পিএসএল ৭ম আসরের ফাইনাল

পিএসএল ৭ম আসরের ফাইনালে মোহাম্মদ হাফিজের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের উপর ভর করে মুলতান সুলতান্সকে ৪২ রানে হারিয়ে নিজেদের প্রথম শিরোপা ঘরে তুললো লাহোর কালান্দার্স!

লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে আসরের শেষ ম্যাচে মুলতান সুলতান্সের বিপক্ষে প্রথমেই টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন লাহোর কালান্দার্স অধিনায়ক শাহীন শাহ আফ্রিদি। মুলতান সুলতান্স নিজেদের শিরোপা ধরে রাখার মিশনে নামলেও লাহোর কালান্দার্সের লক্ষ্য ছিল নিজেদের প্রথম শিরোপা ঘরে তোলা। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে, ফিল্ট সল্টের পরিবর্তে লাহোর কালান্দার্স দলে যুক্ত হয় জিশান আশরাফ। মুলতান সুলতান্স দলেও আসে ১টি পরিবর্তন। জনসন চার্লসের বিপরীতে দলে অন্তর্ভুক্ত হয় টিম ডেভিড।

লাহোর কালান্দার্স একাদশ: শাহীন শাহ আফ্রিদি (অধিনায়ক), ফখর জামান, আব্দুল্লাহ শফিক, জিশান আশরাফ, কামরান গুলাম, মোহাম্মদ হাফিজ, হ্যারি ব্রুক, ডেভিড উইসে, সামিত পাটেল, হারিস রউফ, জামান খান।

মুলতান সুলতান্স একাদশ: মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক), শান মাসুদ, আমের আজমত, রাইলি রুশো, আসিফ আফ্রিদি, টিম ডেভিড, খুশদিল শাহ, ডেভিড উইলে, রুম্মান রাইস, ইমরান তাহির, শাহনেওয়াজ দাহনি।

১ম ইনিংস:

ফাইনাল ম্যাচে লাহোর কালান্দার্সের হয়ে ওপেনিং করেন আসরের অন্যতম সেরা এক জুটি ফখর জামান ও আব্দুল্লাহ শফিক। কিন্তু, তাদের দুইজনের এই ওপেনিং জুটি ২ ওভারের বেশি টিকেনি। ৩য় ওভারের দ্বিতীয় বলে শাহনেওয়াজ দাহনির বলে মাত্র ৩ রান করে আউট হন ফখর জামান। 

ফখর জামানের উইকেটের রেশ কাটতে না কাটতেই ৪র্থ ওভারের তৃতীয় বলে ডেভিড উইলের বলে আউট হন জিশান আশরাফ। এরপরের ওভারেই ১৪ রান করে আসিফ আফ্রিদির শিকারে সাজ ঘরে ফেরেন আব্দুল্লাহ শফিক। প্রথম ৫ ওভারের ভিতরেই টপ অর্ডারের ৩ জন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে অনেকটা পিছিয়ে পড়ে লাহোর কালান্দার্স। 

পাওয়ার প্লে শেষে লাহোরের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩ উইকেট হারিয়ে ৪১ রান। এরপর, লাহোর কালান্দার্সের হয়ে হাল ধরেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার মোহাম্মদ হাফিজ ও কামরান গুলাম। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে নিজেদের ৫০ রানের জুটি পূর্ণ করেন এই দুইজন। 

কিন্তু, পরের ওভারের পঞ্চম বলে আসিফ আফ্রিদির তৃতীয় শিকারে পরিণত হন কামরান গুলাম। ফলে, মোহাম্মদ হাফিজের সাথে তার ৫৪ রানের জুটি ভাঙে। কামরান গুলামের পর দলের হয়ে মাঠে নামেন হ্যারি ব্রুক। ১৫তম ওভারের প্রথম বলেই নিজেদের অর্ধশতক তুলে নেন মোহাম্মদ হাফিজ। হ্যারি ব্রুককে সাথে নিয়েও মোহাম্মদ হাফিজের এই দুর্দান্ত ব্যাটিং বজায় ছিল। 

কামরান গুলামের পর ১৭তম ওভারের শেষ বলে হ্যারি ব্রুকের সাথেও ৫০ রানের জুটি করেন হাফিজ। এরপর, মোহাম্মদ হাফিজ ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ৬৯ রান করে আউট হলেও হ্যারি ব্রুক ও ডেভিড উইসের অপরাজিত ৪১ ও ২৮ রানের উপর ভর করে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৮০ রানের সংগ্রহ পায় লাহোর কালান্দার্স। 

লাহোর কালান্দার্সের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৬ বলে ৬৯ রানের এক ইনিংস খেলেন মোহাম্মদ হাফিজ। বোলিংয়ে মুলতান সুলতান্সের হয়ে ৪ ওভার করে ১৯ রান খরচে ৩ উইকেট শিকার করেন আসিফ আফ্রিদি।

২য় ইনিংস:

শিরোপা জয়ের লক্ষ্যে মুলতান সুলতান্সের হয়ে ১৮১ রানের টার্গেট তাড়া করতে নামেন অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান ও শান মাসুদ। আগ্রাসী ভাব নিয়ে এই দুই ওপেনার ব্যাটিং শুরু করলেও ৪র্থ ওভারের শেষ বলে মোহাম্মদ হাফিজের বলে আউট হন মোহাম্মদ রিজওয়ান। 

এরই পরের ওভারের শেষ বলে রান আউটের ফাঁদে পড়ে নিজের উইকেট হারান আরেক ওপেনার শান মাসুদ। পাওয়ার প্লে’র প্রথম ৬ ওভার শেষে মুলতান সুলতান্সের স্কোর হয় ২ উইকেটের বিনিময়ে ৪৫ রান। আগের দুই ব্যাটসম্যানের পথ ধরেই ৭ম ওভারের চতুর্থ বলে নিজের উইকেট হারান আমের আজমত। তিনিও আউট হন মোহাম্মদ হাফিজের বলে। 

এভাবেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে মুলতান সুলতান্স। এরই ধারাবাহিকতায় ৮ম ওভারে মাত্র ১ রান করে আসিফ আফ্রিদি ও ১১তম ওভারের চতুর্থ বলে ১৫ রান করে আউট হন রাইলি রুশো। তাদের উইকেটের পর মুলতান সুলতান্সের হয়ে শেষ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন টিম ডেভিড ও খুশদিল শাহ। ১৭তম ওভারের প্রথম বলে টিম ডেভিড ও চতুর্থ বলে ডেভিড উইলেকে আউট করার মাধ্যমে মুলতান সুলতান্সের হার অনেকটা নিশ্চিত করে দেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। 

এরপর ১৮তম ওভারের দ্বিতীয় বলে ৩২ রান করে খুশদিল শাহ, ১৯তম ওভারের শেষ বলে রুম্মান রাইস এবং শেষ ওভারের তৃতীয় বলে ইমরান তাহির আউট হলে সব উইকেট হারিয়ে ১৩৮ রান করে মুলতান সুলতান্স। এরই মাধ্যমে, গতবারের চ্যাম্পিয়ন মুলতান সুলতান্সকে ৪২ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো শিরোপার দেখা পেল লাহোর কালান্দার্স। মুলতান সুলতান্সের হয়ে ২৩ বলে ৩২ রান করেন খুশদিল শাহ। লাহোর কালান্দার্সের হয়ে ৩ উইকেট শিকার করেছেন শাহীন শাহ আফ্রিদি।

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

ম্যান অফ দ্যা টুর্নামেন্ট: মোহাম্মদ রিজওয়ান (৫৪৬ রান)।

ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ: মোহাম্মদ হাফিজ (৬৯ রান ও ২ উইকেট)।

স্কোর:

লাহোর কালান্দার্স – ১৮০/০৫ (২০ ওভার)

মোহাম্মদ হাফিজ ৬৯(৪৬) ; হ্যারি ব্রুক ৪১*(২২)

আসিফ আফ্রিদি ৩/১৯ (৪ ওভার) ; ডেভিড উইলে ১/৪২ (৪ ওভার)

মুলতান সুলতান্স – ১৩৮/১০ (১৯.৩ ওভার) 

খুশদিল শাহ ৩২(২৩) ; টিম ডেভিড ২৭(১৭)

শাহীন শাহ আফ্রিদি ৩/৩০ (৪ ওভার) ; মোহাম্মদ হাফিজ ২/২৩

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top