ক্যারাম খেলার নিয়ম

ক্যারাম খেলার নিয়ম কানুন | ইতিহাস সহ বিস্তারিত!

ক্যারাম খেলার নিয়ম সম্পর্কে জানে না এমন যুবক এ অঞ্চলে খুঁজে পাওয়া কঠিন। বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর এক অন্যতম মাধ্যমই হচ্ছে এই ক্যারাম। এরই সুবাদে ক্যারাম খেলার নিয়ম কমবেশি আমাদের সকলেরই জানা। শুরুতেই যে বিষয়টি আসে তা হলো ক্যারাম খেলা কোথায় হয়ে থাকে? 

ক্যারাম খেলার সকল নিয়ম ও কৌশল সহ ইতিহাস সহ ভিডিও তে দেখতে এখানে ক্লিক করুন

আমরা জানি, ক্যারাম ঘরোয়া কিংবা ইনডোর  অন্তর্ভুক্ত জনপ্রিয় একটি খেলা। শহর কিংবা গ্রামে সর্বত্রে এই খেলার প্রচলন রয়েছে। এর ফলে আমাদের দেশে অনেকেই ক্যারাম খেলায় পারদর্শী। বাচ্চা থেকে বয়স্ক সকলের মাঝেই এই খেলার রয়েছে ব্যাপক প্রচলন। অবসর সময়ে নারীরাও এই খেলা তাদের পরিবারের সাথে খেলে থাকে। আজকের পর্বে ক্যারাম খেলার নিয়ম সম্পর্কে আমরা আপনাদের জানাবো। 

ইতিহাসঃ-

ক্যারাম খেলা প্রথম আবিষ্কার হয় দক্ষিণ এশিয়ায়।  এ নিয়ে অনেক বিতর্কও রয়েছে। কারো কারো মতে,  খেলাটি প্রথম আবিষ্কার হয় শ্রীলঙ্কায়।  অনেকের মতে, ভারতীয়রা এই খেলাটি শ্রীলঙ্কায় ছড়িয়ে দেয়। অনেকে আবার বলেন এই খেলাটির জন্ম পর্তুগালে।  অধিকাংশ মানুষের মতে, ভারতীয় মহারাজারা এই খেলার প্রচলন করেন। 

 আবিস্কারের পর  ভিন্ন ভিন্ন দেশ তাদের নিজস্ব নিয়মে এই খেলার আয়োজন করে থাকতো। ১৮৯০ সালে শিক্ষাবিদ হেনরি হাস্কেল আমেরিকায় এই খেলার প্রচলিত নিয়মে পরিবর্তন আনেন।   আন্তর্জাতিক ক্যারাম ফেডারেশন ১৯৮৮ সালে ভারতের চেন্নাইয়ে গঠিত হয়।

 এরপর থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ক্যারাম বোর্ডের বিভিন্ন টুর্নামেন্ট  আয়োজিত হয়েছে।  সর্বজনীন ১৯৯৩ সালে প্রথম  ক্যারাম খেলার প্রতিযোগিতা আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু করা হয়। বাংলাদেশে ক্যারামের কমিটি গঠন হয় ১৯৯০ সালে।

ক্যারাম খেলার নিয়ম

ক্যারাম খেলার নিয়মঃ– 

বোর্ডঃ

ক্যারাম খেলতে হলে অবশ্যই আমাদের ক্যারাম বোর্ডের মাপ সম্পর্কে জানতে হবে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এই ক্যারাম বোর্ডের মাপ। 

*প্রতি বাহুর দৈর্ঘ্যের সর্বনিম্ন পরিমাপঃ- ৭৩.৫০ সে. মি। 

*প্রতি বাহুর দৈর্ঘ্যের সর্বোচ্চ পরিমাপঃ- ৭৮ সে. মি। 

* প্রতিটি প্যাকেটের ব্যাসের মাপঃ- ৪. ৪৫ সে. মি। 

গুটি স্ট্রাইকারঃ-

ক্যারাম খেলার নিয়ম কানুন অনুযায়ী  গুটির সংখ্যা সর্বমোট ১৯ । এই ১৯ টি গুটির মধ্যে ৯ টি সাদা ৯টি কালো এবং ১ টি লাল যাকে রেড বা রেড কুইন বলা হয়। 

*প্রত্যেকটি গুটির ব্যাসঃ- ৩.০২ সে. মে থেকে ৩.১৮ সে. মি। 

*গুটির ওজনঃ- ৫ থেকে ৫.৫০ গ্রামের ভিতর হয়ে থাকে। 

*স্ট্রাইকারের ব্যাসঃ- ৪.১৩ সে. মি। 

স্ট্রাইকারের ওজনঃ- সর্বোচ্চ ১৫ গ্রাম

>>আরো পড়ুনঃ ক্যারাম বোর্ডের ৫ টি সেরা শট – ট্রিক(ছবি সহ)

বোরিক এসিড বা পাউডারঃ-

আমাদের জানতে হবে বোরিক এসিড বা পাউডার মুলত কি! ক্যারাম খেলার নিয়ম অনুসারে ক্যারাম বোর্ডকে মসৃণ বা পিচ্ছিল করার লক্ষ্যে যে এসিড ব্যবহার করা হয় তাই মূলত বোরিক এসিড। কক্ষ তাপমাত্রায় এই এসিড একটি পাউডার মাত্র। 

ক্যারাম খেলার নিয়ম অনুযায়ী যেভাবে এই খেলাটি পরিচালনা করা হয় তা নিয়ে সংক্ষেপে  আলোচনা করবো। আমরা জানি, ক্যারাম খেলা পরিচালনা করতে দুই থেকে চারজনের প্রয়োজন পড়ে।  প্রতিপক্ষ  দুইজনের মধ্যে নিবন্ধিত খেলাকে সিঙ্গেল খেলা বলে। চারজনের মধ্যে খেলাকে বলা হয় ডাবল।  সিঙ্গেল খেলায় প্রতিপক্ষ সামনা-সামনি  অবস্থান নেয়। এবং ডবল খেলায় পরস্পর বিপরীতমূখী অবস্থান নেয় । টসের মাধ্যমে নির্ধারিত হয় কোন দল স্ট্রাইক করবে। স্ট্রাইকার দিয়ে গুটিতে ধাক্কা দেওয়ার মাধ্যমে খেলা শুরু হয় যায়। যে দল হিট করে বা ধাক্কা দেয় সে দলের গুটির রং হয় সাদা।

অপরপক্ষের গুটির রং কালো হয়।  একজন খেলোয়াড় একবারে যতগুলো গুটি পকেটে ফেলতে পারে ততক্ষণ পর্যন্ত তার হাত স্ট্রাইকারে থাকে। একবার গুটি পকেটে ফেলতে ব্যর্থ হলে সে স্ট্রাইক হারায়, প্রতিপক্ষ স্ট্রাইক করার সুযোগ পাই । 

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন  আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com
আরো পড়তে পারেনঃ

ডান দিক দিয়ে এভাবে স্ট্রাইক ঘুরতে থাকে। প্রথম গুটি ফেলার আগে কোন পক্ষ লাল গুটি পকেটে ফেলে দিলে সে তার দান হারায় । লাল গুটির মান সাধারণত ৫। লাল গুটি পকেটে ফেললে কভার হিসেবে তার নিজের একটি গুটি পকেটে ফেলতে হয়। পকেটে ফেলতে ব্যর্থ হলে লাল গুটি পকেট থেকে বের করে সেন্টারে রাখতে হয়।

 অর্থাৎ কোন দল তাদের  লাল  সহ সব গুটি ফেলার পর বিপরীতের গুটি ১ টি বা ২ টি অবশিষ্ট রাখতে সক্ষম করায় তবে সে দল রেড বা লালের ৫ পয়েন্ট সহ মোট যে কয়টি গুটি থাকবে সে কয়টি পয়েন্ট লাভ করবে।  সাদা ও কালো প্রতিটি গুটির মান  ১ করে ।  যে দল সর্বপ্রথম ২৯ পয়েন্ট লাভ করে সেই দলকে সেই দলের বিজয়ী হিসেবে ধরা  হয়।  এভাবেই খেলা পরিচালনা করা হয়ে থাকে। 

পরিসমাপ্তিঃ-

শহর কিংবা গ্রামে এই খেলার দৃশ্য আমাদের কাছে বেশ পরিচিত।  অনেকে শখে বা অবসর সময় উপভোগ করার উদ্দেশ্যে খেলে থাকলেও অনেকের কাছে এটি একটি নেশা ।  অনেকেই  আবার এই খেলায় বাজি খেলে থাকে। তবে দিনশেষে এটি একটি বিনোদন মাত্র।

লিখেছেনঃ আরিয়ান ইবরাহিম

আরো পড়ুনঃ

1 thought on “ক্যারাম খেলার নিয়ম কানুন | ইতিহাস সহ বিস্তারিত!”

  1. যেগুলো বলা হয়েছে এগুলো না বললেও চলতো কিন্তু মূল নিয়মগুলো বলা হয় নি যে নিয়মগুলো অনেকেই মানতে চায় না ঐগুলো বেশি দরকার ছিলো ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top