বিশ্বকাপ জয়ের পথে

টাইব্রেকারে নেদারল্যান্ডসকে ৪-৩ গোলে হারিয়ে বিশ্বকাপ জয়ের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল আর্জেন্টিনা।

সেমিফাইনালে উঠার রোমাঞ্চকর ম্যাচে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লুসাইল আইকনিক স্টেডিয়ামে মাঠে নামে আলবিসেলেস্তেরা। মহাগুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচে ৩-৫-২ ফরমেশনে দল সাজান আর্জেন্টাইন কোচ লিওনেল স্কালোনি।

অন্যদিকে, বিশ্বকাপ জয়ের দৌড়ে টিকে থাকার জন্য আলবিসেলেস্তেদের বিপক্ষে ৩-৪-১-২ ফরমেশনে নিয়ে দলকে মাঠে নামান ডাচ বস লুই ফন গাল। জয়ের জন্য পূর্ণ শক্তির দল নিয়েই মাঠে নামে দুই দলই।

প্রথমার্ধ : ম্যাচ শুরু হওয়ার পর থেকেই বলের উপর আধিপত্য ধরে রেখে খেলতে থাকে লুই ফন গালের শিষ্যরা। কিন্তু, কোনো আক্রমণের সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। অপরদিকে, দু-এক বার আক্রমণ করে গোল করার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয় আর্জেন্টিনা।

ম্যাচের ৩৫ মিনিটের মাথায় দলপতি লিওনেল মেসির বাড়ানো বলকে কাজে লাগিয়ে নেদারল্যান্ডসের জালে বল জড়ান ডিফেন্ডার নেহুয়েল মলিনা। এরপর, নেদারল্যান্ডস একটা গোলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠলেও ১-০ ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে ডাচরা।

দ্বিতীয়ার্ধ : বিরতি থেকে ফিরে আবারও একই ধারায় আগের মতোই চলতে থাকে ম্যাচ। প্রথমার্ধের ন্যায় আর্জেন্টিনার শক্ত ডিফেন্ডের বিপরীতে দ্বিতীয়ার্ধেও কোনো সুযোগই যেন তৈরী করতে পারছিল না কমলা জার্সিধারীরা। অন্যদিকে, ম্যাচের বয়স যখন ৭১ মিনিট তখন ডাচ ডিফেন্ডার ডেঞ্জেল ডামফ্রাইসের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে বসে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের ৭৩ মিনিটে পাওয়া পেনাল্টিকে সুন্দরভাবে কাজে লাগিয়ে দলকে ২-০ গোলে এগিয়ে নিয়ে যান লিওনেল মেসি।

এরপর, ম্যাচে ফিরে আসতে মরিয়া হয়ে উঠা নেদারল্যান্ডসের হয়ে ম্যাচের ৮৩ মিনিটে স্টিভেন বার্গওয়াইসের সুন্দর এক ক্রসে হেড দিয়ে গোল করে ব্যবধান কমান মেম্পিস ডিপের বদলি হিসেবে নামা উইট ওয়েগহোর্স্ট। তারপর থেকেই টানটান উত্তেজনায় মেতে উঠে ম্যাচ এবং আরেক গোল করার জন্য কিছু সুন্দর সুযোগ তৈরি করে।

ম্যাচের অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ সময়ে এসে টিউন কোপমেইনারসের ফ্রি কিকের বাড়ানো বলে আবারও গোল করে সমতায় এনে দলকে উল্লাসে বাসান উইট ওয়েগহোর্স্ট। ফলে, ২-২ গোলের সমতায় শেষ হয় সম্পূর্ণ ম্যাচ। 

এক্সট্রা টাইম ও পেনাল্টি : নির্ধারিত সময়ের ম্যাচ শেষ হওয়ার পর অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে দুই দলই সমানভাবে সুযোগ তৈরি করার চেষ্টা করলেও গোল করতে পারেনি কোনো দলই। অতিরিক্ত সময়ের দ্বিতীয়ার্ধেও দুই দলই একের পর এক দূর্দান্ত আক্রমণ করে।

কিন্তু, দুই দলের দুই গোলরক্ষক এমি মার্টিনেজ এবং নেদারল্যান্ডস কিপার আন্দ্রিয়েস নোপার্টের জন্য কোনো দলই আর গোলের দেখা পায়নি। ফলে, ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করতে টাইব্রেকারে যায় দুই দল। 

প্রথম পেনাল্টিতে এসেই দূর্দান্ত সেভ দেন আর্জেন্টাইন কিপার এমি। যেখানে, আর্জেন্টিনার হয়ে প্রথম পেনাল্টিতে গোল করেন অধিনায়ক লিওনেল মেসি। দ্বিতীয় পেনাল্টিও সেভ করে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিয়ে যান আর্জেন্টাইন গোলকিপার এমি মার্টিনেজ।

দ্বিতীয় পেনাল্টি থেকে আর্জেন্টিনার হয়ে গোল করতে ভুল করেননি লিওন্দ্রো পেরেদেস। তৃতীয় পেনাল্টিতে গোল করতে সফল হন টিউন কোপমেইনারস। চতুর্থ পেনাল্টিতেও সফল নেদারল্যান্ডসের উইট ওয়েগহোর্স্ট।

যেখানে, আর্জেন্টিনার হয়ে চতুর্থ পেনাল্টিতে গোল করতে ব্যর্থ হন এঞ্জো ফার্নান্দেজ। পঞ্চম পেনাল্টিতে নেদারল্যান্সের হয়ে লুক ডি ইয়ং গোল করলেও তারপরের পেনাল্টিতে নেওয়া লাউতারো মার্টিনেজের শট গোলের দেখা পেলে ২০১৪ বিশ্বকাপের পর আরও একবার সেমিফাইনালে যায় আর্জেন্টিনা।  

ফলে, বিশ্বকাপে ফাইনালে উঠার লড়াইয়ে সেমিফাইনালে আগামী ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত ১:০০ টায় আলবিসেলেস্তেদের প্রতিপক্ষ ব্রাজিলকে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠা ক্রোয়েশিয়া।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top