চিকন হওয়ার উপায় কি

চিকন হওয়ার উপায় কি? চলুন জেনে নিই কিছু কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি!

চিকন হওয়ার উপায় কি? শরীরের উচ্চতা অনুযায়ী অতিরিক্ত ওজন আমাদের চিরাচরিত একটি সমস্যা। বর্তমান সময়ে অতিরিক্ত পরিমাণে ফাস্টফুড খাওয়া এবং শারীরিক কসরত জাতীয় কোন কাজে নিজেকে নিযুক্ত না করা শরীর অকারণে মোটা হয়ে যাওয়ার একটি অন্যতম কারণ। অকারণে মোটা হয়ে যাওয়া আমাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথে বিভিন্ন ধরনের রোগের সৃষ্টি করে থাকে।

মোটা শরীর চিকন করার জন্য বিভিন্ন ধরনের ঔষধ এর প্রচলন রয়েছে যা নিয়মিত সেবনে আপনি আপনার মোটা শরীরকে কোন রকম কষ্ট ছাড়াই চিকন করতে পারবেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে এ সকল ঔষধ মানুষের শরীরে দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে যা আমার একটা নির্দিষ্ট সময় পরে গিয়ে অনুভব করতে পারি।

আজ আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি  প্রয়োজনের তুলনায় শরীর অতিরিক্ত মোটা হওয়ার কারণ গুলি, এবং মোটা শরীর চিকন করার জন্য বিশেষ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি এবং টিপস। চলুন শুরু করি। 

শরীর মোটা হওয়ার মূল কারণ গুলি কি হতে পারে?

বর্তমান সময়ে নিজেকে শারীরিকভাবে সুন্দর রাখাটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলোর মধ্যে একটি। আমরা অনেক বেশি চিন্তায় মগ্ন থাকি যদি আমরা প্রয়োজনের তুলনায় মোটা হয়ে যেতে থাকি। অনেক কিছু প্রশ্ন আসতে পারে যে বিভিন্ন ধরনের ডায়েট চার্ট অনুসরণ করার পরেও ওজন স্বাভাবিক মাত্রায় থাকছে না অর্থাৎ আমরা দিনে দিনে মোটা হয়ে চলেছি। 

এক্ষেত্রে আমাদের মনে রাখা উচিত যে শরীরকে মোটা থেকে চিকন করার চেষ্টা থেকে অব্যাহতি থেকে প্রথমে শরীর মোটা হয়ে যাওয়ার মূল কারণ গুলো কে খুঁজে বের করা। চলুন জেনে নেয়া যাক অকারণে শরীর হঠাৎ করে চিকন থেকে মোটা হয়ে যাওয়ার কারণ কি কি হতে পারে-

১. অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

অস্বাস্থ্যকর এবং অনিয়মিত খাদ্যাভাস শরীর হঠাৎ করেই মোটা করে দিতে পারে। আমরা অনেক সময় মনে করি যে সকালে একটা না না খেয়ে থাকলে হয়তো শরীরের মেদ চর্বি জমতে পারে না। 

কিন্তু আসলে আমরা বুঝতেই পারিনা যে এটি আমাদের শরীরে অনেক বড় সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। একটা না অনেক সময় খাবার না খাওয়ার কারণে আমাদের শরীরের মেটাবলিজম কমে যায়। আর এতে করে আমাদের শরীর হঠাৎ করে মোটা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে।

২. হরমোনের সমস্যা

শারীরিক হরমোনাল সমস্যার কারণে অনেক সময় আমাদের শরীর চিকন থেকে হঠাৎ করে মোটা হয়ে যায়। কিন্তু এই সমস্যাটি দীর্ঘস্থায়ী হওয়া না পর্যন্ত আমরা আসলে হঠাৎ করেই বুঝতে পারিনা। বিভিন্ন কারণে আমাদের শরীরে হরমোনের ভারসাম্য দাম কমতে পারে। আর ঠিক তখনই আমরা হঠাৎ করে মোটা হয়ে যাই। 

৩. দ্রুত খাবার খাওয়া

নিজের ব্যস্ততার কারণে আমরা অনেক ক্ষেত্রে অনেক তাড়াতাড়ি খাবার খাওয়ার চেষ্টা করি। কিন্তু আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বুঝতে পারি না যে তাড়াহুড়ো করে খাবার খাওয়ার জন্য আমরা আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি খাবার খেয়ে ফেলি। অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে ক্যালরির পরিমাণ বেড়ে যায় আর সেজন্যই আমরা হঠাৎ করে চিকন থেকে মোটা হয়ে যেতে পারি। 

৪. কাজ না করা

শরীরকে সুস্থ রাখতে হলে শারীরিক পরিশ্রম অতীব জরুরী। আমরা সকলেই জানি যে যারা আসলে কায়িক পরিশ্রম করেন অথবা কেটেভান তারা শারীরিকভাবে অনেক অসুস্থ থাকেন অন্য মানুষের তুলনায়।

নিজেদের কর্মব্যস্ততার কারণে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের শারীরিক পরিশ্রম গুলো করা হয়ে ওঠেনা, বিশেষ করে আমরা যারা বিভিন্ন অফিসে কাজ করে থাকি। শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণে আমরা বিভিন্ন সময়ে হঠাৎ করে মোটা হয়ে যাই।  

৫. মাতৃত্বকালীন সময়

যারা নতুন মা হয়েছেন তারা হঠাৎ করে মোটা হয়ে যেতে পারেন। মাতৃত্বকালীন সময়ে স্বভাবতই উন্মাদ আবার একটি প্রয়োজনীয় তুলনায় বেশি খেতে হয় এবং এছাড়াও নিজের শারীরিক অনেক হরমোনের তারতম্যের কারণে অনেক সময় শরীর মোটা হয়ে যেতে থাকে। 

৬. শরীরে পানি জমা

শারীরিক বিভিন্ন সমস্যার কারণে আমাদের শরীরে অনেক সময় বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের পানি জমা শুরু করেন যেটাকে আমরা মূলত ইডিমা হিসেবে জেনে থাকি। এই সমস্যাগুলি মূলত আমাদের শরীরে বিভিন্ন রোগের কারণে হয়ে থাকে যেমন ডায়াবেটিস বা কিডনির সমস্যা।

৭. ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

আমাদের শরীরের বিভিন্ন ধরনের অসুখ দেখা দেয়ার পর আমরা যে ওষুধগুলো সেবন করে থাকি বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা যায় যে এই ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কারণে আমাদের শরীরে পানি জমতে পারে বা হরমোনের তারতম্য ঘটতে পারে। শরীর স্বভাবতই একটু মোটা হয়ে যেতে পারে।

৮. মানসিক সমস্যা

বিভিন্ন পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন সময়ে আমরা মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হতে পারি যেমন ইনসোমনিয়া। ইনসোমনিয়া এমন একটি রোগ যার কারণে আমাদের স্বাভাবিক ঘুমের ব্যাঘাত হয়। আর দীর্ঘদিন এভাবে যদি ঘুমের ব্যাঘাত হতে থাকে তাহলে শরীর মোটা হয়ে যায়। 

খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন এবং ডায়েট চার্ট

চিকন হওয়ার উপায় হিসেবে খাদ্য তালিকায় কম চর্বিযুক্ত খাবার, কম ক্যালরিযুক্ত খাবার রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চলুন দেখে নিই আপনার ডায়েট চার্ট এ কি ধরনের পরিবর্তন আনতে হবে:

  • মোটা শরীর চিকন করার জন্য অবশ্যই আপনাকে আপনার খাদ্য তালিকায় পরিবর্তন হতে হবে এবং একটি সুষম ডায়েট চার্ট অনুসরণ করতে হবে। প্রতিদিন প্রত্যেক খাবার মেনুতে আপনাকে অবশ্যই খেয়াল করতে হবে যেমন নির্বাচনী যুক্ত খাবার আপনি না খেয়ে ফেলেন। 
  • কারণ চর্বিযুক্ত খাবার আপনার শরীরের অতিরিক্ত মেদ জমা হবে এবং আপনাকে মোটা করে দেবে। খাবার খাওয়া সহ আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া হয় কিন্তু আপনার শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি যেন সহজে পূরণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। 
  •  চিনি ছাড়া লেবুর শরবত হালকা গরম পানির সাথে মিশিয়ে প্রতিনিয়ত খাবার অভ্যাস করতে হবে। এতে করে আপনার শরীরে অতিরিক্ত চর্বি কমে যাবে এবং আপনি খুব সহজে চিকন হতে পারবেন। 
  • অবশ্যই প্রতিদিনের খাবার তালিকা থেকে আপনাকে গরুর মাংস, মাখন, এবং ঘি জাতীয় খাবার বর্জন করতে হবে। কারণ এই খাবারগুলো আপনার শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি এবং মেদ জমতে সাহায্য করবে এবং আপনি অনায়াসে মোটা হয়ে যাবেন। 
  • এছাড়াও সকল প্রকার ড্রিংকস এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার আপনাকে বর্জন করতে হবে। কারণ মিষ্টি এবং সকল প্রকার ড্রিংকস আপনাকে সহজে মোটা করে দেবে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন  আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

চিকন হওয়ার উপায় – নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস

মোটা শরীর চিকন করার জন্য নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। হাপি বিভিন্ন ধরনের ব্যায়ামের অভ্যাস করে নিতে পারেন: 

  • আপনি যদি ব্যায়ামের মাধ্যমে খুব তাড়াতাড়ি ভালো ফলাফল পেতে চান তাহলে নিকটস্থ কোনো ভালো ব্যক্তি যিনি প্রতিনিয়ত যাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। একজন ভালো এবং অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক এর কাছ থেকে আপনার শারীরিক গঠন এবং মোটার প্রকৃতি অনুযায়ী আপনি বেশ কিছু ব্যায়াম শিখে নিতে পারেন এবং তা প্রতিনিয়ত অভ্যাস করতে পারেন।
  • এছাড়াও আপনি যদি সাঁতার কাটতে পছন্দ করেন তাহলে প্রতিনিয়ত পুকুরের বা নদীতে বেশ কিছু সময় ধরে সাঁতার কাটার অভ্যাস করতে পারেন। কারণ সাঁতার হচ্ছে একটি অন্যতম শারীরিক ব্যায়াম যা মানুষকে সুঠাম দেহের অধিকারী করে তোলে।

ছেলেদের ও মেয়েদের চিকন হওয়ার উপায়

বর্তমান সময়ে যদি আমরা হঠাৎ করে মোটা শরীরের অধিকারী হয়ে থাকি তখন চিকন হওয়ার জন্য একটি ডায়েট চার্ট অবলম্বন করে থাকি এবং পাশাপাশি আমরা অনেক সময় না খেয়ে থাকার চেষ্টা করি। সত্যি বিষয় হচ্ছে এটা, না খেয়ে থাকা কখনোই শরীরের পক্ষে ভালো নয় এবং এটি আপনাকে কখনো চিকন হতে সাহায্য করবে না। 

উপরিউক্ত নিয়ম গুলি যথাযথ ভাবে পালনের মাধ্যমে ছেলে মেয়ে উভয়েই তাদের মোটা শরীরকে চিকন করতে পারেন কারণ নিয়মাবলী উভয়ের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।

পরিশেষ

চিকন হওয়ার উপায় কি? একটানা না খেয়ে থাকা কখনোই সুষম ডায়েট এর অন্তর্ভুক্ত হতে পারে না বা মোটা শরীরকে চিকন করতে পারে না। উপরিউক্ত সঠিক এবং যথাযথ নিয়মাবলী পালনের মাধ্যমে মোটা শরীরকে অনায়াসেই চিকন করা সম্ভব। তাই সঠিক পদ্ধতি মেনে চলুন এবং নিজেকে সুস্থ রাখুন।


আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে ক্লিক করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top