ফাইনালিস্ট রংপুর রাইডার্স

বরিশালকে হারিয়ে প্রথম ফাইনালিস্ট রংপুর রাইডার্স! 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের লিগ পর্ব শেষে সেরা চার দল নিয়ে আজ শুরু হয়েছে সেমিফাইনাল। সেমি ফাইনালের প্রথম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছে পয়েন্ট টেবিলের ৩য় ও ৪র্থ পজিশনে থাকা রংপুর রাইডার্স ও ফরচুন বরিশাল। ১৬ পয়েন্ট নিয়ে ৩য় পজিশনে ছিল রংপুর এবং ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ৪র্থ অবস্থানে ছিল ফরচুন বরিশাল। 

মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় রংপুর। বরিশালের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে মেহেদী হাসান মিরাজ ও আন্দ্রে ফ্লেচার।

ফ্লেচার সাবধানতার সাথে ইনিংস শুরু করলেও প্রথম থেকেই আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে মিরাজ। রংপুরের পক্ষে প্রথম সাফল্যের দেখা পায় রাকিবুল হাসান। ৬ষ্ট ওভারে বোলিংয়ে এসে ১৬ বলে ১২ রান করা আন্দ্রে ফ্লেচারকে সাজঘরে ফেরায় রাকিবুল। 

এরপর মিরাজকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। রিয়াদ আস্তে ধীরে শুরু করলেও শীঘ্রই মিরাজের সাথে যোগ দেয়। দুজনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দ্রুত রান এগোতে থাকে বরিশালের। অবশেষে তাদের পার্টনারশিপ থামাতে সক্ষম হয় দাসুন শানাকা। ১৪তম ওভারে বোলিংয়ে এসে রিয়াদকে বোল্ড করলে ১১৫ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বরিশাল।

২১ বলে ৩৪ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে রিয়াদ। এরপর মিরাজও আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি। দাসুন শানাকার পরের ওভারেই স্লো বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে হাসান মাহামুদের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে। ৯ টি চার ও ১ টি ছক্কায় ৪৮ বলে ৬৯ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে বিদায় নেয় মেহেদী হাসান মিরাজ। 

এরপর করিম জানাত ও ভানুকা রাজাপক্ষ নেমে এগিয়ে নিয়ে যায় দলকে। নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেট হারিয়ে ফরচুন বরিশালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭০ রান। ২৫ বলে ৩৩ রান করে অপরাজিত ছিল করিম জানাত। অপর প্রান্তে ১০ বলে ১৭ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল ভানুকা। রংপুরের পক্ষে সর্বোচ্চ দু’টি উইকেট শিকার করে দাসুন শানাকা। 

১৭১ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে রংপুরের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে মোহাম্মদ নাঈম ও রনি তালুকদার। তবে শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। প্রথম ওভারে বলে এসে শূন্য রানে মোহাম্মদ নাঈমকে তুলে নেয় সাকিব। একই সাথে মেডিন ওভার পায়।

এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ক্রিজে আসে শামীম হোসেন। শামীম ধীরেসুস্থে খেললেও আগ্রহী ব্যাটিং শুরু করে রনি তালুকদার। দ্বিতীয় ওভারের পার্টনারশিপ ভাঙতে মরিয়া হয়ে উঠে বরিশাল। অবশেষে সাফল্য পায় কামরুল হাসান রাব্বি। ১৭ বলে ২৯ রান করা রনি তালুকদারকে সাজঘরে ফেরায়। 

এরপর শামীম ও নুরুল হাসান সোহান কিছুক্ষণ দলকে টানলেও তাদের জুটিও বেশিক্ষণ টিকেনি। ১৩ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে সাকিব আল হাসানের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে সোহান। অপর প্রান্তে দ্রুতই হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয় শামীম হোসেন। অপর প্রান্ত থেকে তেমন সাপোর্ট না পেলেও একাই দলকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল শামীম। নিকোলাস পরানও ৮ বলে মাত্র ৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয়। 

অবশেষে ১৭তম ওভারে শামীমকে ফেরাতে সক্ষম হয় খালেদ মাহমুদ। ৪ টি ছক্কা ও ৪ টি চারে ৫১ বলে ৭১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে ডোয়েন প্রিটোরিয়াসের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে শামীম। এরপর ডোয়েন ব্রাভোও মাত্র ২ রানে ফিরলে জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বরিশাল। কিন্তু বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় দাসুন শানাকা ও মাহেদী হাসান।

মাহেদী হাসানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩ বল বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় রংপুর। এতে ৪ উইকেটে জয় পায় রংপুর রাইডার্স। ১২ বলে ১৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল দাসুন শানাকা। অপর প্রান্তে ৪ টি চারে ৯ বলে ১৮ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল মাহেদী হাসান। বরিশালের পক্ষে সাকিব, রাব্বি ও খালেদ আহমেদ দু’টি করে উইকেট শিকার করে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

ফরচুন বরিশাল – ১৭০/৩ (২০) 

মেহেদী হাসান মিরাজ ৬৯ (৪৮)

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ ৩৪ (২১)

করিম জানাত ৩৩ (২৫)

দাসুন শানাকা ২ – ২৩ – ৪

রাকিবুল হাসান ১ – ৩২ – ৪

রংপুর রাইডার্স – ১৭২/৬ (১৯.৩)

শামীম হোসেন ৭১ (৫১)

রনি তালুকদার ২৯ (১৭)

মাহেদী হাসান ১৮ (৯)

খালেদ মাহমুদ ২ – ২৩ – ৪

সাকিব আল হাসান ২ – ২৭ – ৪ 

ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে শামীম হোসেন।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top