খিচুনি রোগের ওষুধ

খিচুনি রোগের প্রতিকার; জানুন কার্যকরি ৩টি হামদর্দ ওষুধের নাম!

খিচুনি রোগের ভয়াবহতা ব্যাপক হলেও এর চিকিৎসা নিয়ে অজ্ঞতা থেকেই যায়। তাই এই রোগ থেকে বাঁচতে সর্বপ্রথম কাজ হলো সচেতনতা বৃদ্ধি। আর তাই খিচুনি রোগের ওষুধ নিয়ে সাজানো আমাদের আজকের আয়োজন যা আপনাকে একজন নিউরোলজিস্ট এর দৃষ্টিকোণ থেকে ধারণা দিবে। 

খিচুনি রোগের ওষুধ 

খিচুনি রোগের চিকিৎসায় হামদর্দ যুগ যুগ ধরে বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। হামদর্দ নিম্নোক্ত ৩টি ওষুধ এই রোগের চিকিৎসায় অপরীক্ষিত ও অপরীসিম। চলুন জেনে নিই ওষুধগুলো কী কী। 

১. এত্রিফল ঊসতূখূদূস 

খিচুনি, মাইগ্রেন বা মাথাব্যথার অন্যতম ওষুধ হিসেবে এত্রিফল ঊসতূখূদূস অতি পরিচিত একটি নাম। যেকোনো আয়ুর্বেদ ডাক্তার এই ওষুধটি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এর অনন্য উপাদান হরিতকি, আমলা, বহেরা ও গোলাপফুল খিচুনি রোগসহ সর্দিকাশি ও বিভিন্ন মস্তিষ্কের রোগ নিরাময় করতে সক্ষম। 

কার্যকারিতা 

  • মাথাব্যথা কমায়
  • দীর্ঘমেয়াদি সর্দিকাশি দূর করে 
  • স্নায়বিক দূর্বলতা দূর করে 
  • দৃষ্টিশক্তির গোলযোগ কমায়
  • খিচুনি বা মৃগী রোগ উপশম করে

উপাদান

বড় হরিতকী ২৫০ মিগ্রা
জঙ্গী হরিতকী ১২৫ মিগ্রা 
বহেরা ১২৫ মিগ্রা
আমলকী ১২৫ মিগ্রা
গোলাপফুল১২৫ মিগ্রা
ঊসতূখূদূস ১২৫ মিগ্রা
বসফায়েজ১২৫ মিগ্রা
স্বর্ণলতা বীজ১২৫ মিগ্রা
কিশমিশ ১২৫ মিগ্রা

সেবনবিধি 

দৈনিক ১/২ চামচ অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেব্য। 

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া 

নির্দিষ্ট মাত্রায় সেবন করলে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায় না।

২. সেনচুরিন

খিচুনিরোধক হিসেবে সেনচুরিন বিশেষভাবে সমাদৃত একটি হামদর্দ ওষুধ। সেইসাথে এটি বিভিন্ন চর্মরোগ, ডায়রিয়া, ডিমনেশিয়া, মাইগ্রেন ও রক্ত জমাটবদ্ধতা দূর করতে সক্ষম। বহুমুখী গুণসম্পন্ন এই ওষুধ আপনার স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধিতেও সহায়তা করে। সেইসাথে এটি মস্তিষ্কের গুরুত্বপূর্ণ কোষে প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও অক্সিজেন সরবরাহে বিশেষ ভূমিকা রাখে। 

কার্যকারিতা 

  • খিচুনি রোধ করে
  • স্বরণশক্তি বৃদ্ধি করে 
  • ডিমনেশিয়া দূর করে
  • চর্মরোগ নিরাময় করে
  • ডায়রিয়া নিরাময় করে 
  • মাইগ্রেন দূর করে

উপাদান

প্রতিটি ক্যাপসুলে আছে থানকুনি ২৫০ মিগ্রা ও অন্যান্য উপাদান পরিমাণমতো। 

সেবনবিধি 

১ থেকে ২টি ক্যাপসুল দিনে ২ বার অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সেব্য। 

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া 

কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। 

৩. ভেলেন্ট

খিচুনি, দুশ্চিন্তা ও অনিদ্রা এই ৩টি জিনিস থেকে মুক্তি পেতে ভেলেন্ট এর বিকল্প এটি নিজেই। এই ওষুধটি হামদর্দ এর দুনিয়ায় বেশ জনপ্রিয় কেননা এটি মস্তিষ্কের বিষাক্ত অণুগুলোকে মেরে ফেলে। এবং অবশেষে এটি মানুষের অস্থিরতা কমায়। খিচুনির চিকিৎসায় এটি তাই অনবদ্য একটি আবিষ্কার। 

কার্যকারিতা 

  • খিচুনি দূর করে
  • খিচুনিজনিত তলপেটের ব্যথা কমায়
  • অনিদ্রা দূর করে
  • স্নায়বিক উত্তেজনা কমায়
  • মস্তিষ্কের শক্তি বৃদ্ধি করে 

উপাদান 

প্রতিটি ক্যাপসুলে ভেলেরিয়ান মূলের স্ট্যান্ডার্ড নির্যাস আছে ৪৫০ মিগ্রা

সেবনবিধি 

প্রতি রাতে ঘুমানোর ৩০ মিনিট পূর্বে ১/২ টি ক্যাপসুল অথবা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেব্য। 

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া 

কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। 

খিচুনি রোগ কী ভালো হয়?

খিচুনি রোগের কারণ নির্মূল হলেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই রোগ ভালো হয়ে যায়। এবং পরবর্তীতে এই রোগ হওয়ার আশংকা থাকে না। তবে মৃগীরোগের ক্ষেত্রে এর চিকিৎসা দীর্ঘদিন চলতে পারে। এমনকি রোগীর সারাটাজীবন চিকিৎসাধীন অবস্থায় থাকতে হতে পারে। তাই মৃগী রোগের চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ নিউরোলজিস্ট এর শরণাপন্ন হওয়া উচিত।

শিশুর খিচুনি কেন হয়?

শিশুদের ক্ষেত্রে রোগপ্রতিরোধ কম থাকায় যদি জ্বর হয় তাহলে খিচুনি হওয়ার শংকা বেড়ে যায়। বিশেষ করে ৬ মাস থেকে ৬ বছরের শিশুদের ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা বেশি হতে দেখা যায়। তাই শিশুদের খিচুনি রোগ থেকে বাঁচাতে পুষ্টিকর খাবারের দিকে বেশি মনোযোগ দিন। 

খিচুনি রোগের লক্ষণ কী?

খিচুনি রোগের লক্ষণ হতে পারে অনেকগুলো। সবচেয়ে সাধারণ সে লক্ষণ তা হলো মানবশরীরের অস্বাভাবিক আচরণ। চলুন জেনে নিই খিচুনি রোগের সর্বোপরি সব লক্ষণগুলো। 

  • শুরুতে শরীরের একটি অংশে খিচুনি শুরু হওয়া ও ক্রমেই তা অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়া
  • শরীর নমনীয় হয়ে সামনের দিকে ঢলে পড়া
  • শরীর শক্ত হয়ে যাওয়া ও ভারসাম্য হারানো
  • কাজে অমনোযোগী হওয়া
  • জ্ঞান হারানো
  • বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শরীর ঝাঁকি দিয়ে ওঠা
  • হাত পা ও মুখের অস্বাভাবিক নড়াচড়া শুরু হওয়া
  • হাতে কিছু জিনিস থাকলে তা হঠাৎ ছিটকে পড়া
  • শরীরের কোনো অংশে ভিন্ন ধরণের অনুভূতি হওয়া ইত্যাদি 

পরিশেষ 

সুতরাং খিচুনি রোগের ওষুধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে নিশ্চয় আপনারা পূর্ণাঙ্গ ধারণা পেলেন। এই রোগ থেকে বাঁচতে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার বিকল্প নেই। এছাড়াও ডাক্তারের পরামর্শ মতে জীবন চলতে ভিজিট করুন হেলদি-স্পোর্টস এর ওয়েবসাইটে। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top