ইংল্যান্ড ক্রিকেট টিম

অসাধারণ জয়ে ১-০ তে এগিয়ে গেল ইংলিশরা!

বাংলাদেশ সফরে এসেছে ইংল্যান্ড ক্রিকেট টিম। তিনটি ওয়ানডে ও তিনটি টি টুয়েন্টি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশের সাথে। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশ। 

মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অধিনায়ক তামিম ইকবাল। চির পরিচিত মিরপুরের ক্রিজে ওপেনিংয়ে নামে তামিম ইকবাল ও লিটন দাস। তবে শুরুটা ভালো আশানুরূপ হয়নি বাংলাদেশের। তামিম বলের সাথে পাল্লা দিয়ে রান তুললেও লিটন তেমন সুবিধা করতে পারেনি। ইংল্যান্ডের বোলারদের সামনে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ পায়নি লিটন দাস। এক ছক্কায় কিছুটা আশার আলো দেখালেও একই ওভারে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে লিটন দাস। 

এরপর রানের গতি খুবই ধীর হয়ে যায়। ধীর গতীতে দলকে টানতে থাকে তারা দুজনে। অবশেষে ১০তম ওভারে ৩২ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে মার্ক উডের বলে বোল্ড হয় তামিম ইকবাল। এরপর শান্তকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসে মুশফিকুর রহিম। বেশ কিছুক্ষণ শান্তকে সঙ্গ দিলেও ব্যাটিংয়ে তেমন সাফল্য দেখেনি মুশফিক। ২০তম ওভারে ৩৪ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলে আদিল রশিদের বলে মার্ক উডের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে মুশফিকুর রহিম। 

সাকিব আল হাসানও আজকে জ্বলে উঠতে ব্যর্থ হয়। ১২ বলে ৮ রানের ছোট ইনিংস খেলে দ্রুতই তাকে সাজঘরে ফেরায় মঈন আলী। এরপর মাহমুদউল্লাহ এসে দলের হাল ধরে। শান্ত ও রিয়াদ আস্তে ধীরে দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। তাদের পার্টনারশিপে বেশ অনেকটা এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। তবে তাদের জুটিকে দীর্ঘস্থায়ী হতে দেয়নি আদিল রশিদ। হাফ সেঞ্চুরি করে দ্রুত রান এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে শান্ত। কিন্তু সে সফল হতে দেয়নি রশিদ। ৮২ বলে ৫৮ রানের ইনিংস খেলে জ্যাসন রয়ের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে শান্ত। 

শান্ত আউটের পরে রিয়াদের ইনিংসও আর বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। পরের ওভারেই মার্ক উডের বলে জস বাটলারকে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৪৮ বলে ৩১ রানের ইনিংস নিয়ে সাজঘরে ফিরে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। এরপর মাঠে আসে আফিফ হোসেন ও মেহেদী হাসান মিরাজ। আফিফ শুরুটা ভালোই করে কিন্তু তাকেও ফিরতে হয় শীঘ্রই। ১২ বলে ৯ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় আফিফ। মেহেদী আরও কিছুক্ষণ টিকে থাকলেও কোন সুবিধা করতে পারেনি। ১৯ বলে ৭ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে মিরাজ। 

এরপর তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলামের ব্যাট হতে কিছু রান পায় বাংলাদেশ। ১৮ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে আউট হয় তাসকিন। পরের ওভারেই ১৩ বলে ১০ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় তাইজুল ইসলাম। এতে নির্ধারিত ওভার শেষ হওয়ার আগেই ৪৭.২ বলে ১০ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। বাংলাদেশের মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০৯ রান। ইংল্যান্ডের পক্ষে দু’টি করে উইকেট শিকার করে জফ্রা আর্চার, মার্ক উড, আদিল রশিদ ও মঈন আলী। 

২১০ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে ইংল্যান্ডের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে জ্যাসন রয় ও ফিলিপ সল্ট। ইংল্যান্ডের পক্ষেও শুরুটা ভালো হয়নি। প্রথম ওভারেই জ্যাসন রয়কে তুলে নেয় সাকিব আল হাসান। ৬ বলে ৪ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে জ্যাসন। এরপর আরেক ওপেনার ফিলিপ সল্টও বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। ১৯ বলে ১২ রানের ইনিংস খেলা সল্টকে বোল্ড করে তাইজুল ইসলাম। 

এরপর দলকে টানতে শুরু করে দাউদ মালান। মালান টিকে থাকলেও অপর প্রান্তে তাকে সঙ্গ দিতে পারছিল না কেউ। অপর প্রান্তে ক্রমাগত উইকেট হারাতে ইংল্যান্ড। জেমস ভিনস ৯ বলে ৬ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয়। এরপর জস বাটলার ১০ বলে ৯ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে। অবশেষে উইল জ্যাকস এসে প্রতিরোধ গড়ে তুলে। তুলনামূলক দ্রুত রান তুলতে থাকে জ্যাকস। অবশেষে জ্যাকসকে থামায় মেহেদী। ৩১ বলে ২৬ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে জ্যাকস। 

এরপর মঈন আলী এসেও তেমন সুবিধা করতে পারেনি। মঈন আলী কোন রকমে টিকে থাকলেও অপর প্রান্তে ধীরে ধীরে দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় দাউদ মালান। ততক্ষণে হাফ সেঞ্চুরি সম্পূর্ন করেছে মালান। ৩২ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে মাঈন আলী। এরপর ক্রিস ওয়েকস ১১ বলে ৭ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে। ৭ উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। 

শেষে ক্রিজে আসে আদিল রশিদ। রশিদকে সাথে নিয়ে সেঞ্চুরিও সম্পূর্ণ করে মালান। মালানের অসাধারণ ইনিংসে ৮ বল বাকি থাকতেই ৩ উইকেটে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। ২৯ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল আদিল রশিদ। ১৪৫ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল দাউদ মালান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করে তাইজুল ইসলাম এবং দু’টি উইকেট শিকার করে মেহেদী হাসান মিরাজ। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ – ২০৯/১০ (৪৭.২)

নাজমুল হোসেন শান্ত ৫৮ (৮২)

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩১ (৪৮)

তামিম ইকবাল ২৩ (৩২)

মার্ক উড ২ – ৩৪ – ৮

মঈন আলী ২ – ৩৫ – ৭.২

ইংল্যান্ড – ২১২/৭ (৪৮.৪)

দাউদ মালান ১১৪ (১৪৫)

উইল জ্যাকস ২৬ (৩১)

আদিল রশিদ ১৭ (২৯)

তাইজুল ইসলাম ৩ – ৫৪ – ১০

মেহেদী হাসান মিরাজ ২ – ৩৫ – ১০

ম্যান অব দ্য ম্যাচ দাউদ মালান।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top