নাটকীয় জয়

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে নাটকীয় জয় পেল বাংলাদেশ!

আইসিসি টি টুয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপে আজ বাংলাদেশ তার তৃতীয় ম্যাচে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয়। আগের একটি ম্যাচে জয় ও একটি হার নিয়ে এই ম্যাচ জেতা বেশ গুরুত্বপূর্ন কোয়ালিফাইং এর জন্য। 

দ্য গাবা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে জয়ে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার।

শান্ত  অসাধারণ শুরু করলেও সৌম্য সরকার শূন্য রান নিয়েই সাজঘরে ফিরে। সৌম্য ফেরার পরে লিটন দাস এসে শান্তর সাথে দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। তবে লিটন দাসও খুব বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেনি। ১২ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে মুজারাবানির বলে টেনডাই চাটারার  হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে। 

এরপর শান্তকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তৃতীয় উইকেটে শান্ত ও সাকিব আস্তে ধীরে এগিয়ে নিতে থাকে। কিন্তু তাদের জুটিও স্থায়ী হয়নি। শেন উইলিয়ামসের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্লেসিং মুজারাবানির হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরতে হয়। ২০ বলে ২৩ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে সাকিব আল হাসান।

এক প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও অপর প্রান্ত থেকে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল নাজমুল হোসেন শান্ত। তাকে ঠেকাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে জিম্বাবুয়ের বোলাররা। শেষ পর্যন্ত ১৭তম ওভারে সিকান্দার রাজা শান্তকে সাজঘরে ফেরাতে সক্ষম হয়। একটি ছক্কা ও সাতটি চারে ৫৫ বলে ৭১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে নাজমুল হোসেন শান্ত। 

শান্ত আউট হওয়ার পরে দলকে টানতে থাকে আফিফ হোসেন। একেবারে ইনিংসের শেষ বলে তার উইকেটের পতন হয়। ১৯ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে রিচার্ড নাগ্রাভার বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে আউট হয় আফিফ। আফিফের উইকেট পতনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হয়।

এতে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৫০ রান। জিম্বাবুয়ের পক্ষে সর্বোচ্চ দুইটি করে উইকেট শিকার করেন রিচার্ড নাগ্রভা ও ব্লেসিং মুজারাবানি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন সিকান্দার রাজা ও শেন উইলিয়ামস। 

১৫১ রানের টার্গেট নিয়ে জিম্বাবুয়ের পক্ষে ওপেনিং জুটিতে আসে ওয়েসলি মাদেভেরে ও ক্রেইগ আরভাইন। ইনিংসের প্রথম ওভারে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেয় তাসকিন আহমেদ। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলে ওয়েসলিকে ৪ রানে তুলে নিলে অসাধারণ শুরু পায় বাংলাদেশ।

তাসকিন ধারাবাহিকতা ধরে রেখে তৃতীয় ওভারে ক্রেইগ আরভিনকে তুলে নেয়। এরপর মিল্টন সুম্বাও টিকতে পারেনি। ১৫ বলে ৮ রানের ইনিংস খেলে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে সাকিব আল হাসানের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে সুম্বা। 

এরপর শেন উইলিয়ামস নেমে দলকে টানতে শুরু করে। তবে তাকে সঙ্গ দেওয়ার মতো কাউকে পায়নি। সিকান্দার রাজা শূন্য রান নিয়ে সাজঘরে ফিরে। এরপর রেজিস চাকাভা উইলিয়ামসকে একটু সঙ্গ দেয়। ১৯ বলে ১৫ রানের সংগ্রহ নিয়ে সেও তাসকিনের শিকার হয়ে বিদায় নেয়।

অবশেষে ১৯তম ওভারে উইলিয়ামসকে রান আউট করে সাকিব আল হাসান। শেষ ওভারে বলে যায় মোসাদ্দেক হোসেন। চার ও ছক্কায় পরিস্থিতি উত্তেজনাপূর্ন করে ফেলে রিচার্ড নাগ্রাভা। পঞ্চম বলে তার উইকেট পড়লে মাঠে আসে ব্লেসিং মুজারাআানি।

শেষ বলে জিম্বাবুয়ের প্রয়োজন ৫ রান।ব্লেসিংকে স্ট্যাম্পিং করে আউট করলে জয় নিয়ে সকলে মাঠ ছাড়ে। তখন রিভিউ থেকে দেখা যায় উইকেটের আগে থেকেই বল ধরেছে। নো বল!!!  এতে আরেকটি সুযোগ পায় জিম্বাবুয়ে। এক বলে প্রয়োজন চার রান।

মোসাদ্দেক আরেকটি ডট দিয়ে জয় এনে দেয়। এতে ৩ রানে জয় পায় বাংলাদেশ। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ ১৪৭ রান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করে তাসকিন আহমেদ। দুটি করে উইকেট পেয়েছে মোসাদ্দেক হোসেন ও মুস্তাফিজুর রহমান। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর 

বাংলাদেশ – ১৫০/৭ (২০) 

নাজমুল হোসেন শান্ত ৭১

আফিফ হোসেন ২৯

সাকিব আল হাসান ২৩

ব্লেসিং মুজারাবানি ২/১৩

রিচার্ড নাগ্রভা ২/২৪

জিম্বাবুয়ে – ১৪৭/৮ (২০) 

শেন উইলিয়ামস ৬৪

রায়ান বার্ল ২৭

রেজিস চাকাভা ১৫

তাসকিন আহমেদ ৩/১৯

মুস্তাফিজুর রহমান ২/১৫

মোসাদ্দেক হোসেন ২/৩৪

ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন তাসকিন আহমেদ। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top