্যে। ৫ রানে সাকিবের আউটের পর মাঝে তাওহীদ হৃদয়কে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন শান্ত, তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরিও।
একই ওভারে দাসুন শানাকার শেষ বলে ২০ রান করে এলবিডব্লিউতে আউট হন হৃদয়। দলের ইনিংস বড় করতে এরপর ধৈর্য সহকারে আর কেউই শান্তকে সাপোর্ট দিতে পারেননি। ১৩ রান করে মুশফিক, ৫ রান করে মিরাজ ও ৬ রান করে শেখ মাহেদীও প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।
১৬২ রান সংগ্রহে ৪১ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ভালোই চাপে পড়ে বাংলাদেশ দল। পরের ওভারেই ৮৯ রান করা শান্তকে আউট করেন স্পিনার থিকশানা। এরপর কোনো রান না করা তাসকিন ও মুস্তাফিজুরের উইকেট হারিয়ে অবশেষে ১৬৪ রানে অলআউট হয় টাইগাররা। ফলে, লঙ্কানদের মাত্র ১৬৫ রানের ছোট টার্গেট দেয় টাইগাররা।
ম্যাচের ২য় ইনিংস
ছোট্ট টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় শ্রীলঙ্কা। ৩য় ওভারে তাসকিনের করা বলে ১ রান করে আউট হন ওপেনার দিমুথ কারুনারত্নে। পরের ওভারেই শরিফুলের কাছে নিজের উইকেট হারান আরেক ওপেনার পাথুম নিসানকা। প্রথম ৪ ওভারেই ২ ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়া শ্রীলঙ্কার হয়ে এরপর কিছুটা রক্ষণাত্মকভাবে খেলতে থাকেন ক্রিসে থাকা কুশল মেন্ডিস ও সাদিরা সামাউইকরামা।
১০ম ওভারে সাকিবের ঘূর্ণিতে মাত্র ৫ রান করে সাজ ঘরে ফিরেন কুশল মেন্ডিস। এরপর অবশ্য তেমন কোনো বিপাকে পড়তে হয়নি লঙ্কানদের। আসালাঙ্কাকে সাথে নিয়ে সামাউইকরামার ৭৮ রানের পার্টনারশিপে জয় অনেকটাই নিশ্চিত করে ফেলে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। মাঝে নিজের অর্ধ শতকও পূরণ করেন এই ব্যাটসম্যান।
শেষের দিকে যথাক্রমে শেখ মাহেদী ও সাকিব আল হাসানের ৩০ ও ৩১তম ওভারে ২টি উইকেট হারালেও অধিনায়ক দাসুন শানাকার ১৪ ও চারিত আসালাঙ্কার ৬২ রানের ক্যামিও ইনিংসে বাংলাদেশকে ৫ উইকেটে হারিয়ে জয় তুলে নেয় শ্রীলঙ্কা। ৪ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বোলার মাথিশা পাথিরানা।
ম্যাচ স্কোরবোর্ড (Match Scoreboard)
বাংলাদেশ ১৬৪/১০ (৪২.৪ ওভার)
নাজমুল হোসেন শান্ত – ৮৯ (১২২)
মাথিশা পাথিরানা – ৪/৩২ (৭.৪ ওভার)
শ্রীলঙ্কা ১৬৫/৫ (৩৯ ওভার)
চারিত আসালাঙ্কা – ৬২* (৯২)
সাকিব আল হাসান – ২/২৯ (১০ ওভার)
ম্যাচ সেরা: মাথিশা পাথিরানা