কি করলে জীবনে সুখি হবো

কি করলে জীবনে সুখি হবো? সুখী হবার গোপন রহস্য জানুন!

জীবনে সবাই সুখী হতে চায়। কিন্তু কি করলে জীবনে সুখি হবো? এই প্রশ্নই যেনো কারও পিছু ছাড়ে না। আচ্ছা! সুখ কি আসলেই মরীচিকা? সকলে কি সুখ পায়? আসলে সুখের রসদ খুঁজতে সকলেই ব্যস্ত। সুখ হচ্ছে মনের এক সুন্দরতম অনুভূতি। যা প্রকাশ করা যায় না, শুধু অনুভব করতে হয়। আর তার বহিঃপ্রকাশ পাওয়া যায় আমাদের হাসিতে। সুখের অনুভূতি মনকে ভালো করে, মনে তৃপ্তি আনে, কষ্টগুলোকে চাপা দেয়। জীবনে সুখী হবার চাবিকাঠি নিজের হাতেই৷ মানুষ নিজেই নিজের সুখের নিয়ন্তা। 

কি করলে জীবনে সুখি হবো

সুখ আসলে এমন এক অনুভূতি যার সংজ্ঞা মানুষ ভেদে ভিন্ন। তবে সবার কাছেই সুখ বলতে কষ্টের বিপরীত কোনো ভালো ও সুন্দর অনুভূতি। যার অনুভবেই মন তৃপ্ত হয়। তবুও কি করলে জীবনে সুখি হবো; সকলেরই এ প্রশ্ন রয়ে যায়। চলুন আজ তাহলে জেনে নেওয়া যাক- আসলেই কি করলে জীবনে সুখি হবো?

সবসময় পজেটিভ থাকুন

সুখী হবার অন্যতম মূলমন্ত্র হলো সবসময় পজেটিভ থাকা। দুঃচিন্তা দূরে রেখে পজেটিভ থাকলে জীবনে সুখী হওয়া যায়। কাজে-কর্মে-চিন্তায় পজেটিভিটি আনা জরুরি। একজন মানুষ যত বেশি পজেটিভ, সে তত বেশি সুখী। নেগেটিভ চিন্তা-ভাবনা বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে, কোনো সমাধান দেয় না। আর পজেটিভ মানুষের নিজেকে নিয়ন্ত্রণেরও শক্তি আছে। তাই সবসময় পজেটিভ থাকার চেষ্টা করুন। 

লক্ষ্য স্থির করুন

প্রতিটি মানুষের জীবনে লক্ষ্য থাকা উচিত। লক্ষ্যহীন মানুষ চিন্তার অথৈই সাগরে ডুবে যায়। তাই আপনার জীবনের লক্ষ্য আপনাকেই ঠিক করতে হবে। কারণ লক্ষ্যহীন মানুষ সময়ের সাথে সাথে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে৷ জীবনের লক্ষ্য ঠিক থাকলে সেটা অর্জন করার জন্য লড়তে হয়। আর সেখানে মানুষ সুখের সন্ধান পায়। লক্ষ্য পূরণ জীবনে অপার সুখ বয়ে আনে। 

ডিপ্রেশনকে না বলুন 

ডিপ্রেশন আমাদের জীবনকে আষ্টেপৃষ্টে বেঁধে রেখেছে। ডিপ্রেশন জীবনের সব সুখ কেঁড়ে জীবনকে অন্ধকারে ঠেলে দেয়। জীবনে ব্যর্থতা আসবেই। আপনি অনেক ক্ষেত্রেই সফলতার মুখ দেখবেন না। তবে এ নিয়ে হতাশ হলে আপনি জীবনে সুখের মুখ দেখবেন না। তাই হতাশা ত্যাগ করে নতুন উদ্যমে এবং নতুন ভাবে সব কিছু শুরু করুন। লেগে থাকুন নিজের কাজে, নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন- সুখ আসবেই।

অন্যের সাথে তুলনা করা বন্ধ করুন

কি করলে জীবনে সুখি হবো? এ প্রশ্নের অন্যতম এক সমাধান হলো নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করা বন্ধ করা৷ অনেকেই অন্যের সাথে নিজের তুলনা করে থাকেন, যা আদৌ ঠিক নয়। এতে আপনার জীবন আরও জটিল হবে। মানসিক শান্তি খুঁজে পাবেন না। তাই আপনার যা আছে তাই নিয়ে সুখে থাকুন। 

নিজেকে সময় দিন

প্রতিদিন খুব অল্প হলেও নিজেকে সময় দিন কারণ নিজের জন্য সময় বরাদ্দ করা জরুরি। নিজেকে নিয়ে ভাবুন, নিজের ভুলগুলো সংশোধনের চেষ্টা করুন। মূলকথা নিজেকে ভালোবাসুন। ভালো কাজের জন্য নিজেকে নিজে ধন্যবাদ দিন, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন নিজের প্রতি। এতেই জীবনের এক পরম তৃপ্ত, একখণ্ড সুখের পরশ।

ঝামেলা মুক্ত জীবন ধারণ করুন

সকলেই চায় ঝামেলা মুক্ত, নির্ঝঞ্ঝাট জীবন-যাপন করতে। এজন্য জীবনে গুছিয়ে ফেলুন। অগোছালো জীবনে ঝামেলার সাথে মানসিক চাপও থাকে। তাই যতটা পারবেন মানসিক চাপ কমিয়ে ফেলুন। এতে জীবনে সুখ আসবে। আর গোছানো জীবনে সুখ আসে।

নিজস্বতা বজায় রাখুন

অন্যকে খুশি রাখতে গিয়ে নিজেকে বদলে ফেলা উচিত নয়। এতে নিজস্বতা হারিয়ে যায়। নিজের মন যা চায়, সেটা করুন। অন্যের মতামতকে প্রাধান্য দিন তবে আগে নিজেকে। অন্যের জন্য নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে গিয়ে কখনও সুখী হওয়া যায় না। 

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

পরিবারকে সময় দিন

প্রতিটি মানুষের জন্য পরিবার এক অমূল্য সম্পদ হলেও অনেকেই তা অনুধাবন করতে পারেন না। পরিবারের থেকে বেরিয়ে বা বিচ্ছিন্ন হয়ে জীবনে সুখী হওয়া সম্ভব না। পরিবারের সদস্যদের ভালোবাসলে জীবনে সুখী হওয়া যায়। তাই কাজের বাহিরে যতটা সম্ভব পরিবারকে সময় দিন। পরিবারের দায়িত্ব নিন, সময় দিন, ঘুরতে যান এতে আপনি এক পরম তৃপ্তি অনুভব করবেন।

এছাড়া কাছের আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুদের সময় দিন। বিশ্বাসযোগ্য মানুষের সাথে সমস্যা শেয়ার করুন। বন্ধুদের সাথে সময় কাটান, আড্ডা দিন। বন্ধুদের সাথে ট্যুরে গেলে ভালো সময় কাটে। এগুলো উপভোগ করুন।

অন্যকে দোষারোপ করা বন্ধ করুন

অনেকেই জীবনের পেছনের ঘটনাকে আঁকড়ে ধরে থাকেন, বের হয়ে আসতে পারেন না। আবার অন্যেকে দোষারোপ করে থাকেন। জীবনে ঘটে যাওয়া নেতিবাচক ঘটনার জন্য অন্যকে দোষারোপ করা বন্ধ করুন। ক্ষমা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে জীবনে সুখী হওয়া যায়। অভিযোগ কমিয়ে জীবনে ভালো কাজের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলুন। 

সুখী হবার গোপন রহস্য 

বলা হয়, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। তাই সবকিছুর আগে নিজের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দিন। সুখের সাথে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য জড়িত। কারণ শরীর ও মন ভালো না থাকলে কিছুই ভালো লাগে না। তাই সুখী হবার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রহস্য হলো সুস্বাস্থ্য। 

স্থূলতা বা পুষ্টিহীনতা শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব বিস্তার করে। সুস্থ থাকার জন্য তাই প্রয়োজন পুষ্টিকর খাবার৷ তাছাড়া সকালে ব্যায়াম ও মেডিটেশন শরীর ও মনকে চাঙ্গা করে তোলে৷ সেই সাথে পর্যাপ্ত ঘুমও জরুরি। সুশৃঙ্খল জীবন-যাপন করলে শরীর ও মন উভয়ই ভালো থাকে।

দাম্পত্য জীবনে সুখি হওয়ার উপায়

শুধুমাত্র অর্থ-বিত্ত বা সৌন্দর্য দাম্পত্য জীবনে সুখ আনতে পারে না। একমাত্র ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দাম্পত্য জীবনের মূল। চলুন জেনে নেই দাম্পত্য জীবনে সুখি হবার উপায়-

  • দাম্পত্য জীবনে সুখী হবার অন্যতম উপায় হলো আন্তরিকতা ও বিশ্বাস। বিশ্বাসযোগ্যতা, ভালো স্বভাব, সহযোগী মনোভাব, ক্ষমাশীলতা, উদারতা, ধৈর্যশীলতার মতো গুণগুলো দাম্পত্য জীবনকে সুখী করে। 
  • মনের মিল না থাকলে সংসার জীবনে সুখী হওয়া যায় না। তাই জীবনসঙ্গীর সাথে যেসব বিষয়ে মিল রয়েছে সেগুলো উপভোগ করুন। নিজেদের মধ্যে সমঝোতা তৈরি করুন।
  • জীবনসঙ্গীর উপর কখনই জোর করে কিছু চাপিয়ে দেওয়া ঠিক নয়। এতে সম্পর্ক নষ্ট হয়। যেকোনো বিষয়ে দুজনে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিন।
  • আপনার জীবনসঙ্গীর পছন্দকে প্রাধান্য দিন। এতে জীবনে সুখী হওয়া যায়। 
  • দাম্পত্য জীবনে ঝগড়া হবে এটা স্বাভাবিক। তবে ঝগড়ার রেশ যেন সুদূরপ্রসারী না হয় সেটি খেয়াল রাখুন। সাথে সাথেই ঝগড়া মিটিয়ে ফেলুন। 

মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে ইসলাম কি বলে? আসুন জেনে নি!

প্রকৃত সুখ কোথায় পাওয়া যায়?

অনেকেই ভাবেন প্রকৃত সুখ বলে আদৌ কি কিছু হয়। প্রকৃত সুখ আসলে কি? আমরা আসলে সুখের জন্য বেপরোয়া হয়ে যায়। কিন্তু সুখ আমাদের কাছেই থাকে। শুধু আমরা তাকে ছুঁতে পারি না। অনেক সময় অনুভব করতে পারি না। প্রকৃত সুখ মানুষের নিজের মধ্যেই থাকে। 

একজন মানুষ আসলে কিভাবে সুখী থাকবেন। সেটি সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত বিষয়। কেউ কুঁড়ে ঘরে থেকেও সুখী। কেউ আবার কোটি টাকা আয় করেও সুখী নয়। নিজের দৃষ্টিভঙ্গি বদলান, নিজের দায়িত্ব পালন করুন। সর্বোপরি নিজেকে নিয়ে সুখী থাকুন। প্রকৃত সুখ আসলে নিজের মধ্যেই নিহিত, আমাদের শুধু সুখের পথটা খুঁজে বের করতে হবে।

কী করলে পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি শান্তি পাওয়া যায়

সুখ-শান্তি বিষয়গুলো জীবনের সাথে একই যোগসূত্রে বাঁধা। জেনে নেই পৃথিবীতে শান্তি পাবার উপায়গুলো-

  • সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন। সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে শান্তি পাওয়া যায়।
  • জীবনের ছোট ছোট ইচ্ছাকে পূরণ করুন। এগুলো জীবনে শান্তি বয়ে আনে। 
  • মানুষকে ভালোবাসুন। মানুষকে ভালোবাসলে পৃথিবীতে শান্তি পাওয়া যায়। 
  • অসহায়কে যতটা সম্ভব সাহায্য করুন। অসহায় মানুষের মুখে হাসি ফোঁটালে মনে পরম শান্তি আসে।
  • যতটা সম্ভব হাসি-খুশি ও প্রাণোবন্ত থাকার চেষ্টা করুন। জীবনের প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করুন।

উপসংহার

অন্ধকারের পরে যেমন আলো আসে, দুঃখের পরও তেমনি সুখ আসে। কি করলে জীবনে সুখি হবো; এ চিন্তাকে পেছনে রেখে নিজের উদ্যমে এগিয়ে যান। আপনি সারাদিন ভালো কাজে ব্যস্ত থাকলে এমনিতেই সুখ আপনার কাছে ধরা দেবে৷ কিন্তু সবকিছু ফেলে সারাদিন সুখের চিন্তা করলে হয়তো সুখ পাওয়া কঠিন বিষয়। তাই ভালো কাজ ও মনকে প্রশান্তি দেয় এমন কাজ করলে জীবনে সুখের স্বাদ পাবেন। 


আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে ক্লিক করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top