বাংলাদেশ ফুটবল

কেবল কোচই পরিবর্তন হচ্ছে, উন্নতির দেখা নেই-এবার স্প্যানিশ কাবরেরা!

বাংলাদেশ ফুটবল টিমে কোচ হিসেবে যোগ দিচ্ছেন হাভিয়ের কাবরেরা। ৩৭ বছর বয়সী এই কোচের সাথে ১১ মাসের চুক্তি করেছে বাফুফে। গত ১৫ জানুয়ারি ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন কাবরেরা। 

বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসের অনেক কোচ পরিবর্তন হয়েছে। বিদেশী কোচের সংখ্যাও কম নয়। বাংলাদেশ জাতীয় দলের ২৩তম বিদেশী কোচ হলেন কাবরেরা। এবং তৃতীয় স্প্যানিশ হিসেবে বাংলাদেশ টিমের কোচের দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগের স্প্যানিশ কোচ  ছিলেন গঞ্জালো মোরেনো এবং অস্কার ব্রুজোন। 

কাবরেরা উয়েফার ‘প্রো’ লাইসেন্সধারী কোচ। বাংলাদেশ টিমের দায়িত্ব নেওয়ার আগে স্প্যানিশ লা লিগার ক্লাব আল আলাভাসের দায়িত্বে ছিলেন। তার অধীনে ইন্দোনেশিয়া গিয়ে দুটি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও বাতিল হয়েছে সফর। 

প্রতিবারের মতো এবারও জাঁকজমক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন কোচ পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয় গণমাধ্যমের সাথে। বাফুফে ভবনে ফেডারেশন সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন গণমাধ্যম কাঁপিয়ে বক্তব্য দেন। জানান নতুন কোচে মুগ্ধ তিনি। অন্যান্য কর্তাদের মধ্যেও উচ্ছাসের ঢেউ দেখা যায়। 

২০০৮ সালে প্রথম বাফুফে সভাপতি হন কাজী সালাউদ্দিন। তখন ব্রাজিলিয়ান কোচ এডসন সিলভা ডিডোকে ফুল ছিটিয়ে বাফুফে ভবনে অভ্যর্থনা জানানোর স্মৃতি ভোলার মতো নয়। হুলস্থুল এক কান্ডই হয়েছিল সেদিন। জেমি ডে, লোডভিক ডি ক্রুইফ, ফাবিও লোপেজ, সামির জাকির, অস্টো ফিস্টারসহ আরও অনেককে একই ভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছে বাফুফে। 

বিদেশী কোচ আনতে পারাকেই জয় হিসেবে দেখে বাফুফে। এটার প্রমাণ ভালোভাবেই পাওয়া যায় সংবাদ সম্মেলনে কর্তাদের মুখের হাসির পরিধি দেখে। নতুন কোচ আনতে পারাকেই বিশাল জয় হিসেবে প্রচার করে বাফুফে। প্রতিবারই এমন ভাবে প্রকাশ করে যেন চলে এসেছে কোন দেবদূত যিনি ফিফা র‌্যাংকিং এর তলানিতে থাকা বাংলাদেশ কে নিয়ে আসবে আরেকটু উপরে। কিন্তু বাস্তবে আসলে কিছুই হয়না। 

বাফুফে ও কোচের সম্পর্ক এমনভাবে শুরু হওয়াতে কোচ অনেকদিন থাকবে এমনটাই ধারণা করা যায়। কিন্তু বাস্তবে ঘটে তার উল্টো। দুঃখজনকভাবে কোচের সঙ্গে বাফুফের ‘প্রেমপর্বের’ ইতি ঘটে। খুব দ্রুতই কোচ তাড়াতে উঠেপড়ে লাগে বাফুফের কেউ কেউ এবং প্রয়োগ করা হয় মোক্ষম অস্ত্র – কোচ ছাঁটাই। 

ব্রাজিলিয়ান কোচ ডিডো ঢাকা ছাড়ার দিন বাফুফের কর্মকর্তাদের নিয়ে সমালোচনা করেন। বলেন বাংলাদেশের ফুটবল ধ্বংসের জন্য তারাই দায়ী। 

ফুটবলের আরও খবর

স্বাধীনতার পর এরমধ্যেই ২৩ টি বিদেশী কোচ দেখেছে বাংলাদেশ জাতীয় দল। কোচরা কোথাও চিরস্থায়ী না হলেও কোন দলের উন্নতির জন্য সময় লাগে। কিন্তু অল্পতেই অধৈর্য হয়ে যায় বাফুফে। কোচের কাছে থাকে অনেক অনেক প্রত্যাশা। ফলে প্রত্যাশা অনুযায়ী প্রাপ্তি না মিললে কোচ ছাঁটাই করে নতুন কোঁচের সন্ধানে নামে বাফুফে। এইভাবে অনভিজ্ঞ কোচকেও বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে জাতীয় দলের চেয়ারে। 

এই পর্যন্ত কোন জাতীয় দলের কোচিং করেনি কাবরেরা। এমনকি কোন ক্লাব পর্যায়েই কোচিং করেননি। কিন্তু সরাসরি নিয়োগ পেয়ে গেছেন বাংলাদেশের জাতীয় দলের কোচ হিসেবে। শুধু তাই নয় তাকে নিয়ে অনেক আশাও দেখছেন বাফুফে। কোন জাদু দেখাতে না পারলে হয়তো ছাঁটাই করা হবে তাকেও। 

বাংলাদেশের অন্তর্জাতিক মানের ফুটবলারের সংখ্যা খুবই নগন্য। নেই বললেই চলে। কিন্তু সেদিকে খেয়াল নেই বাফুফের। সেই মানের ফুটবলার তৈরির কোন প্রকার চেষ্টাও দেখা যায়না। 

কোচ ভালো হলেও অল্প কিছু উন্নতিই করতে পারে তার অভিজ্ঞতা দিয়ে কিন্তু সেটার জন্যও সময়ের প্রয়োজন হয়। হাভিয়েরের সঙ্গে বাফুফে চুক্তি করেছে মাত্র ১১ মাসের। তাই এই অল্প সময়ের মধ্যে কতটুকু উন্নতি করতে পারবে সেটা ধারণা করাই যায়। 

ক্লাবগুলো প্রিমিয়ার লিগে বড় অঙ্ক দিয়ে খেলোয়াড় কেনে। তাদেরও ফুটবলার তৈরিতে নজর নেই। প্রিমিয়ার লিগ নিয়েই ব্যস্ত থাকে সবসময়। দেশের মধ্যে কেবল ঢাকার লিগগুলোই হয় ঠিকভাবে। ‘ঢাকা ফুটবল ফেডারেশন’ হিসেবেই রয়ে গেছে বাফুফে। সারা দেশের ফুটবল নিয়ন্ত্রক আর হয়ে উঠতে পারেনি।

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন  আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top