খুশকি দূর করার উপায়

চুলের খুশকি দূর করার উপায় জেনে নিন!

খুশকি দূর করার উপায় জানতে হলে আমাদের প্রথমে জানা দরকার খুশকি আসলে কি? কারণ এই খুশকি দূর করতে গিয়ে মাথার বেশিরভাগ চুল দূর করে ফেলেছে এমন লোক অনেক পাওয়া যাবে। তাই খুশকি সম্পর্কে ভাল ধারণা থাকলে এটি দূর করা আমদের জন্য অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে।

চুলপড়া প্রতিরোধক (পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া মুক্ত) মেডিসিন কিনুন আমাদের শপ থেকে!

আজ আমরা খুশকি কি, কেন হয়, এবং কিভাবে এটি দূর করা যায় সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।

খুশকি কি?

খুশকি আসলে আমাদের মাথার ত্বকের মৃত কোষ। যেটি সাদা বা হালকা হলুদ বর্ণের হয়ে মাথা থেকে ঝরে পড়ে। মাথা ছাড়াও বাহুমূল, উরুসন্ধিসহ শরীরের অন্যান্য অংশেও খুশকি হতে পারে। এটি মাথার ত্বকের উপর প্রভাব বিস্তার করে চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে, চুল ঝরে যেতে পারে এবং আপনাকে দৈনন্দিন জীবনজাপনে অনেকসময় বিব্রতকর অবস্থার মধ্যে ফেলতে পারে। 

এর তীব্রতা ব্যাক্তি ভেদে ভিন্ন হতে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে সহজেই ভাল হয়ে যায় আবার অনেকের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরণের চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে। যদিও মাথার ত্বক প্রতিস্থাপন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া, কিন্তু খুশকি হলে এই প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত ঘটতে থাকে এবং আকারে বড় হয়ে দৃশ্যমান আকারে ঝরে পড়তে থাকে।  

খুশকি কেন হয়?

শুষ্ক ত্বক খুশকির একটি অন্যতম কারণ। শুষ্ক ত্বকের ছোট ছোট মৃত কোষগুলি খুশকি তৈরিতে সহায়তা করে। ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড ইনভেস্টিগেটিভ ডার্মাটোলজির জার্নাল অনুসারে এটি সাধারণত বয়ঃসন্ধি থেকে শুরু হয় এবং ৫০ বছর বয়সের পর থেকে সাধারণত হ্রাস পেতে শুরু করে। চুলপড়া প্রতিরোধক ও চুল নতুন গজানোর ওষুধ কিনুন আমাদের শপ থেকে!

মাথার খুলির ত্বকে এক ধরণের ছত্রাক বা ইস্ট জীবাণুর সংক্রমণের ফলে খুশকি হতে পারে। সেবাসিয়াস নাকম তেলগ্রন্থি থেকে তৈলাক্ত উপাদান অনেক বেশি পরিমাণে নিঃসৃত হলেও খুশকি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। আবার অনেকে বংশগত কারণেও খুশকির আক্রমণের ঝুঁকিতে থাকেন। 

>> চুল পড়া রোধে ১৫ টি ঘরোয়া উপায়…

অনেকের চোখের পাপড়ি বা ভ্রুতে সাদা সাদা খুশকি এর মত দেখা যায় যেটি বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়ার আক্রমণের ফলে হতে পারে। তবে মাথায় খুশকি থাকলে এই সমস্ত জায়গায় এমনিতেও খুশকি হতে পারে। এই ক্ষেত্রে মাথার সমস্যা দূর হলে এমনিতেই অন্যান্য জায়গার সমস্যাগুলোও ভাল হয়ে যায়। 

খুশকি দূর করার উপায়

এটি একটি সাধারণ সমস্যা এবং কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খুব সহজেই দূর করা যায়। এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিবেচ্য বিষয় কোনভাবেই যেন চুলের ক্ষতি না হয় বা চুল ঝরে না যায়। তাই আজ আমরা শুধুমাত্র প্রকৃতিকভাবে কিছু কার্যকর খুশকি দূর করার উপায় নিয়ে আলোচন করবো। 

চুলে তেল না দিয়ে দীর্ঘসময় মাথা শুষ্ক রাখুন:

অনেকের ধারণা মাথায় তেল দিলে খুশকি কমে যায়। তবে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী মাথায় তেল প্রয়োগের ফলে খুশকি বেড়ে যায়। একটি শুষ্ক, চুলকানিযুক্ত মাথার তালুতে তেল মালিশ বেশ সুখকর একটি অনুভুতি বয়ে আনতে পারে। তবে যখন এটি দীর্ঘসময় মাথায় থাকবে তখন নিশ্চিতভাবে খুশকি বেড়ে যাবে। 

>> ক্যাস্টর অয়েল কি? এটি চুলে ব্যাবহারের নিয়ম জেনে নিন!

অ্যালোভেরা জেল:

আমরা জানি অ্যালোভেরা একটি রসালো উদ্ভিদ এবং এর ঔষধী গুনাবলীর জন্য বেশ পরিচিত। এর পাতার জেল খুশকি কমাতে যথেষ্ট সহায়ক, কারণ এতে রয়েছে বেশ কিছু বায়োঅ্যাক্টিভ যৌগ, অ্যামিনো অ্যাসিড ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এটি প্রাকৃতিভাকে খুশকি দূর করার উপায়গুলোর মধ্যে অন্যতম।

অ্যালোভেরা জেল ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখে এবং ক্ষত নিরাময়ে সহায়তা করে। তাছাড়া ত্বকের প্রদাহ কমিয়ে খুশকির লক্ষণগুলো নিরাময় করে। এতে আরো রয়েছে অ্যান্টিফাঙ্গাল ও অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান, যেগুলোও খুশকি কমাতে হয়ায়তা করে। 

বেকিং সোডা:

সোডিয়াম বাইকার্বোনেটকে আমরা বেকিং সোডা হিসাবে চিনি। এটি মাথার ত্বকের অতিরিক্ত মৃত কোষ এবং তেল সরিয়ে খুশকি দূর করতে সহায়তা করে। তাছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট খুশকি সৃষ্টির জন্য দ্বায়ী ছত্রাকের বিরুদ্ধে লড়াই করে। 

তবে এতে পিএইচ লেভেল অনেক বেশি থাকে, যেটি অতিরিক্ত ব্যবহার মাথার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে এবং ত্বকে জ্বালার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। তাই অত্যন্ত কার্যকর এই উপাদানটি ব্যবহার করতে চাইলে পরিমিতভাবে ব্যবহার করুন।

জিংক:

এটি একটি খনিজ উপাদান যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উন্নত করে এবং কোষের বৃদ্দিতে সহায়তা করে। এর অভাবেও খুশকি হতে পারে যেটি 2016 সালের একটি গবেষণায় প্রমাণিত। তাছাড়া গুরুতর জিংকের ঘাটতি চুলের ও ত্বকের ক্ষতির কারণ হতে পারে। 

তাই জিংক সমৃদ্ধ খাবারগুলো নিয়মিত খাদ্যতালিকায় রাখুন যেমন বিভিন্ন মাংস, ডিম, ডাল, বাদাম, বিভিন্ন শস্যদানা ইত্যাদি। 

ভিনেগার:

খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাক ও ব্যাক্টেরিয়া মেরে সাফ করার মাধ্যমে ভিনেগার খুশকি সমস্যা দূর করে। তাছাড়া মাথার চুলকানি ও শুষ্ক ত্বকের চিকিৎসায়ও এটি বেশ কার্যকর। চুল ধোয়ার আধা ঘন্টা আগে সাদা ভিনেগার এবং পানি সমপরিমাণ মিশিয়ে মাথায় প্রয়োগ করুন। খুশকি চলে যাবে।

রসুন:

এই পয়েন্টটা দেখে কি অবাক হলেন? ভাবছেন রসুন কিভাবে খুশকি দূর করার উপায় হতে পারে? রসুনের অনেক ঔষধী গুণ রয়েছে, যার মধ্যে এটি হলো প্রাকৃতিকভাবে ছত্রাক বিরোধী। খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাকগুলোকে দূর করার মাধ্যমে এটি খুশকি নিয়ন্ত্রণ করে। 

এর জন্য কিছু রসুনের কোয়া এবং দুই একটি লবঙ্গ একসঙ্গে বেঁটে নিন। যদি গন্ধ খুব বেশি তীব্র মনে হয় তাহলে সাথে সামান্য আদা এবং মধু মিশিয়ে মাথায় প্রয়োগ করুন। এটি আপনাকে কার্যকর ফলাফল দেবে। 

চা গাছের তেল:

বেশিরভাগ মানুষের কাছে এই চা গাছের তেল শব্দটা কমন পড়বে না, কারণ এটি আমাদের খুব বেশি পরিচিত বা ব্যবহৃত জিনিস না। তবে বাজারে এটি পাওয়া যায় এবং ব্রণ বা খুশকি সৃষ্টিকারী ছত্রাক দমনে এটি দুর্দন্ত কাজ করে। 

আপনি চুল ধোয়ার জন্য যে রেগুলার শ্যাম্পু ব্যবহার করেন তাতে এক বা দুই চামচ এই তেল যোগ করে মাথায় ব্যবাহর করুন। খুশকি দূর করার উপায় নিয়ে আপনাকে ভাবতে হবে না, আপনাকে ছেড়ে যেতে খুশকি বাধ্য হবে।

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন  আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড:

এটি আমাদের শরীরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে থাকে, যেমন রক্তচাপ হ্রাস করে, ভাল এইচডিএল এর মাত্রা বাড়ায়, হৃদপিণ্ড এবং মন্তিস্ক সুস্থ রাখে ইত্যাদি। পাশাপাশি এর অভাবে খুশকি, শুষ্ক ত্বক এবং ভঙ্গুর নখের মত সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে। 

ওমেগা-3 রয়েছে এমন খাবারগুলো নিয়মিত খাবার চেষ্টা করুন। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য প্রতিদিন প্রায় 1.1 থেকে 1.6 গ্রাম ওমেগা-3 ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করা প্রয়োজন। এই উপাদানটি পরিমিত পরিমাণ গ্রহণ করার মাধ্যমে খুশকি থেকে দূরে থাকতে পারবেন।

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে ক্লিক করুন!

শেষ কথা

খুশকি একটি সাধারণ সমস্যা এবং আমরা অনেকেই খুশকি দূর করার উপায় সম্পর্কে জানতে চাই। এখনে বেশ কয়েকটি প্রাকৃতিক উপায় বলা হয়েছে যেগুলো নিরাপদ এবং কার্যকর। এগুলো ফলো করার মাধ্যমে আপনি নিশ্চিতভাবে খুশকিমুক্ত হতে পারবেন বলে আশা করি।

>> চুলের যত্নে আরও পড়ুন…

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top