সুপার ফোরের ১ম ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে পরাজয়ের পর এবার ২য় ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। হারলেই বিদায় অনেকটা নিশ্চিত এমন সমীকরণ নিয়ে মাঠে নামে টাইগাররা। যেখানে, ওয়ানডে ফর্ম্যাটে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত থাকা শ্রীলঙ্কা জয় দিয়ে সুপার ফোর পর্ব শুরু করার আশায় মাঠে নামে।
এই ম্যাচে প্রত্যাশিতভাবে চাপে থাকা বাংলাদেশ দলের হয়ে আবহাওয়া ও কন্ডিশন বিবেচনায় নিয়ে টসে জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। শ্রীলঙ্কা অপরিবর্তিত একাদশ নিয়ে মাঠে নামলেও বাংলাদেশ দলে ছিল ১ পরিবর্তন। আফিফ হোসেনের জায়গায় দলে আসেন স্পিনার নাসুম আহমেদ।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নাঈম শেখ, মেহেদী হাসান মিরাজ, লিটন কুমার দাস, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারী, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম।
শ্রীলঙ্কা একাদশ: দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), পাথুম নিসানকা, দিমুথ কারুনারত্নে, চারিত আসালাঙ্কা, সাদিরা সামাউইকরামা, কুশল মেন্ডিস, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, দুনিথ উইল্লালাগে, মাহিশ থিকশানা, কাসুন রাজিতা, মাথিশা পাথিরানা।
ম্যাচের ১ম ইনিংস
পাথুম নিসানকার সাথে শ্রীলঙ্কার হয়ে ওপেনিংয়ের শুরুটা ভালো করলেও এই ধারা বেশিক্ষণ বজায় রাখতে পারেননি দিমুথ কারুনারত্নে। হাসান মাহমুদকে উইকেট দিয়ে ১৮ রান করে আউট হন এই ওপেনার। এরপর অবশ্য আর তেমন কোনো সমস্যাই পড়তে হয়নি লঙ্কানদের।
কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিসানকার স্বভাবসুলভ ব্যাটিংয়ে রানের চাকা ঘুরতে থাকে নিয়মিতভাবে। ২৪তম ওভারে ৪০ রান করে নিসানকা ফিরলেও ঠিকই নিজের টানা দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন কুশল মেন্ডিস। ৫০ পূর্ণ করার পরপরই শরিফুলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন এই উইকেটকিপার-ব্যাটার।
প্রতিরোধ গড়তে চেষ্টা করেও ব্যর্থ চারিত আসালাঙ্কা। তাসকিনের বলে ফিরেন মাত্র ১০ রান করে। এভাবে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে স্বাগতিকরা। কিন্তু, একপ্রান্ত ঠিকই ধরে রেখেছিলেন সাদিরা সামাউইকরামা।
ধনঞ্জয়া ডি সিলভা ৬, দাসুন শানাকা ২৪, দুনিথ উইল্লালাগে ৩ ও মাহিশ থিকশানা ২ রান করে আউট হলেও সামাউইকরামার ৯৩ রানের ঝড়ো ইনিংসে ৯ উইকেট হারিয়ে ২৫৭ রানের ভালো সংগ্রহ দাঁড় করায় এশিয়া কাপের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা।
ম্যাচের ২য় ইনিংস
২৫৮ রানের চ্যালেঞ্জিং স্কোর তাড়া করতে নেমে টাইগারদের হয়ে পাওয়ার প্লে’র প্রথম ১০ ওভারে ভালোই শুরু করেন দুই ওপেনার নাঈম শেখ ও মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু, এরপরই ঘটে বিপত্তি। ১২তম ওভারে দাসুন শানাকার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজ ঘরে ফিরেন মিরাজ।
সঙ্গী মিরাজকে হারিয়ে তাকে অনুসরণ করতে ভুল করেননি নাঈম শেখ। শানাকার করা পরের ওভারেই নাঈমও ক্যাচ আউট হয়ে ফিরেন মাত্র ২১ রান করে। এরপর মাঠে নামেন অধিনায়ক সাকিব। সঙ্গে ছিলেন লিটন কুমার দাস।
তবে, বোলিংয়ের ন্যায় ব্যাটিংয়েও তেমন কোনো পারফর্ম্যান্স করতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। সাকিব যাওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই সহ-অধিনায়ক লিটন দাসও মাত্র ১৫ রান করে উইল্লালাগের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন। ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগতে থাকা বাংলাদেশের হয়ে ঘুরে দাঁড়ান মিস্টার ডিপেন্ডেবল মুশফিক ও তরুণ তাওহীদ হৃদয়।
ভালো পার্টনারশিপ করে দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন হৃদয় আর মুশফিক। কিন্তু, ইনিংসের ৩৮তম ওভারে আবারও দলের ত্রাণকর্তা হয়ে মুশফিকের উইকেট তুলে নেন লঙ্কান ক্যাপ্টেন দাসুন শানাকা। মুশফিকের পর শামীম পাটোয়ারী আসলেও টিকে থাকতে পারেননি বেশিক্ষণ। মাহিশ থিকশানার এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে মাত্র ৫ রানে আউট হন এই তরুণ।
৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া বাংলাদেশের হয়ে ক্রিসে শেষ ভরসা ছিলেন তাওহীদ হৃদয়। কিন্তু, শামীমের মতো তিনিও থিকশানার কাছে একইভাবে আউট হলে পরাজয় নিশ্চিত হয় লাল-সবুজ প্রতিনিধিদের।
এরপর, ১ রান করে তাসকিন, ৭ রান করে শরিফুল ও সবশেষে ১৫ রান করে নাসুম আউট হলে ২৩৬ রানে অলআউট হয় চান্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। ৯৩ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটার সাদিরা সামাউইকরামা।
ম্যাচ স্কোরবোর্ড
শ্রীলঙ্কা ২৫৭/৯ (৫০ ওভার)
সাদিরা সামাউইকরামা – ৯৩ (৭২)
তাসকিন আহমেদ – ৩/৬২ (১০ ওভার)
বাংলাদেশ ২৩৬/১০ (৪৮.১ ওভার)
তাওহীদ হৃদয় – ৮২ (৯৭)
দাসুন শানাকা – ৩/২৮ (৯ ওভার)
ম্যাচ সেরা: সাদিরা সামাউইকরামা
- Get Spiritual Quotes daily