রায়ান বার্লের ঝড়ে দুই ওভার বাকি থাকতেই সিলেটের জয়!

রায়ান বার্লের ঝড়ে দুই ওভার বাকি থাকতেই সিলেটের জয়! 

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ২৮তম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স ও সিলেট স্ট্রাইকার্স। ৮ ম্যাচে ৬ জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে রয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স অন্যদিকে মাত্র দুই ম্যাচ জয় পেয়ে পয়েন্ট টেবিলের নিচে রয়েছে চট্টগ্রাম। 

সিলেট ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে ব্যটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স। চট্টগ্রামের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে উসমান খান ও মেহেদী মারুফ। সিলেটের পক্ষে প্রথম ওভারে বলে আসে মাশরাফি বিন মুর্তজা।

প্রথম বলেই উইকেটের দেখা পায় সিলেট। মাশরাফির বলে জাকির হাসানের হাত বন্দি হয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে উসমান খান। এরপর ক্রিজে আসে আফিফ হোসেন। মারুফ ও আফিফের অসাধারণ পার্টনারশিপে দ্রুত রান এগোতে থাকে। অবশেষে তাদের থামাতে সক্ষম হয় মোহাম্মদ আমির। ২৭ বলে ৩৪ রান করা আফিফ হোসেন এলবিডব্লিউয়ের শিকার হলে পার্টনারশিপ ভাঙে তাদের। 

আফিফ আউট হওয়ার পর হাফ সেঞ্চুরি করা মেহেদী মারুফও আর টিকে থাকতে পারেনি। আফিফ আউট হওয়ার পরের ওভারেই ইমাদ ওয়াসিমের বলে মুশফিকুর রহিমের হাত বন্দি হয়ে ৪০ বলে ৫২ রানের সংগ্রহ নিয়ে সাজঘরে ফিরে মেহেদী মারুফ। একই ওভারের শেষ বলে ম্যাক্স ও’দাঊদকেও সাজঘরে ফেরায় ইমাদ। এরপর শুভাগত হোম নেমেই ঝড়ো ব্যাটিং শুরু করে। 

শুভাগত রান এগিয়ে নিতে থাকলেও অপর প্রান্ত থেকে তেমন সাপোর্ট পায়নি। গত ম্যাচে অসাধারণ পারফরমেন্স করা কুর্টিস ক্যাম্পহের ৪ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়। তারপর ইরফান শুকুরও ৯ রানের ইনিংস খেলে আউট হয়।

অবশেষে শুভাগত হোম ও মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীর ব্যাটিংয়ে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রামের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭৪ রান। ১২ বলে ১৫ রান করে অপরাজিত ছিল মৃত্যুঞ্জয় এবং ২৯ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল শুভাগত হোম। সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ দু’টি উইকেট শিকার করে ইমাদ ওয়াসিম।

১৭৫ রানের লক্ষ্যে তাড়া করে সিলেটের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে নাজমুল হোসেন শান্ত ও তৌহিদ হৃদয়। দু’জনে মিলে ধীরে সুস্থে দলকে টানতে শুরু করে। শান্ত দ্রুত রান তুললেও সঙ্গ দিয়ে যাচ্ছিল হৃদয়। ভিয়াসকান্ত ৯ম ওভারে এসে প্রথম বলেই তৌহিদ হৃদয়কে তুলে নেয়। ১৮ বলে ১৫ রানের সংগ্রহ নিয়ে সাজঘরে ফিরে হৃদয়। এরপর ক্রিজে আসে মুশফিকুর রহিম। মুশফিকও নেমেই আগ্রাসী ভুমিকায় ব্যাটিং শুরু করে। শীঘ্রই হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেয় শান্ত। অবশেষে শান্তকে থামাতে সক্ষম হয় ইরফান শুকুর। নিহাদুজ্জামের বলে এগিয়ে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয় শান্ত। এতে ৪৪ বলে ৬০ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় শান্ত। 

শান্তকে বিদায়ের পরে আরও বড় সমস্যায় পড়ে চট্টগ্রাম। রায়ান বার্ল নেমেই বাউন্ডারি হাঁকাতে শুরু করে। এতে দ্রুতই লক্ষ্যের দিকে এগোতে থাকে সিলেট। বার্লকে থামায় ভিয়াসকান্ত। তবে ততক্ষণে অনেক দেরী হয়ে গেছে। ১৬ বলে ৪১ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে দলকে নিয়ে গেছে জয়ের দার প্রান্তে। 

এরপর বাকি কাজটুকু সারে মুশফিক ও জাকির হাসান। তাদের আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে ২ ওভার বাকি থাকতেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায় সিলেট। এতে ১২ বল বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে বিশাল জয় পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। ২৬ বলে ৪১ রান করে অপরাজিত ছিল মুশফিকুর রহিম। অপর প্রান্তে ৫ বলে ১২ রান করে অপরাজিত ছিল জাকির হোসেন। চট্টগ্রামের পক্ষে দু’টি উইকেট শিকার করে ভিয়াসকান্ত। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর :

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স – ১৭৪/৬ (২০) 

শুভাগত হোম ৫৪ (২৯)

মেহেদী মারুফ ৫২ (৪০) 

আফিফ হোসেন ৩৪ (২৭)

ইমাদ ওয়াসিম ২ – ২৩ – ৪

মোহাম্মদ আমির ১ – ১৭ – ৪

সিলেট স্ট্রাইকার্স – ১৭৭/৩ (১৮)

নাজমুল হোসেন শান্ত ৬০ (৪৪)

রায়ান বার্ল ৪১ (১৬)

মুশফিকুর রহিম ৪১ (২৬)

বিজয়কান্ত ভিয়াসকান্ত ২ – ২৭ – ৪

নিহাদুজ্জামান ১ – ৩৮ – ২

ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top