বাংলাদেশের স্কোয়াডে

শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে ২ – ০ ব্যবধানে সিরিজ জয় বাংলাদেশের!

বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের তিন ম্যাচের সিরিজের শেষ ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয় দু’দল। প্রথম ম্যাচ পরিত্যক্ত হওয়াতে দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে ১ – ০ তে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। কান্ট্রি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় আয়ারল্যান্ড। 

বাংলাদেশের স্কোয়াডে বেশ কিছু পরিবর্তন ছিল আজকে। ওয়ানডে ম্যাচে আজ অভিষেক হয় রনি তালুকদার ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর। ইনজুরির কারণে দল থেকে বাদ পড়েছে সাকিব আহ হাসান। 

বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে তামিম ইকবাল ও রনি তালুকদার। বাংলাদেশ শুরুটা খুবই ধীর হয়। দু’জনেই সাবধানতার সাথে ব্যাটিং করছিলেন। মাত্র ১৮ রানেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

১৪ বলে মাত্র ৪ রানের ইনিংস খেলে মার্ক আদিরের বলে লরকান টাকেরের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে রনি তালুকদার। এরপর তামিমকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে নাজমুল হোসেন শান্ত।

শান্ত ও তামিম মিলে বেশ কিছুদূর এগিয়ে নিয়ে যায় বাংলাদেশকে। অবশেষে শান্তকে সাজঘরে ফেরায় আন্দ্রে বার্লবির্নে। ৩২ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে শান্ত। এরপর মাঠে আসে লিটন দাস। তাদের জুটিও বেশ কিছু সময়ের জন্য স্থায়ী হয়। ৩৯ বলে ৩৫ রানের ইনিংস খেলে আন্দ্রে ম্যাকবির্নের বলে। 

গত ম্যাচে অসাধারণ ব্যাটিং করা তৌহিদ হৃদয় কিছুটা আশার আলো দেখালেও খুব একটা সুবিধা করতে পারে নি। ১৬ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলে জর্জ ডকরেলের বলে বোল্ড হয় হৃদয়। অন্য দিকে হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলে তামিম ইকবাল।

হাফ সেঞ্চুরি করে মুশফিকুর রহিমকে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে শুরু করে তামিম। তবে এরপর আর তার ইনিংসকে বেশিদূর এগোতে দেয়নি জর্জ ডকরেল। ৮২ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে তামিম ইকবাল। 

এরপর মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ দলের হাল ধরে। তারা দু’জনে মিলে বেশ অনেকদূর দলকে এগিয়ে নিয়ে যায় বাংলাদেশ। তাদের অসাধারণ জুটি ভাঙে আন্দ্রে ম্যাকবির্নে। ৫৪ বলে ৪৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয় মুশফিক। মুশফিক ফেরার পরের ওভারেই ফিরে মেহেদী হাসান মিরাজ।

৩৯ বলে ৩৭ রানের ইনিংস খেলে মার্ক আদিরের বলে ক্রেইগ ইয়াং-এর হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে মিরাজ। এরপর একে একে উইকেট হারাতে থাকে বাংলাদেশ। মাত্র ১ রানের সংগ্রহ নিয়ে ফিরে হাসান মাহমুদ। হাসান মাহমুদ ফেরার পরের ওভারেই প্রথম বলে শূন্য রানে আউট হয় মুস্তাফিজুর রহমান। একই ওভারের পঞ্চম বলে আউট হয় মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী। ১১ বলে ৮ রানের ইনিংস খেলে মৃত্যুঞ্জয় ফিরলে ৪৮.৫ ওভারেই ১০ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। 

বাংলাদেশের মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৭৪ রান। আয়ারল্যান্ডের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ টি উইকেট শিকার করে মার্ক আদির। দু’টি করে উইকেট শিকার করে আন্দ্রে ম্যাকবির্নে ও জজ ডকরেল। 

২৭৫ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে আয়ারল্যান্ডের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে স্টিফেন ডোহেনি ও পল স্টারলিং। বাংলাদেশের পক্ষে প্রথম উইকেট শিকার করে মুস্তাফিজুর রহমান। ১৬ বলে মাত্র ৪ রান করে মুস্তাফিজের বলে লিটনের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে ডোহেনি। দ্বিতীয় উইকেটে বিশাল প্রতিরোধ গড়ে তোলে পল স্টারলিং ও আন্দ্রে বার্লবির্নে। তাদের অসাধারণ ব্যাটিংয়ে অনেকদূর এগিয়ে যায় আয়ারল্যান্ড। 

অবশেষে তাদের থামাতে সক্ষম হয় ইবাদত হোসেন। ইবাদতের বলে রনি তালুকদারের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে বার্লবির্নে। আন্দ্রে বার্লবার্নি ব্যর্থ হলেও হাফ সেঞ্চুরি পূর্ন করে পল। ৭৩ বলে ৬০ রানের অসাধারণ ইনিৌস খোলে  বিদায় নিতে চান। 

এরপর হ্যারি টেক্টর ও লরকান টাকেরের ব্যাটিং তান্ডবে জয়ের কাছাকাছি চলে যায় আয়ারল্যান্ডের। তবে তখনই ধ্বংস নামে। ৪২তম ওভারে বোলিংয়ে এসে টেক্টরকে সাজঘরো ফেরায় শান্ত। এরপরই নিয়মিত হারে উইকেট হারাতে শুরু করে আয়ারল্যান্ড। মাত্র ১ রানে সাজঘরে ফিরে কুর্টিস ক্যাম্পার। জর্জ ডকরেল আউট হয় ৩ রানে। শেষে মার্ক আদির নেমে ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করে। তবে তাতেও শেষ করা হয়নি। 

নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে আয়ারল্যান্ডের সংগ্রহ দাড়ায় ২৭০ রান। এতে মাত্র ৪ রানে হার হয় আয়ারল্যান্ডের। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ টি উইকেট শিকার করে মুস্তাফিজুর রহমান এবং দু’টি উইকেট শিকার করে হাসান মাহমুদ। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে মুস্তাফিজুর রহমান। প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ হয়েছে নাজমুল হোসেন শান্ত। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

বাংলাদেশ – ২৭৪/১০ (৪৮.৫)

তামিম ইকবাল ৬৯ (৮২)

মুশফিকুর রহিম ৪৫ (৫৪)

মেহেদী হাসান মিরাজ ৩৭ (৩৯)

মার্ক আদির ৪ – ৪০ – ৮.৫

জর্জ ডকরেল ২ – ৩১ – ৭

আন্দ্রে ম্যাকবির্নে ২ – ৩৯ – ৯

আয়ারল্যান্ড – ২৭০/৯ (৫০) 

পল স্টারলিং ৬০ (৭৩)

আন্দ্রে বার্লবির্নে ৫৩ (৭৮)

লরকান টাকের ৫০ (৫৩)

মুস্তাফিজুর রহমান ৪ – ৪৪ – ১০

হাসান মাহমুদ ২ – ৪৪ – ৯ 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top