পা ফাটা দূর করার উপায়

পা ফাটা দূর করার সহজ উপায় সমূহ জেনে নিন!

পা ফাটা দূর করার উপায় হিসেবে অনেকেই বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। তবে কিছুতেই যেন কিছু হয় না। শীতকালে পা ফাটা যেন একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়। শুধু শীতকাল নয়, অনেকের সারাবছরই পা ফাটতে দেখা যায়। 

অতএব পা ফাটা যেমন পায়ের সৌন্দর্য নষ্ট করে তেমনি ব্যক্তিত্ব। তাই আজ আমরা পা ফাটা দূর করার উপায় স্বরূপ কিছু পদ্ধতি আলোচনা করবো। 

পা ফাটা দূর করার উপায় 

শীতকালে ত্বক দ্রুত শুষ্ক হয়ে যায়। কারণ বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকে। ফলে হাত পা ফাটতে থাকে। নীচে পা ফাটা দূর করার উপায় হিসেবে কার্যকরী কিছু পদ্ধতি আলোচনা করা হলো। যা এপ্লাই করলে আপনি ঘরে বসে ফল পাবেন। 

লেবু ও ভ্যাসলিন

ত্বক কোমল ও মসৃণ রাখতে ভ্যাসলিন খুবই উপকারী। ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ধরে রাখতে ভ্যাসলিন সহায়তা করে। এবং লেবুতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি। এটি ত্বকে পুষ্টি যোগায়। ফেটে যাওয়া ত্বকের জন্য লেবু তাই খুবই উপকারী। 

  • এক টেবিল চামচ লেবুর রস আর এক টেবিল চামচ ভ্যাসলিন ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। 
  • ভালো ফল পেতে এর সাথে এক চামচ অলিভ অয়েল নিতে পারেন। 
  • এবার সবগুলো উপাদান ভালোভাবে মিক্সড করুন। 
  • পায়ের ফাটা স্থানে এবার আলতো করে লাগিয়ে দিন। 
  • প্রতিদিন রাতে শোয়ার পূর্বে ভালভাবে ম্যাসাজ করে লাগিয়ে নিন। 
  • এই পদ্ধতিটি দুই সপ্তাহ আপনার পায়ে এপ্লাই করলে দেখবেন আপনার পা ফাটা সম্পুর্ণরুপে সেরে গেছে। 

পেঁয়াজের রস এবং গোলাপ জল

দ্রত পা ফাটা সারতে পেঁয়াজের রস কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। কারণ, পেঁয়াজে আছে ভিটামিন-এ, সি এবং ই। ত্বকের সুরক্ষায় এই উপদানগুলো অত্যন্ত উপকারী। 

  • হালকা কুসুম গরম পানিতে গোলাপ জল মিশিয়ে আপনার পা দুটি দশ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। 
  • এতে আপনার পায়ের ত্বক নরম হবে।
  • এরপর পা দুটি শুকনো কাপড় দিয়ে ভালভাবে মুছে নিন। 
  • এখন একটা পেঁয়াজ কে ব্লেন্ড করে পেষ্ট তৈরী করুণ। 
  • তবে মনে রাখতে হবে পেঁয়াজে কিন্তু পানি ব্যবহার করা যাবে না। 
  • এই পেষ্ট আপনার পায়ের ফাটা স্থানে আঙ্গুল দিয়ে ভালভাবে লাগিয়ে রাখুন।
  • প্রতিদিন রাতে শোয়ার পূর্বে এই পদ্ধতি একটানা তিন-চার দিন ব্যবহার করলে আপনার পা ফাটা দ্রুত সেরে যাবে। 

চালের গুড়া ও মধু

ত্বকের যত্নে চালের গুড়া ও মধু অত্যন্ত উপকারী। পা ফাটা দূর করার উপায় হিসেবে চালের গুড়া ও মধুর ব্যবহার অত্যন্ত কার্যকর পদ্ধতি। 

  • আধ কাপ চালের গুড়ার সাথে এক চামচ মধু এবং এক চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার মিশিয়ে নিতে হবে। 
  • পা ফাটা যদি বেশি হয় তবে কয়েক ফোটা নারকেল তেল মেশাতে পারেন।
  • এরপর মিশ্রণটি আপনার পায়ের ফাটা স্থানে ভালভাবে ম্যাসাজ করুণ। 
  • এই পদ্ধতিটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন। 

গ্লিসারিন এবং এলোভেরা

প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানে ভরপুর একটি উদ্ভিদ হলো এলোভেরা। এটি ত্বককে সম্পূর্ণরূপে ময়েশ্চারাইজিং করে। ফলে আপনার ত্বক হয় সুন্দর নরম ও তুলতুলে। অপরদিকে গ্লিসারিন পা ফাটা দূর করার উপায় হিসেবে অত্যন্ত সহায়ক। 

  • দুই টেবিল চামচ এলোভেরা ও এক চামচ গ্লিসারিন নিন। চামচ দিয়ে নেড়ে একটি মিশ্রণ তৈরী করুন। 
  • এখন এই মিশ্রণটির মধ্যে দুটি ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে নিন। 
  • এবার ফাটা স্থানে নিয়মিত মাখুন। 
  • এই মিশ্রণটি আপনার হাত পা ফাটা দূর করার পাশাপাশি আপনার ত্বক কে মসৃণ এবং উজ্জ্বল করে তুলবে। 

সরিষার তেল

পা ফাটা রোধ করতে সরিষার তেলের জুড়ি নেই। যুগ যুগ ধরে ত্বকের যত্নে এই  সরিষার তেল ব্যবহার হয়ে আসছে। 

সরিষার তেল ফেটে যাওয়া ত্বকের মধ্যে আদ্রতা ধরে রাখে। এতে করে ত্বকের শুষ্কতা দূর হয়ে পা ফাটা বন্ধ হয়। তাই নিয়মিত পায়ে সরিষার তেল লাগালে পা ফাটা দূর হয়। 

ভিডিওঃ মুখের মেছতা দূর করার কার্যকারি উপায় সমূহ জানুন।

পা ফাটার কারণ

শীতকালে পা ফাটা বেশি লক্ষ্য করা যায়। তবে শীতের রুক্ষ আবহাওয়া ছাড়াও আরো বেশকিছু কারণ এর জন্য দায়ী। 

পা ফাটার কারণগুলো আগে থেকেই জানা থাকলে আমরা এটি এড়াতে পারবো। 

  • শরীরে বিভিন্ন পুষ্টিউপাদান যেমন; আয়রন, ক্যালসিয়াম ও জিংক এর ঘাটতি দেখা দিলে পা ফাটতে পারে। তাই বেশি বেশি সবুজ শাকসবজি খান। 
  • পানিশূন্যতার কারণে অনেক সময় পা ফাটতে দেখা যায়। তাই নিয়মিত ৮/১০ গ্লাস পানি পান করলে পা ফাটা এড়ানো যায়। 
  • অপরিচ্ছন্ন জুতা, অপুষ্টিকর খাবার, দীর্ঘক্ষণ খেলাধূলা ও অযত্নের কারণে পা ফাটতে পারে। তাই নিয়মিত পায়ের যত্ন নিন। 
  • ডায়বেটিস রোগীদের স্নায়ুজনিত সমস্যার কারণে তাদের পায়ের আর্দ্রতা হারাতে পারে। 
  • ভ্যাসলিন বা ময়েশ্চার ব্যবহারের পরে তা ভালোমতো পরিষ্কার না করে পূনরায় লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করলে। 
  • অনেকের আবার জেনেটিক ভাবে পা ফাটতে পারে। 
  • অল্প ফেটে যাওয়া চামড়া জোর করে তুললে পা ফাটার স্থান বড় করে নজরে পড়তে পারে।
সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন  আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

শেষ কথা 

মূলত শুষ্ক আবহাওয়া, অতিরিক্ত শীত, ধুলো বালির প্রকোপ ইত্যাদি কারণে পা ফাটতে পারে। এছাড়াও শরীরে যদি ভিটামিন, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের অভাব হলে হাত পা ফাটতে পারে।  
শীতে বিভিন্ন ধরনের মৌসুমী ফল ও শাক সবজি পাওয়া যায়। পা ফাটা দূর করার উপায় হিসেবে প্রচুর শাক-সবজি ও রসযুক্ত ফলমূল খেতে পারেন। সেই সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top