আইসিসি টি টুয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপের গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ খেলতে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচ হার ও দুই ম্যাচ জয় নিয়ে আগেই সেমিফাইনালের আশা ছেড়ে দিয়েছিল বাংলাদেশ। তবে সাউথ আফ্রিকার নাটকীয় পরাজয়ে সুযোগ ফিরেছিল আবারও, পাকিস্তান ও বাংলাদেশ উভয়েরই একই পয়েন্ট থাকায় যে জিতবে তারই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হবে।
এডেলিয়েড ওভালে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। ওপেনিংয়ে নামে নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস। গত ম্যাচে অসাধারণ ফর্মে থাকা লিটনের পারফরমেন্স এই ম্যাচে খুবই ম্লান ছিল। ৩য় ওভারে ৮ বলে ১০ রান করে শাহীন আফ্রিদির বলে আউট হয়ে লিটন সাজঘরে ফিরলে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
এরপর দলকে এগিয়ে নিতে মাঠে নামে সৌম্য সরকার। শান্ত ও সৌম্য মিলে দলকে আস্তে ধীরে এগিয়ে নিতে থাকে। তবে তাদের জুটি থেকে আশানুরূপ রান পায়নি বাংলাদেশ দল। শেষ পর্যন্ত ১১তম ওভারে সাদাব খানের বলে শান মাসুদের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে সৌম্য সরকার।
১৭ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় সৌম্য। এরপর সাকিব নেমে প্রথম বলেই এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়। সাকিবের ব্যাটে লেগে পায়ে লাগলেও আম্পায়ার আউট দেয়। এতে সাকিব রিভিউ নিলেও আম্পায়ারের মতামতের কোন পরিবর্তন হয়নি। শূন্য রান নিয়ে ফিরতে হয় সাকিবকে।
এক প্রান্তে ক্রমাগত উইকেট পড়লেও অপর প্রান্ত আগলে রেখেছিল নাজমুল হোসেন শান্ত। সাকিবের পর শান্তকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে আফিফ হোসেন। আফিফকে সঙ্গে নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি সম্পূর্ণ করে শান্ত। তবে এরপর খুব বেশীক্ষণ টিকতে পারেনি শান্ত। বাউন্ডারি মারতে গিয়ে ইফতিখার আহমেদের বলে বোল্ড আউট হয়ে সাজঘরে ফিরে শান্ত। ৭ টি বাউন্ডারিতে ৪৮ বলে ৫৪ রানের সংগ্রহ নিয়ে মাঠ ছাড়ে শান্ত।
এরপর আর কেউ টিকতে পারেনি, নিয়মিত উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। আফিফ হোসেনের ব্যাটিং থেকে আসা রান নিয়ে ৮ উইকেটে ১২৭ রানের সংগ্রহ তোলে বাংলাদেশ। ২০ বলে ২৪ রানের সংগ্রহ নিয়ে অপরাজিত ছিল আফিফ হোসেন। পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ টি উইকেট শিকার করে শহীদ আফ্রিদি। দুটি উইকেট পেয়েছেন সাদাব খান।
১২৮ রানের টার্গেট নিয়ে পাকিস্তানের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে মোহাম্মদ রিজওয়ান ও বাবর আজম। তারা দুজন টিকে থাকলেও রানের গতি ছিল খুবই ধীর। ১১তম ওভারে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান।
নাসুম আহমেদের বলে মুস্তাফিজুর রহমানের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে বাবর আজম। ৩৩ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় বাবর আজম। এর পরের ওভারেই এবাদত হোসেনের বলে নাকমুল হোসেনর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে মোহাম্মদ রিজওয়ান। ৩২ বলে ৩২ রানের ইনিংস খেলে ফিরে রিজওয়ান।
এরপর ১১ বলে ৪ রান করে মোহাম্মদ নওয়াজ রান আউট হলে চাপে পড়ে যায় পাকিস্তান। তবে শান মাসুদ ও মোহাম্মদ হারিসের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দ্রুত এগিয়ে যেতে থাকে পাকিস্তান। বাজে ফিল্ডিংয়ের ফলে অনেক এক্সট্রা রান পায় পাকিস্তান।
এতে ১১ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে জয় পায় পাকিস্তাম। ১৪ বলে ২৪ রান করে অপরাজিত ছিল শান মাসুদ। বাংলাদেশের পক্ষে সবচেয়ে ভালো বল করেছে নাসুম আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান। দুজনেই একটি করে উইকেট শিকার করেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ – ১২৭/৮ (২০)
নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৪
আফিফ হোসেন ২৪
সৌম্য সরকার ২০
শাহীন আফ্রিদি ৪/২২
সাদাব খান ২/৩০
পাকিস্তান – ১২৮/৫ (১৮.১)
মোহাম্মদ রিজওয়ান ৩২
মোহাম্মদ হারিস ৩১
বাবর আজম ২৫
নাসুম আহমেদ ১/১৪
মুস্তাফিজুর রহমান ১/২১