বিপিএল ড্রাফট

৬০০-এর অধিক প্লেয়ার নিয়ে অনুষ্ঠিত হলো বিপিএল ড্রাফট!

বাংলাদেশের জনপ্রিয় ঘরোয়া ক্রিকেট লিগ বিপিএল-এর নবম আসরের প্লেয়ার ড্রাফট শেষ হয়েছে। দুইশত দেশী প্লেয়ারের পাশপাশি চারশতের অধিক বিদেশী প্লেয়ার নিয়ে ড্রাফট অনুষ্ঠিত হয়। মোট ছয়শত প্লেয়ারের মধ্যে বাছাই করে দল সাজিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো!

ড্রাফট বাদেই দেশের জনপ্রিয় সাত ক্রিকেটার সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে যুক্ত হয়েছেন সাত দলে। সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে মুস্তাফিজুর রহমানকে দলে নিয়েছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস। ঢাকা ডমিনেটরস দলে নিয়েছে ওয়ার্ল্ডকাপে অসাধারণ পারফরমেন্স করা তাসকিন আহমেদকে।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স সরাসরি চুক্তির মাধ্যমে দলে নিয়েছে আফিফ হোসেনকে। ফরচুন বরিশাল চুক্তি করেছে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের সাথে। বিপিএলে সর্বোচ্চ রান দখলে রাখা তামিম ইকবালকে দলে নিয়েছে খুলনা টাইগার্স।

নুরুল হাসান সোহানকে সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছে রংপুর রাইডার্স। জাতীয় দল থেকে অবসর নেওয়া মাশরাফি বিন মুর্তজাকে সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছে সিলেট স্ট্রাইকার্স। 

একটি করে দেশী প্লেয়ারের সাথে সাথে সরাসরি চুক্তিতে কিছু বিদেশী প্লেয়ারকেও দলে ভিড়িয়েছে সকল ফ্র্যাঞ্চাইজি।সরাসরি চুক্তিতে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসে এসেছে মোহাম্মদ রিজওয়ান, হাসান আলী, শাহীন শাহ আফ্রিদি, খুশদিল শাহ, আবরার আহমেদ ও আফগানিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ নবি। 

সরাসরি চুক্তিতে তেমন কোন বিদেশী প্লেয়ার দলে নেয়নি ঢাকা ডমিনেটরস। চামিকা করুনারাত্নে ও দিলশান মনাভিরাকে দলে নিয়েছে সরাসরি চুক্তিতে। 

ঢাকার মতো সরাসরি চুক্তিতে অনীহা দেখিয়েছে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সও। বিশ্ব ফার্নান্দো, আশান প্রিয়ঞ্জন ও কার্টিস ক্যাম্ফারকে দলে নিয়েছে সরাসরি চুক্তিতে। 

সরাসরি চুক্তিকে সর্বোচ্চ কাজে লাগিয়েছে ফরচুন বরিশাল। অর্ধেক দল সরাসরি চুক্তিতেই গঠন করে ফেলেছে ফরচুন বরিশাল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ তারকা ক্রিস গেইল সহ রাখিম কর্নওয়াল, ইব্রাহিম জাদরান, মোহাম্মদ ওয়াসিম, নবীন উল হক, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, কুশন পেরেরা, ইফতেখার আহমেদ ও করিম জানাতসহ সরাসরি চুক্তিতেই দশজন বিদেশী প্লেয়ার দলে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল। 

সরাসরি চুক্তিতে তামিমের পাশপাশি বিদেশী প্লেয়ার আজম খান, নাসিম শাহ, আভিস্কা ফার্নান্ডো ও ওয়াহাব রিয়াজকে দলে নিয়েছে খুলনা টাইগার্স। সরাসরি চুক্তিতে অল্প কিছু প্লেয়ার নিলেও অসাধারণ সব প্লেয়ার কিনছে রংপুর রাইডার্স।

সিকান্দার রাজা, মোহাম্মদ নওয়াজ, হারিস রউফ, পাথুম নিশাঙ্কা ও জেফ্রি ভ্যান্ডারসাই-সহ দলে নিয়েছে শোয়েব মালিককে। সিলেট সরাসরি চুক্তিতে দলে নিয়েছে মোহাম্মদ আমির, থিসারা পেরেরা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, মোহাম্মদ হারিস, রায়ান বার্ল, কলিন অ্যাকারম্যান ও কামিন্দু মেন্ডিসকে। 

ড্রাফটে সবার প্রথমে সুযোগ পায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। প্রথম সুযোগে ওপেনার লিটন দাসকে দলে নেয় কুমিল্লা। এরপর চান্স পেয়ে মুশফিকুর রহিমকে দলে নেয় সিলেট স্ট্রাইকার্স। মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরীকে দলে নেয় চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

মোহাম্মদ মিঠুনকে প্রথম সুযোগে দলে নেয় ঢাকা। রংপুর রাইডার্স তাদের প্রথম ডাকে শেখ মাহেদিকে দলে নিয়েছে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে প্রথম ডাকে দলে নেয় ফরচুন বরিশাল। প্রথম ডাকে ইয়াসির আলী রাব্বিকে দলে নেয় খুলনা এবং দ্বিতীয় ডাকে ইয়াসির আলী রাব্বি। 

এবারে মেহেদী হাসান মিরাজ খেলবে বরিশালের পক্ষে এবং হাসান মাহমুদ থাকবে রংপুরের জার্সিতে। সৌম্য সরকার জড়াবে ঢাকার জার্সি। চট্টগ্রামের দ্বিতীয় ডাকে তারা দলে নিয়েছে শুভাগত হোম। নাজমুল হোসেন শান্ত যোগ দিয়েছে সিলেটে। 

দ্বিতীয় সেটের প্রথম ডাক পায় খুলনা। প্রথম ডাকে তারা দলে নেয় নাসুম আহমেদকে। কুমিল্লা দলে নিয়েছে বাঁহাতি স্পিনার তানভির ইসলামকে। পেসার শরিফুল ইসলাম খেলবেন ঢাকার হয়ে। এবাদত হোসেনকে এবার দেখা যাবে ফরচুন বরিশালের জার্সিতে এবং নাঈম শেখ জড়াবে রংপুর রাইডার্সের জার্সি।

গত মৌসুমের মতো এবারেও চট্টগ্রামের পক্ষে খেলবেন মেহেদী হাসান রানা। সর্বশেষ ডাকে রেজাউল রহমান রাজাকে সংযোজন করেছে সিলেট। দ্বিতীয় সেটের প্রথম ডাকে নাবিল সামাদকে দলে নিয়েছে সিলেট। ইরফান শুক্কুরকে দ্বিতীয় ডাকে দলে নিয়েছে চট্টগ্রাম। রংপুর তাদের পরের ডাকে দলে নেয় রাকিবুল হাসানকে।

এনামুল হক বিজয়কে দলে নিয়েছে ফরচুন বরিশাল। ঢাকার দ্বিতীয় ডাকে বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানিকে দলে নিয়েছে। ইমরুল কায়েস ও নাহিদুল ইসলামকে দলে নিয়েছে যথাক্রমে কুমিল্লা ও খুলনা। 

তৃতীয় সেটে প্রথম ডাক পায় কুমিল্লা। মোহাম্মদ আশিকুজ্জামানকে দলে নেয় কুমিল্লা। শামীম পাটুরিয়াকে দলে নিয়েছে রংপুর রাইডার্স। কামরুল ইসলাম রাব্বিকে দলে নিয়েছে বরিশাল এবং মুনিম শাহরিয়ার খেলবে খুলনার হয়ে। নাসির হোসেনকে এবার দেখা যাবে ঢাকার জার্সিতে।

শেষে ডাক পেয়ে তৌহিদ হৃদয়কে দলে নিয়েছে সিলেট। তার পরের ডাকেই তারা দলে নেয় রুবেল হোসেনকে। এই সেটে ঢাকা দলে টানে পেসার আল আমিনকে। জিয়াউর রহমান ও ফজলে রাব্বিকে দলে নিয়েছে চট্টগ্রাম ও বরিশাল। 

এরপর বিদেশী ক্যাটাগরির ড্রাফটে প্রথম সুযোগ পায় খুলনা। প্রথম ডাকে তারা দলে নেয় দাসুন শানাকাকে। এরপর ঢাকা দলে নেয় শান মাসুদকে। শন উইলিয়ামসকে প্রথম ডাকেই দলে নিয়েছে কুমিল্লা। হায়দার আলীকে এবার দেখা যাবে ফরচুন বরিশাল।

শেষ ডাকে টম মোরেসকে দলে নেয় সিলেট। চাতুরাঙ্গা ডি সিলভাকে দেখা যাবে বরিশালের জার্সিতে। দ্বিতীয় ডাকে আহমেদ শেহজাদকে দলে নিয়েছে ঢাকা। শেষ ডাকে খুলনা নিয়েছে ভ্যান ম্যাককেরেনকে। 

এরপর পঞ্চম সেটে কুমিল্লা দলে নেয় সৈকত আলী ও আবু হায়দার রনিকে। খালেদ আহমেদ ও সাইফ হাসানকে বরিশাল। তাইজুল ইসলাম ও আবু জায়েদ রাহিকে এবার দেখা যাবে চট্টগ্রামের জার্সিতে। পেসার শরিফুল ইসলাম ও প্রিতম কুমারকে দলে নিয়েছে খুলনা।

রনি তালুকদার ও পারভেজ হোসেন ঈমন খেলবে রংপুরের হয়ে। সর্বশেষ ডাকে ঢাকা দলে নিয়েছে অলক কাপালিও মনির হোসেন খানকে। শেষ সেটে আরও কিছু প্লেয়ারকে দলে নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো। 

এবারের আসলে প্রথম বা ‘এ’ ক্যাটাগরির পারিশ্রমিক ধার্য্য করা হয়েছেন ৮০ লক্ষ টাকা। দ্বিতীয় বা ‘বি’ ক্যাটাগরির প্লেয়াররা পারিশ্রমিক পাবে ৫০ লক্ষ টাকা। এছাড়া ‘সি’, ‘ডি’ ও ‘ই’ ক্যাটাগরির প্লেয়ারদের পারিশ্রমিক ধরা হয়েছে যথাক্রমে ৩০,২০, ও ১০ লক্ষ করে। 

বিদেশী ক্রিকেটারদের ক্ষেত্রেও একই ভাবে ক্যাটাগরি ভেদে আলাদা পারিশ্রমিক ধার্য্য করা হয়েছে। ক্যাটাগরি অনুযায়ী পারিশ্রমিক ৮০ হাজার, ৬০ হাজার, ৪০ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার ডলার। 

ড্রাফট শেষে সাতটি দলের পূর্নাঙ্গ স্কোয়াড –

ঢাকা ডমিনেটরস –

তাসকিন আহমেদ, সৌম্য সরকার, মোহাম্মদ মিঠুন, শরিফুল ইসলাম, আল আমিন, নাসির হোসেন, আরাফাত সানি, মনির হোসেন খান, আরিফুল হক, মুক্তার আলী, মিজানুর রহমান, দেলওয়ার হোসেন, সালমান ইরশাদ।

চামিকা করুনারাত্নে, দিলশান মুনাভিরা, শান মাসুদ, অলক কাপালি, উসমান ঘানি।

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানস –

মুস্তাফিজুর রহমান, লিটন দাস, মোসাদ্দেক হোসেন, ইমরুল কায়েস, তানভির ইসলাম, সৈকত আলী, জাকির আল অনিক, মোহাম্মদ আশিকুজ্জামান, আবু হায়দার রনি, মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ, নাঈম হাসান, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন, মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ।

শাহিদ শাহ আফ্রিদি, মোহাম্মদ নবি, হাসান আলী, আবরাব আহমেদ, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ রিজওয়ান, শন উইলিয়ামস, চ্যাডউইক ওয়ান্টন।

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স –

আফিফ হোসেন, শুভাগত হোম, মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, মেহেদী হাসান রানা, মেহেদি মারুফ, ইরফান শুক্কুর, জিয়াউর রহমান, আবু জায়েদ রাহি, তাইজুল ইসলাম, তৌফিক খান তুষার, ফরহাদ রেজা।

কার্টিস ক্যাম্ফার, বিশ্ব ফার্নান্দো, আশান প্রিয়ঞ্জন, ম্যাক্স ও’ডাউড, উম্মুক্ত চাদ।

রংপুর রাইডার্স –

নুরুল হাসান, হাসান মাহমুদ, শেখ মাহেদি, নাইম শেখ, শামীম পাটুয়ারি, রাকিবুল হাসান, রিপন মন্ডল, রনি তালুকদার, রবিউল হক, আলাউদ্দিন বাবু, পারভেজ হোসেন ইমন।

হারিস রউফ, সিকান্দার রাজা, মোহাম্মদ নওয়াজ, পাথুম নিশাঙ্কা, শোয়েব মালিক, জেফ্রি ভ্যান্ডারসাই। 

ফরচুন বরিশাল –

সাকিল আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, এবাদত হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, এনামুল হক বিজয়, ফজলে রাব্বিকামরুল ইসলাম রাব্বি, হায়দার আলী, খালেদ আহমেদ, কাজী অনিক, সাইফ হাসান, সালমান হোসেন, সানজামুল ইসলাম। 

ক্রিস গেইল, রাখিম কর্নওয়াল, ইব্রাহিম জাদরান, মোহাম্মদ ওয়াসিম, নবীন উল হক, ইফতেখার আহমেদ, উসমান কাদির, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, কুশল পেরেরা, করিম জানাত ও চাতুরাঙ্গা ডি সিলভা। 

সিলেট স্ট্রাইকার্স –

মাশরাফি বিন মুর্তজা, মুশফিকুর রহিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, নাবিল সামাদ, রেজাউল রহমান রাজা, তৌহিদ হৃদয়, জাকির হাসান, রুবেল হোসেন, আকরব আলী, নাজমুল ইসলাম অপু, তানজিম হাসান সাকিব, মোহাম্মদ শরিফুল্লাহ। 

মোহাম্মদ আমির, থিসারা পেরেরা, মোহাম্মদ হারিস, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, কামিন্দু মেন্ডিস, রায়ান বার্ল, কলিন অ্যাকারম্যান। 

খুলনা টাইগার্স – 

তামিম ইকবাল, ইয়াসির আলী রাব্বি, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, নাসুম আহমেদ, মুনিম শাহরিয়ার, নাহিদুল ইসলাম, সাব্বির রহমান, শফিকুল ইসলাম, মাহমুদুল হাসান জয়, হাবিবুর রহমান সোহান, প্রিতম কুমার।

আজম খান, নাসিম শাহ, আভিস্কা ফার্নান্ডো, ওয়াহাব রিয়াজ, দাসুন শানাকা, পল ভ্যান ম্যাক্কেরেন।

২০২৩ এর জানুয়ারিতে শুরু হবে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ। প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল ও চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top