খেজুরের রস

খেজুরের রস এর উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম জানুন!

খেজুরের রস নিয়ে কিছু কথা : শীতের কুয়াশা ঢাকা ভোরে খেজুরের রস যেন অমৃত। যদিও শহরাঞ্চলে এটি পাওয়া বিরল তবে গ্রামেগঞ্জে খেজুরের রস ছাড়া শীতকাল যেন বেরস। 

ভিডিও তে খেজুরের রস এর উপকারিতা ও খাওয়ার নিয়ম দেখতে এখানে ক্লিক করুন!

খেজুরের রসে আছে প্রচুর এনার্জি। এটি আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারি। বিভিন্ন শারীরিক দূর্বলতা কাটাতে খেজুরের রসের জুড়ি নেই। এছাড়াও এর অসাধারণ কিছু পুষ্টিগুণ আমাদের শরীরের নানান উপকারিতা সাধন করে।

তাহলে খেজুরের রস সম্পর্কে বেশকিছু অজানা তথ্য জানতে সঙ্গে থাকুন শেষ পর্যন্ত। 

খেজুরের রস এর পুষ্টিগুণ ও উপকারিতা

খেজুরের রস স্বাদে যেমন অমৃত, পুষ্টিগুণেও ভরপুর। এটি খেলে আপনি শারীরিক নানারকম উপকারিতা পাবেন। একনজর দেখে নিন খেজুরের গুণের পুষ্টিগুণ ও নানাবিধ উপকারিতা:

প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক

গাছ থেকে নামানো খাঁটি খেজুরের রসে থাকে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, মিনারেল, খনিজ, গ্লুকোজ, শর্করা, সহজপাচ্য ফ্যাট ইত্যাদি। এতসব পুষ্টিগুণসম্পন্ন এই পানীয়কে তাই বলা হয় প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক। এটি খেলে শরীর হয়ে ওঠে চনমনে এবং কর্মক্ষম। 

আ্যানিমিয়ার প্রতিরোধ

খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে খেজুরের গুড় বানানো হয়। রস থেকে তৈরি খেজুরের গুড়ে থাকে প্রচুর পরিমাণে আয়রণ ও খনিজ। এটি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ঠিক রাখে। তাই আপনি যদি খেজুরের রস দিয়ে বানানো গুড় খান তবে আপনার আ্যানিমিয়া রোগের ঝুঁকি কমবে। 

অবসন্নতা দূর ও পেশিশক্তির বৃদ্ধি 

খেজুরের রসে থাকা সোডিয়াম ও পটাসিয়াম পেশিশক্তিকে বৃদ্ধি করে। এবং এর ম্যাগনেসিয়াম শারীরিক অবসন্নতা দূর করে কর্মস্পৃহা ফিরিয়ে আনে। তাই আলসেমি ভাব দূর করে শরীরকে চাঙ্গা করতে খেজুরের রস খেতে পারেন। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি 

প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকায় খেজুরের রস শরীর গরম করতে সক্ষম। এছাড়াও এটি শীতের দিনে শরীর গরম রাখে এবং সর্দি কাশির হাত থেকে বাঁচায়। 

ওজন কমায়

খেজুরের রসে বিদ্যমান পটাশিয়াম শরীরের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। তাই ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখতে খেজুরের রস খেতে পারেন। 

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়

খেজুরের রস থেকে উৎপাদিত গুড় খেলে নিদ্রাহীনতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। বিভিন্ন বিশেষজ্ঞদের মতে খেজুরের গুড় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে দারুণ ভূমিকা পালন করে। 

হজমে সহায়ক 

খেজুরের রসের হজম ক্ষমতা বৃদ্ধির এক আশ্চর্য ক্ষমতা আছে। এটি আমাদের শরীরের হজমে সহায়ক উৎসেচকগুলির কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাই প্রতিদিন খাওয়ার পর খেজুরের রস দিয়ে তৈরি গুড় খেতে পারেন।

খেজুরের রস কীভাবে খাবেন

মূলত খেজুরের রস গাছ থেকে নামিয়ে সরাসরি খাওয়া যায় আবার এতে ভিজিয়ে বিভিন্ন পিঠাপুলিও খেতে পারেন। দুধকুলি, চুইপিঠা, নকশিপিঠা, পুলিপিঠা, পায়েস ইত্যাদি খেজুরের রসে ভিজিয়ে খাওয়া যেতে পারে। 

যেহেতু খোলা আকাশের নীচে সারারাত ধরে এটি জমে, তাই খাওয়ার আগে এটি জ্বাল দিয়ে খেতে পারেন। খেজুরের রস জ্বাল দিয়ে খাওয়াটা স্বাস্থ্যকর। এছাড়াও এটি জ্বাল দিয়ে বিভিন্ন আইটেম বানানো যায় যেমন রস-চিতই, রস-পাকন, রসের গোলাপ পিঠা ইত্যাদি। 

খেজুরের রস কখন খাবেন

খেজুরের রস খাওয়ার নিয়ম হলো ভোরে। সারারাতের জমে থাকা রস সকাল সকাল খেলেই উপকার বেশি পাওয়া যায়। 

দিনে খেজুরের রস খাওয়া উচিত নয় কারণ দিনের আলোয় এতে গাজন প্রক্রিয়া শুরু হয়। রসে অম্লত্বের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় এবং এর স্বাদ নষ্ট হয়। দেরিতে খেজুরের রস খেলে বমি ও পেট খারাপের সম্ভাবনাও থাকে।  

তাই ভোরবেলা খেজুরের রস খাওয়ায় উত্তম। তবে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে সারারাতের জমে থাকা রসে যেন কোনো পাখি বা বাদুড় মুখ না দেয়। 

খেজুরের রস কেন খাবেন

খেজুরের রসকে বলা হয় প্রাকৃতিক এনার্জি ড্রিংক। শর্করা, গ্লুকোজ, ও প্রোটিনের সমন্বয়ে গঠিত এটি এমন একটি পানীয় যা আপনার শারীরিক দূর্বলতা দূর করে কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। 

এটি একাধারে যেমন স্বুস্বাদু তেমন খনিজসহ বিভিন্ন পুষ্টিগুণে ভরপুর। শরীরের আলস্যভাব দূর করতে এটি বেশ উপকারি। এছাড়াও রক্তস্বল্পতা ও কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতেও খেজুরের রস বেশ সহায়ক। তাই শীতে যখনই সুযোগ পাবেন খেজুরের রস খাওয়ার চেষ্টা করুন।

 সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন  আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

পরিশেষ 

আমাদের দেশে শীতকালে খেজুরের রস পাওয়া যায়৷ যেহেতু একটি মৌসুমেই এটি পাওয়া যায় তাই এর উপকারিতাগুলি থেকে বঞ্চিত না হবার চেষ্টা করুন। খেজুরের রসের স্বাদ ও পুষ্টিগুণ অবশ্যই আপনাকে পরিতৃপ্ত করবে।

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top