বসন্ত রোগ নিরাময়ের উপায়

জেনে নিন বসন্ত রোগ কী, কেন হয় এর লক্ষণ ও প্রতিরোধ! 

বসন্ত রোগ নিরাময়ের উপায় : বসনন্তের নাম শুনলেই ষড়ঋতুর কথা মনে হয়। তবে বসন্ত শুধু ঋতুই নয়, এটি একটা ভয়াবহ রোগও। বসন্ত রোগ হলো ত্বকের একটি ক্ষতিকারক রোগ। এটি হলে ত্বকে ছোট ছোট গুটির সৃষ্টি হয়। 

চলুন জেনে নেওয়া যাক বসন্ত রোগ সম্পর্কে আরো কিছু অজানা তথ্য।

বসন্ত রোগ নিরাময়ের উপায়

বসন্ত রোগ কি?   

মূলত বসন্ত রোগকে চিকেন পক্সও বলা হয়। এর প্রকোপ বসন্ত কালে বেশি দেখা যায় তাই একে বসন্ত রোগ বলা হয়ে থাকে। এটি ভাইরাস জনিত রোগ হওয়াই এক দেহ থেকে অন্য দেহে সহজেই ছড়িয়ে পড়ে।

বসন্ত রোগ কেন হয় 

বসন্ত একটি সংক্রমিত রোগ হওয়াই নানা ভাবে এই রোগ ছড়িয়ে পড়ে। সাধারণত ৭ থেকে ১০ বছরের বাচ্চাদের এই রোগ হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি।

চলুন জেনে নেওয়া যাক বসন্ত রোগের আরো অন্যান্য কিছু কারণ সমূহ:

  1. চিকেনপক্সে আক্রান্ত রোগীর হাঁচি ও কাশি থেকে এই রোগ হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
  1. আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলে। 
  1. আক্রান্ত রোগীর জিনিস ব্যবহার করলে। এমনকি রোগীর নিঃশ্বাসের বাতাসেও এই রোগ ছড়ায়। 
  1. রোগীর কাছাকাছি অবস্থান করলে এই রোগ ছড়িয়ে পড়তে পারে।
  1. সাধারণত ১৪-২১ দিন পর্যন্ত রোগটি শরীরে সুপ্তাবস্থায় থাকে। পরে ধীরে ধীরে উপসর্গ দেখা দেয়। তাই রোগটি শরীরে অবস্থান করছে কি-না তা বুঝে ওঠা অনেক কঠিন হয়ে পরে।

বসন্ত রোগ এর লক্ষণ 

যদি কেউ বসন্ত রোগের টিকা না নিয়ে থাকে তাহলে তার এই রোগ হওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যায়। বসন্ত রোগ থেকে যে অসুস্থতা দেখা দেয় তা সাধারণত 5-7 দিন পর্যন্ত থাকে। এই রোগ শরীরে দেখা দিলে দেহ দূর্বল হয়ে পড়ে এবং আরো নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেয়। জেনে নিন বেরিবেরি রোগ কি? কেন হয়, এর লক্ষণ ও চিকিৎসা!

চলুন দেখা নেওয়া যাক বসন্ত রোগ এর আরো কিছু লক্ষণ সমূহ:

  • সাধারণভাবে র‌্যাশ বেরোনোর ২৪ ঘণ্টা আগে থেকে উপসর্গ দেখা দেয়। যেমন সামান্য জ্বর, মাথাব্যথা, শরীরে মেজমেজে ভাব ইত্যাদি।
  • র‌্যাশ প্রথমে শুরু হয় বুকে ও পিঠে, তারপরে তা হাতে মুখে হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। 
  • ম্যাকিউল বা দানার মতো শুরু হয়ে জলভরা ফোসকা ও পরে পুঁজভরা দানায় রূপান্তরিত হয়। দেহে এগুলো প্রচুর দেখা দেয় এবং তা অনেক চুলকায়।

বসন্ত রোগের প্রতিরোধ 

বসন্ত রোগ ভাইরাস জনিত হওয়ায় এই রোগের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই। তবে সাবধানতা বজায় রেখে এই রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।

চলুন জেনে নেওয়া যাক বসন্ত রোগের প্রতিরোধ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য:

  1. জলবসন্ত হলে বাইরে যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন। 
  1. স্বাভাবিক খাবার ও পুষ্টি জাতীয় খাবার গ্রহন করুন। প্রচুর পানি ও তরল পান করুন।
  1. চুলকানি সারাতে ওষুধ ও মলম লাগানোর জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
  1. অতিরিক্ত চুলকালে আঁচড় লেগে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে। সেইক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করুন। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন পোশাক পরিধান করুন এবং নিয়মিত গোসল করুন।
  1. জলবসন্ত ও একই সঙ্গে অ্যাসপিরিন ওষুধ সেবনের কারণে রি-ই সিনড্রোম নামের মারাত্মক রোগ দেখা দিতে পারে। তাই জ্বরের জন্য অ্যাসপিরিন ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তবে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা যাবে।
  1. বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ প্রয়োগ করুন।
  1. জলবসন্ত প্রতিরোধে দুই ডোজের ‘জলবসন্ত ভ্যাকসিন’ অত্যন্ত কার্যকরি। শিশুরা ১২ থেকে ১৫ মাস বয়সে এই টিকা গ্রহণ করতে পারবে। 
  1. একবার এই রোগ হয়ে গেলে শরীরে যে ইমিউনিটি উৎপত্তি হয় তাতে দ্বিতীয়বার এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা প্রায় থাকে না বললেই চলে।

বসন্ত রোগীর জন্য প্রয়োজনীয় খাবার 

এই রোগ সাধারণত চর্বি জাতীয় খাবার এ বেশি বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। এছাড়াও এই রোগ দেখা দিলে খাবার হজমে সমস্যা হয় ও অরুচি দেখা দেয়। দেহের ইমিউনিটি ক্ষমতা ধীরে ধীরে কমতে থাকে। সেইক্ষেত্রে দেহের শক্তি বজায় রাখার জন্য পুষ্টি জাতীয় খাবার বিকল্প নেই। 

চলুন জেনে নেওয়া যাক বসন্ত রোগীর জন্য কিছু প্রয়োজনীয় খাবার:

পেঁপে 

পেঁপে খাবার হজমে বিশেষ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও নরম ভাতের সঙ্গে পেঁপে ভর্তা খুবই উপকারি। কারণ দেহের শক্তি বৃদ্ধিতে পেঁপের গুরুত্ব অনেক। 

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

ফলমূল 

নানা ধরনের ফলমূল ও ফলের রস দেহের জন্য অনেক উপকারি। বিশেষ করে লেবুর রস এতে রয়েছে ভিটামিন সি। এই ভিটামিন দেহের যেকোনো ঘা ও ক্ষত ঠিক করতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। 

মাছ ও মাংস 

যেকোনো রোগ থেকে মুক্তির জন্য প্রোটিন জাতীয় খাবার খুবই কার্যকরি। এমন জাতীয় মাংস গ্রহণ করতে হবে যাতে চর্বির পরিমাণ কম। 

ডিম

দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য অবশ্যই দৈনিক ১ থেকে ২টা ডিম খেতে হবে। ডিমে পরিমাণ মতো খেলে দেহের ইমিউনিটি ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে। তবে বসন্ত রোগ দেখা দিলে হাঁসের ডিম না খাওয়াই ভালো।

ভিডিওঃ আমাশয় হলে কি খাবার খাওয়া যাবে | আমাশয় রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার

শেষকথা  

বসন্ত রোগ কম বেশি সবারই একবার হয়ে থাকে। এই রোগ সংক্রমিত হওয়াই অতি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে। তবে বসন্ত হলে ভয়ের কোনো কারণ নেই। সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে এটি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সচেতনতা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখলে যেকোনো রোগ দমন করা সম্ভব। 

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!

ট্যাগঃ বসন্ত রোগের ঔষধের নাম, বসন্ত রোগের হোমিও চিকিৎসা, বসন্ত রোগের চিকিৎসা, বসন্ত রোগ কেন হয়

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top