জিতলো আর্জেন্টিনা

লিওনেল মেসির স্বপ্নপূরণ; টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে হারিয়ে নিজেেদের তৃতীয় বিশ্বকাপ শিরোপা জিতলো আর্জেন্টিনা!

বহু প্রতিক্ষার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বকাপের ফাইনালে কাতারের লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সের বিপক্ষে মাঠে নামে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। আর্জেন্টিনার ৩৬ বছরের শিরোপা খরা কাঁটাতে ২০১৪ সালের পর আরও একবার বিশ্বকাপে ফাইনালের মঞ্চে নিজেদেরকে প্রমাণের সুযোগ পায় লিওনেল মেসির দল।

অন্যদিকে, টানা দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়ের লক্ষ্যে ২০১৮ বিশ্বকাপ ফাইনালের পর আরও একবার বিশ্বকাপের ফাইনালে মাঠে নামে দিদিয়ের দেশম্সের শিষ্যরা। শিরোপা জয়ের জন্য নিজের প্রিয় ৪-৪-২ ফর্ম্যাশনে দল সাজান আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি। যেখানে, কোচ হিসেবে নিজের দ্বিতীয় ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে ৪-২-৩-১ ফর্ম্যাশনে আর্জেন্টিনার বিরুদ্ধে কৌশল সাজান দিদিয়ের দেশম্স।

প্রথমার্ধ: খেলা শুরুর প্রথম থেকেই বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সকে চাপে রেখে খেলতে থাকে আর্জেন্টিনা। কিছু কিছু সুযোগ তৈরি করার চেষ্টাও করে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা। ম্যাচের বয়স যখন ২০ মিনিট তখন চাপে থেকে ভুল করে ডি-বক্সে ভিতর ফাউল করে বসে ফ্রান্স। ফলে, পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে ১-০ গোলে এগিয়ে নিয়ে যান ফুটবল জাদুকর লিওনেল মেসি।

এরপর, ম্যাচের ৩৬ মিনিটে আবারও অ্যাটাকে অ্যালেক্সিস ম্যাক এ্যালিস্টারের বাড়ানো সুন্দর বলে গোল করে দলকে ২-০ গোলের লিড এনে দেন অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া। প্রথমার্ধে কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেনি ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ফলে, ২-০ গোলের লিডে প্রথমার্ধ শেষ করে আলবিসেলেস্তেরা। 

দ্বিতীয়ার্ধ : দুই গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধ শুরু করা দিদিয়ের দেশম্সের শিষ্যরা গোল করতে মরিয়া হয়ে উঠৈ। কিন্তু, একের পর এক আক্রমণ করেও কোনো গোলের দেখা পাচ্ছিল না ফ্রান্স। অপরদিকে, প্রথমার্ধের ন্যায় দ্বিতীয়ার্ধেও কিছু কিছু সুযোগ তৈরির মাধ্যমে গোল করার চেষ্টা করে আর্জেন্টাইনরা। তাও, কোনো গোলের দেখা পায়নি আলবিসেলেস্তেরা। ম্যাচের ৮০ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি পেয়ে গোল করে ব্যবধান কমান পিএসজি তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে।

এরপর, পুনরায় ম্যাচ শুরু হতে না হতেই ৯৭ সেকেন্ডের মধ্যে আবারও গোল করে ২-২ ব্যবধানে দলকে সমতায় আনেন কিলিয়ান এমবাপ্পে। খেলায় সমতা আসার পর একরকম ছন্দ ছাড়া হয়ে যায় আর্জেন্টাইনরা যেখানে ম্যাচে আরও কয়েকটা সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করেও সফল হয়নি লেস ব্লুসরা। ফলে, ২-২ গোলের সমতায় নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষ করে দুই দল। 

অতিরিক্ত সময়: ম্যাচের নির্ধারিত সময়ের খেলা শেষে অতিরিক্ত সময়ে এসে চাপে ছিল দুই দল। আক্রমণ পাল্টা আক্রমণে জমে উঠা এক্সট্রা টাইমের প্রথমার্ধে লিডের দেখা পায়নি কোনো দলই। এক্সট্রা টাইমের দ্বিতীয় হাফের ১০৯ মিনিটে গোল করে আর্জেন্টিনাকে ৩-২ গোলে আবারও এগিয়ে নিয়ে যান লিওনেল মেসি।

এরপর, ম্যাচ শেষ হওয়ার ২ মিনিট আগে পেনাল্টি পেয়ে গোল করে ম্যাচে নিজের হ্যাট্রিক পূরণ করেন কিলিয়ান এমবাপ্পে এবং দলকে আনেন সমতায়। এরপর, ৩-৩ ব্যবধানে অতিরিক্ত সময়ের খেলাও শেষ হলে ম্যাচ আগাই পেনাল্টি শুটআউটে।


পেনাল্টি: উভয় দলের প্রথম স্পট কিকে দলের হয়ে গোল করতে ভুল করেননি দুই দলের দুই তারকা ফুটবলার কিলিয়ান এমবাপ্পে ও লিওনেল মেসি। কিন্তু, ফ্রান্সের হয়ে ২য় ও ৩য় পেনাল্টিতে আর্জেন্টাইন গোলকিপার এমিলিয়ানো মার্টিনেজের দৃঢ়তায় পেনাল্টি মিস করে বসেন কিংসলে কোমেন ও অরেলিয়ান শুয়ামেনি।

যেখানে, আর্জেন্টিনার হয়ে একই সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে ভুল করেননি পাওলো দিবালা ও লিয়োন্দ্র পেরেদেস। এরপর, ৪র্থ পেনাল্টিতে লেস ব্লুসদের পক্ষে রান্দাল কোলো মুয়ানি গোল করলেও তার পরই নেওয়া গঞ্জালো মন্টিয়েলের শট কোনো বাঁধা ছাড়াই গোল হলে টাইব্রেকারে ফ্রান্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে  ৩৬ বছর পর আরও একবার বিশ্বকাপের ছোঁয়া পায় লা আলবিসেলেস্তেরা।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top