সিলেটের পক্ষে ওপেনিংয়ে

রুবেলের বিধ্বংসী বোলিংয়ে সিলেটের জয়! 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ৩০তম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয় সিলেট স্ট্রাইকার্স ও খুলনা টাইগার্স। সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় খুলনা। 

সিলেটের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে তৌহিদ হৃদয় ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনেই ধীরে সুস্থে দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। আগের ম্যাচগুলোতে অসাধারণ পারফরমেন্স করা শান্ত এবারে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়। পঞ্চম ওভারে মার্ক ডেয়ালের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ১২ বলে ৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে শান্ত। 

শান্ত ফিরলে ক্রিজে আসে জাকির হাসান। জাকির প্রথমে নেমে ধীরে সুস্থে খেলতে থাকে। তখন আগ্রাসী ভুমিকায় ব্যাটিং শুরু করে তৌহিদ হৃদয়। অসাধারণ ব্যাটিয়ে দ্রুতই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয় হৃদয়। হৃদয়ের সাথে জাকিরও যোগ দেয়। তাদের পার্টনারশিপ কোনভাবেই থামাতে পারছিল না খুলনার বোলাররা। 

অবশেষে তাদের পার্টনারশিপ থামাতে সক্ষম হয় নাহিদ রানা। নাহিদ রানার বলে ইয়াসির আলীর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে আউট হয় তৌহিদ হৃদয়। তবে ততক্ষণে বেশ দেরী হয়ে গেছে। ৯ টি চারে ৪৯ বলে ৭৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে আউট হয় হৃদয়। তৌহিদ হৃদয় আউট হওয়ার পরের ওভারেই প্রথম বলে আউট হয় জাকির হাসান। ৪ টি চার ও ২ টি ছক্কায় ৩৮ বলে ৫৩ রানের ইনিংস খেলে নাহিদুল ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে জাকির হাসান। তখন ১৬ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ ছিল ১৪৭ রান। 

এরপর মাঠে আসে রায়ান বার্ল ও মুশফিকুর রহিম। তবে এক ছক্কা হাঁকিয়েই বিদায় নেয় মুশফিকুর রহিম। তারপর রায়ান বার্ল ও থিসারা পেরেরা তান্ডব শুরু করে শেষ দুই ওভারে। তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৯২ রান। ১১ বলে ২১ রান করে অপরাজিত ছিল রায়ান বার্ল। অপর প্রান্তে ২ ছক্কা ও ১ চারে ৭ বলে ১৭ বলের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল থিসারা পেরেরা। খুলনার পক্ষে সর্বোচ্চ দু’টি উইকেট শিকার করে মার্ক ডেয়াল। 

১৯৩ রানের বিশাল লক্ষ্যে তাড়া করতে খুলনার পক্ষে ওপেনিংয়ে ক্রিজে আসে তামিম ইকবাল ও এন্ডি বালবির্নে। তবে শুরুটা আশানুরূপ হয়নি খুলনার। দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই রুবেল হোসেনের বলে জাকির হাসানের হাত বন্দি হয়ে ৭ বলে ৭ রানের সংগ্রহ নিয়ে মাঠ ছাড়ে বালবার্নে। একই ওভারের শেষ বলে তামিম ইকবালকে তুলে নেয় রুবেল রুবেল হোসেন। ১০ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় তামিম ইকবাল। 

এরপর শাই হোপ নেমে কিছুটা আশার আলো দেখালেও খুব বেশীক্ষণ টানতে পারেনি দলকে। ২২ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে রেজাউর রহমান রাজার বলে রায়ান বার্লের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে শাই হোপ। এরপর মাহামুদুল হাসান জয় কিছুক্ষণ টিকে থাকলেও রান তেমন আগায়নি। অবশেষে ১৩তম ওভারে ২১ বলে ২০ রানের সংগ্রহ নিয়ে সাজঘরে ফিরে জয়। তারপর পরের ওভারেই আগ্রাসী ব্যাটিং করা আজম খানও বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে। ৪ টি ছক্কা ও ২ টি চারে ১৭ বলে ৩৩ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে আজম খান। 

এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে খুলনা। ১৫তম ওভারে মার্ক ডেয়াল, ১৬তম ওভারে ইয়াসির আলী রাব্বি। এরপর ১৭তম ওভারে কোন উইকেট হারায়নি। তারপর আবারও উইকেট হারাতে শুরু করে খুলনা। ১৮তম ওভারে ১২ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলে রুবেলের বলো বোল্ড হয় মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। এরপর ৯ বলে ৯ রান করে মোহাম্মদ আমিরের বলে বোল্ড হয় নাহিদুল ইসলাম। 

রুবেলের বোলিং তাণ্ডবে খুব বেশিদূর এগোতে পারেনি খুলনা। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে খুলনার সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৬১ রান। এতে ৩১ রানে জয় পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৯ বলে ১৩ রান করে অপরাজিত ছিল নাসুম আহমেদ। সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ টি উইকেট শিকার করে রুবেল হোসেন। দু’টি করে উইকেট শিকার করে মোহাম্মদ আমির ও রেজাউর রহমান রাজা। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

সিলেট স্ট্রাইকার্স – ১৯২/৪ (২০) 

তৌহিদ হৃদয় ৭৪ (৪৯)

জাকির হোসেন ৫৩ (৩৮)

রায়ান বার্ল ২১ (১১)

মার্ক ডেয়াল ২ – ৪০ – ৪

নাহিদুল ইসলাম ১ – ২৫ – ৪

খুলনা টাইগার্স – ১৬১/৯ (২০) 

আজম খান ৩৩ (১৭)

শাই হোপ ৩৩ (২২)

মাহামুদুল হাসান জয় ২০ (২১)

রুবেল হোসেন ৪ – ৩৭ – ৪

মোহাম্মদ আমির ২ – ২৮ – ৪

ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে তৌহিদ হৃদয়।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top