সুপার ফোরের আশা বাঁচিয়ে রাখতে নিজেদের ২য় ম্যাচে আফগানিস্তানের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হার দিয়ে এশিয়া কাপ শুরু করা টাইগাররা প্রত্যাশিতভাবেই চাপে ছিল এই ম্যাচে।
অন্যদিকে, এই ম্যাচ দিয়ে আসর শুরু করা আফগানিস্তান দল জয়ের আশা নিয়েই মাঠে নামে।
১ম ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতার সম্মুখীন হওয়া বাংলাদেশের একাদশে ছিল একাধিক পরিবর্তন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে অভিষেক হওয়া তানজিদ হাসান তামিম, শেখ মাহেদী ও মুস্তাফিজুর রহমানের পরিবর্তে দলে জায়গা পান আফিফ হোসেন, হাসান মাহমুদ ও অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা শামীম পাটোয়ারী। যেখানে, পূর্ণশক্তির একাদশ নিয়েই মাঠে নামে আফগানরা।
বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মোহাম্মদ নাঈম শেখ, নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহীদ হৃদয়, শামীম পাটোয়ারী, আফিফ হোসেন, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম।
আফগানিস্তান একাদশ: হাসমাতুল্লাহ শহিদী (অধিনায়ক), রহমানুল্লাহ গুরবাজ, ইব্রাহিম জাদরান, রহমত শাহ, নাজিবুল্লাহ জাদরান, মোহাম্মদ নবি, রশিদ খান, কারিম জানাত, গুলবাদিন নাইব, ফজল হক ফারুকি, মুজিব উর রহমান।
ম্যাচের ১ম ইনিংস
টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া বাংলাদেশের হয়ে ওপেনিংয়ে আসে পরিবর্তন। মোহাম্মদ নাঈম শেখের সাথে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংসের শুরুটা করেন অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজ। দলের হয়ে ভালো শুরু আভাস দেন এই দুই ওপেনার।
প্রথম ১০ ওভার শেষে স্কোরবোর্ডে ৬০ রান তুললেও নাঈম শেখের উইকেট হারায় লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ফাস্ট ডাউনে ব্যাটিং করতে নেমে তাওহীদ হৃদয় ফিরেন কোনো রান না করেই।
এরপর মেহেদী মিরাজকে সাথে নিয়ে দলের হয়ে আরও একবার হাল ধরেন নাজমুল শান্ত। দেখেশুনে খেলতে থাকা মিরাজ ২৪তম ওভারে এসে নিজের অর্ধ শতক পূর্ণ করেন। মিরাজের পর টুর্নামেন্টে নিজের ২য় হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান নাজমুল হোসেন শান্ত।
অসাধারণ পারফর্ম্যান্সে ৩৭ ওভারে ১৫০ রানের পার্টনারশিপ পূরণ করেন এই দুই ব্যাটার। এর ৪ ওভার পরেই ক্যারিয়ারের ২য় সেঞ্চুরি তুলে নেন মেহেদী মিরাজ। ইনিংসের শুরু থেকে টানা ৪২ ওভার ব্যাটিং করার পর ইনজুরির কারণে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েন এই অলরাউন্ডার।
মিরাজের মাঠ ছাড়ার পরপরই তার দেখানো পথে সেঞ্চুরি করেন নাজমুল শান্ত। অবশেষে, ১০৪ রান করে রানআউটে কাঁটা পড়েন এই ব্যাটার। এরপর, মুশফিকের ২৫, শামীমের ১১ ও সাকিবের যোগ করা ৩২ রানের উপর ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৪ রানের বিশাল সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ।
ম্যাচের ২য় ইনিংস
৩৩৫ রানের পাহাড় সমান রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় আফগানিস্তান। ইনিংসের ২য় ওভারেই এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে মাত্র ১ রান করে আউট হন রহমানুল্লাহ গুরবাজ। পরে দেখেশুনে খেলে দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার ইব্রাহিম জাদরান এবং রহমত শাহ।
তাসকিন আহমেদের বলে আউট হয়ে রহমত শাহ সাজ ঘরে ফিরলেও তার সঙ্গ দেওয়া ইব্রাহিম জাদরান নিজের ফিফটি তুলে নেন মাত্র ৫২ বলে। অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শহিদীকে সাথে নিয়ে জয়ের লক্ষ্যেই এগিয়ে যাচ্ছিল আফগানরা।
এরই মাঝে ২৮তম ওভারে অসাধারণ পারফর্ম্যান্স করতে থাকা ইব্রাহিমকে আউট করে আবারও বাংলাদেশকে চালকের আসনে বসান হাসান মাহমুদ। মুশফিকের দুর্দান্ত এক ক্যাচে ৭৫ রান করে ফিরেন এই আফগান ব্যাটার। ইব্রাহিম জাদরানের পর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে জোনাথন ট্টট শিষ্যরা।
বাংলাদেশি বোলারদের তোপে ১৭ রান করে নাজিবুল্লাহ জাদরান, ৫১ রান করে হাসমাতুল্লাহ শহিদী, ১৫ রান করে গুলবাদিন নাইব ও ৩ রান করে মোহাম্মদ নবি মাঠ ছাড়লে জয়ের পথ আরও সুগম হয় টাইগারদের। কারিম জানাতের রানআউট ও মুজিব উর রহমানের হিট উইকেটের পর আফগানিস্তানের হয়ে অলরাউন্ডার রশিদ খান শেষ চেষ্টা করলেও কাজের কাজ হয়নি।
ফলে, ২৪৫ রানে আফগানিস্তান অলআউট হলে ৮৯ রানের বিশাল জয়ে এশিয়া কাপের সুপার ফোর নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। দলের হয়ে ব্যাটিংয়ে ১১২ রান ও বোলিংয়ে ১ উইকেট শিকার করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
ম্যাচ স্কোরবোর্ড (Match Scoreboard)
বাংলাদেশ ৩৩৪/৫ (৫০ ওভার)
মেহেদী হাসান মিরাজ – ১১২* (১১৯)
মুজিব উর রহমান – ১/৬২ (১০ ওভার)
আফগানিস্তান ২৪৫/১০ (৪৪.৩ ওভার)
ইব্রাহিম জাদরান – ৭৫ (৭৪)
তাসকিন আহমেদ – ৪/৪৪ (৮.৩ ওভার)
ম্যাচ সেরা – মেহেদী হাসান মিরাজ
- Get Gardening Tips everyday