অসম্ভবকে সম্ভব করে জয়

অসম্ভবকে সম্ভব করে জয় এনে দিল মিরাজ ও মুস্তাফিজ!

তিনটি ওয়ানডে ও দুটি টেস্টের সিরিজ খেলতে বাংলাদেশে এসেছে ইন্ডিয়া। আজকে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মাঠে নেমেছে প্রথম ওয়ানডেতে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে বাংলাদেশে এসেছিল ইন্ডিয়া। সেবারে ২-১ এ জিতেছিল বাংলাদেশ। 

টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় নতুন অধিনায়ক লিটন দাস। ইন্ডিয়ার পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে রোহিত শর্মা ও শেখন ধাওয়ান। দুজনে আস্তে ধীরে ইনিংস শুরু করে। মিরপুরের পিচ ব্যাটিংয়ের জন্য কখনোই ভালো ছিল না।

তাই খুব একটা সুবিধা করতে পারছিল না ইন্ডিয়া। ষষ্ঠ ওভারে এসে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম উইকেট শিকার করে মেহেদী হাসান মিরাজ। ১৭ বলে ৭ রান করে শেখন ধাওয়ান আউট হলে প্রথম উইকেট হারায় ইন্ডিয়া। 

এরপর মাঠে নামে বিরাট কোহলি। তবে কোহলিও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। রোহিত আর কোহলি ক্রিজে সেট হওয়ার চেষ্টা করছিল। তবে একই ওভারে দুজনকে তুলে নেয় সাকিব। ১১তম ওভারের দ্বিতীয় বলে রোহিত শর্মাকে বোল্ড আউট করে সাকিব।

৩১ বলে ২৭ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় রোহিত। একই ওভারের চতুর্থ বলে লিটনের হাতবন্দি হয়ে আউট হয় কোহলি। লিটন দাসের অসাধারণ ক্যাচে ১৫ বলে ৯ রান নিয়ে বিদায় নেয় বিরাট কোহলি।

এরপর মাঠে নামে শ্রেয়াস ও রাহুল। রাহুল নেমেই দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। তাকে তেমন সঙ্গ দিতে না পারলেও টিকে ছিল শ্রেয়াস। তবে তাকেও দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়নি এবাদত হোসেন। ৩৯ বলে ২৪ রান করে মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ তুলে আউট হয় শ্রেয়াস।

এরপর রাহুলকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে ওয়াসিঙ্গটন সুন্দার। দুজনে মিলে ইন্ডিয়াকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যায়। অবশেষে সুন্দারকে সাজঘরে ফেরায় সাকিব আল হাসান। ৪৩ বলে ১৯ রানের সংগ্রহ নিয়ে সাজঘরে ফিরে সুন্দার। 

এক প্রান্তে রাহুল দলকে এগিয়ে নিতে থাকলেও অপর প্রান্ত থেকে কোন প্রকার সাড়া পায়নি। ইন্ডিয়া পঞ্চম উইকেট হারানোর পরে আর কেউ টিকতে পারেনি। অবশেষে রাহুলকেও সাজঘরে ফেরায়। ৭০ বলে ৭৩ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে রাহুল। 

শেষে এবাদত ও সাকিবের ঝড়ো বোলিংয়ে আর কেউ দাঁড়াতেই পারেনি। মাত্র ৪১.২ বলে সকল উইকেট হারায় ইন্ডিয়া। এতে তাদের সংগ্রহ দাড়ায় ১৮৬ রান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৫ টি উইকেট শিকার করে সাকিব আল হাসানও চারটি উইকেট নিয়েছে এবাদত হোসেন। একটি উইকেট পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। 

১৮৭ রানের টার্গেট নিয়ে বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস। ইনিংসের প্রথম বলেই নাজমুল হোসেন শান্তকে তুলে নেয় দিপাক চাহার। প্রথম বলে শান্ত ফেরার পর মাঠে নামে এনামুল হক বিজয়। তবে বিজয়ও খুব বেশীক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেনি। ২৯ বলে ১৪ রান করে মোহাম্মদ সিরাজের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে। এরপর মাঠে নামে সাকিব আল হাসান। 

সাকিব ও লিটন আস্তে ধীরে দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। তাদের পার্টনারশিপ ভাঙে ওয়াসিঙ্গটন সুন্দার। সুন্দারের বলে ব্যাটে হালকা লেগে কিপারের হাত বন্দি হলে ৬৩ বলে ৪১ রানের সংগ্রহ নিয়ে সাজঘরে ফিরে লিটন দাস।

লিটনের পর সাকিবও খুব বেশীক্ষণ টিকতে পারেনি। সুন্দারের বলেই ৩৮ বলে ২৯ রানের সংগ্রহ নিয়ে সাজঘরে ফিরে সাকিব আল হাসান। এরপর মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ কিছুটা টানলেও দ্রুতই আউট হয়। ৪৫ বলে ১৮ ও ৩৫ বলে ১৪ রান করে আউট হয় মুশফিক ও রিয়াদ। 

এরপর ক্রমান্বয়ে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। শেষ উইকেটে মেহেদী হাসান মিরাজ ও মুস্তাফিজ ছিল ব্যাটিংয়ে। মুস্তাফিজ ও মিরাজের অসাধারণ ব্যাটিং আর পার্টনারশিপে আস্তে আস্তে জয়ের দিকে যেতে থাকে বাংলাদেশ।

শেষ পর্যন্ত চার ওভার বাকি থাকতেই ৯ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছায় বাংলাদেশ। এতে ইনিংসের প্রথম ম্যাচ জিতে এগিয়ে যায় টাইগাররা। ৩৯ বলে ৩৮ রান করে অপরাজিত ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ।

১০ রান করে অপরাজিত ছিল মুস্তাফিজ। ইন্ডিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ ৩ টি উইকেট নিয়েছেন মোহাম্মদ সিরাজ। দুটি করে উইকেট পেয়েছে কুলদীপ সেন ও সুন্দার। ম্যান অফ দ্য ম্যাচ হয়েছে মেহেদী হাসান মিরাজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর 

ইন্ডিয়া – ১৮৬/১০ (৪১.২)

কেএল রাহুল ৭৩ (৭০) 

রোহিত শর্মা ২৭ (৩১)

শ্রেয়াস ইয়ের ২৪ (৩৯)

সাকিব আল হাসান ৫/৩৬

এবাদত হোসেন ৪/৪৭

মেহেদী হাসান মিরাজ ১/৪৩

বাংলাদেশ – ১৮৭/৯ (৪৬)

লিটন দাস ৪১ (৬৩)

মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৮ (৩৯)

সাকিব আল হাসান ২৯ (৩৮)

মোহাম্মদ সিরাজ ৩/৩২

ওয়াসিঙ্গটন সুন্দার ২/১৭

কুলদীপ সেন ২/৩৭

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top