সর্দি থেকে মুক্তির উপায় 

সর্দি থেকে মুক্তির ১৮টি উপায় । আরও জানুন সর্দি হলে কী খাওয়া উচিৎ!

সর্দি থেকে মুক্তির উপায় কী জানতে চান ? তাহলে আজকের পুরো আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়তে থাকুন। সর্দি থেকে মুক্তি দেয় আদা চা। আদা কুঁচি কুঁচি করে কেটে গরম পানি বা চা পাতার সাথে ফুটিয়ে নিয়মিত পান করুন। এতে সর্দি বা কাশির সমস্যা একেবারে দূর হয়ে যাবে। 

এছাড়াও সর্দি থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে বেশ কিছু ঘরোয়া প্রতিকার আছে যা আপনাকে সর্দি থেকে মুক্তি দিতে পারে

সর্দি থেকে মুক্তির উপায় 

যে কোন বয়সের মানুষ সর্দি কাশিতে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এ সময় হাঁচি, নাক বন্ধ, গলা ব্যথা, মাথা ভার হয়ে থাকা, নাক দিয়ে পানি ঝরা,কাশি ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে অনেকেই নানা ঔষধ সেবন করে থাকেন। ঔষধ ছাড়াও সর্দি কাশি দূর করার ঘরোয়া উপায় আছে। 

জেনে নিন সর্দি থেকে মুক্তির ১০ টি কার্যকর ঘরোয়া পদ্ধতি। 

১. লবণ পানি

সর্দি থেকে মুক্তির উপায় গুলোর মধ্যে লবণ পানি একটি কার্যকর পদ্ধতি। এতে সর্দি, কাশি এবং বুকের কফ সহজেই দূর হয়। কারন লবণ শ্বাসযন্ত্র থেকে কফ দূর করতে সাহায্য করে। এক্ষেত্রে এক গ্লাস হালকা কুসুম গরম পানির মধ্যে এক চা চামচ লবন মিশিয়ে সারাদিনে তিন থেকে চার বার গার্গল করুন। 

২. মধু এবং লেবু

শীতে সর্দি থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে লেবু এবং মধুর মিশ্রণ অত্যন্ত উপকারী। এক গ্লাস কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ মধু এবং এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে পান করুন সর্দি কাশি দূর হয়ে যাবে। 

৩. ফুটন্ত পানির ভাব

ফুটন্ত পানির মধ্যে কয়েক ফোটা টি ট্রি অয়েল মিশিয়ে সেই পানির তাপ নিঃশ্বাসের সাথে নিলে আপনার বন্ধ নাক খুলে যাবে। নাকের সর্দি কমানোর উপায় হিসেবে ফুটন্ত পানির ভাব অত্যন্ত কার্যকর। 

৪. হলুদ এবং দুধ

হলুদে রয়েছে এ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল এবং এ্যান্টি-ভাইরাল উপাদান যা সহজেই সংক্রমণ রোধ করতে পারে। সর্দি থেকে মুক্তির উপায় গুলোর মধ্যে হলুদ এবং দুধ একটি কার্যকর পদ্ধতি। এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে এক চা চামচ হলুদের গুড়ো মিশিয়ে পান করুন সর্দি কাশির কষ্ট দূর হবে। 

৫. আদা ও তুলসীপাতা 

পাঁচ থেকে ছয়টি তুলসীপাতা এবং পরিমাণ মতো আদা কুঁচি করে এক কাপ পরিমাণ পানিতে ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে অর্ধেক হয়ে আসলে নামিয়ে রাখুন। তারপর এই পানি অন্তত দুই থেকে তিন বার পান করুন। এতে সর্দি কাশি কমে আসবে। 

৬. চিকেন স্যুপ

সর্দি কাশি থেকে রেহাই পেতে চিকেন স্যুপ খান। যে কোন সবজির সাথে মুরগির স্যুপ আপনার শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করবে।

৭. নিজেকে হাইড্রেট রাখুন

সর্দিতে আক্রান্ত হলে নিজেকে হাইড্রেট রাখুন। এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন এবং সেই সাথে স্যুপ, ফলের রস, অথবা হালকা গরম পানিতে পরিমাণ মতো মধু মিশিয়ে খান এতে সর্দি থেকে অনেকটা মুক্তি পাবেন। 

৮. রসুন

রসুনে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা সর্দি কাশি সারতে বিশেষ  ভুমিকা পালন করে। কাঁচা রসুনের তিন থেকে চারটি কোয়া ঘিয়ে ভেজে গরম গরম খেয়ে নিন উপকার পাবেন। নাকের সর্দি দূর করার ঔষধ  হিসেবে রসুন বেশ উপকারী। 

৯. পেঁয়াজ 

পরিমাণ মতো পেঁয়াজের রস, এক টেবিল চামচ মধু, লেবুর রস এবং পরিমাণ মতো পানি একত্রে মিশিয়ে ফুটিয়ে নিন। এই পানি উষ্ণ অবস্থায় সারাদিনে তিন থেকে চার বার পান করুন সর্দি কাশি কমে যাবে। 

১০. অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার 

এক কাপ কুসুম গরম পানিতে দুই চা চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার এবং এক চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এ মিশ্রণটি দুই থেকে তিন দিন পান করুন। নিয়মিত ৮ থেকে ১০ দিন পান করুন সর্দি থেকে উপশম পাবেন। 

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন  আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

বাচ্চাদের সর্দি থেকে মুক্তির উপায় 

শিশুদের সর্দি কাশির সমস্যা লেগেই থাকে। আর একবার সর্দি কাশি হলে সহজে সারতে চায়না। শিশুদের এই সর্দি কাশি সারানোর ঘরোয়া কিছু উপায় জেনে নিন। 

১. সর্দি-কাশি দূর করতে সরিষার তেল শিশুদের জন্য বেশ উপকারী। সরিষার তেলে দুই থেকে তিনটি রসুনের কোয়া এবং কালো জিরার বীজ দিয়ে গরম করে সেই তেল শিশুদের বুকে মালিশ করুন এবং পায়ের পাতা, পিঠ ও হাতের তালুতে লাগান।

২. সর্দি-কাশি সারতে আদার রসের সাথে মধু মিশিয়ে সারাদিনে শিশুদের দুই থেকে তিন বার খাওয়ান।

৩. সর্দি সারতে জায়ফল শিশুদের জন্য বেশ উপকারী। এক চিমটি জায়ফল পাউডার কয়েক চামচ দুধের সাথে মিশিয়ে ফোটান। এরপর ঠান্ডা করে সেই দুধ শিশুকে খাওয়ান।

৪. শিশুদের সর্দি-কাশি দূর করতে নারকেল তেলের সঙ্গে সামান্য পরিমাণ কর্পূর মিশিয়ে গরম করুন। হালকা কুসুম গরম থাকা অবস্থায় সেই তেল শিশুদের বুকে, পিঠে এবং গলায় মালিশ করুন। 

এলার্জি সর্দি থেকে মুক্তির উপায় 

বর্তমানে যে কোনো মৌসুমে সর্দি বা কাশির সমস্যা দেখা দেয়। এ্যালার্জির সমস্যা রয়েছে যাদের তারা বিপদে পড়েন বেশি। এ সময় বুকে কফ জমা, মাথা ব্যথা, বুকে ব্যথা, নাকে অসয্য চুলকানি, নাকে ব্যথা, একনাগারে হাঁচি,শ্বাসকষ্ট ইত্যাদি সমস্যা দেখা দেয়। 

  • এ্যালার্জি সর্দি থেকে মুক্তি পেতে সর্বপ্রথম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। যে সমস্ত কারণে এ্যালার্জি হয় তা এড়িয়ে চলতে হবে। 
  • এলার্জি হওয়ার প্রধান কারন হলো ধুলোবালি। এছাড়াও গাড়ির কালো ধোঁয়া, পুরনো বই, পত্রিকা, ফুলের রেনু, ঠান্ডা লাগা, পশু-পাখির লোম ইত্যাদি থেকেও এ্যালার্জি হয়ে থাকে। 
  • এ্যালার্জি সর্দি থেকে মুক্তি পেতে ধুলোবালি এড়িয়ে চলতে হবে। বিশেষ করে যারা এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয় তারা রাস্তায় চলাচলের সময় এমনকি কাজের জায়গায় মাস্ক ব্যবহার করা উচিৎ। 
  • এছাড়াও কিছু খাবার আছে, যেমন- চিংড়ি মাছ, হাঁসের ডিম, বোয়াল মাছ, বেগুন, ইলিশ মাছ ইত্যাদি থেকে এ্যালার্জি হতে পারে। সুতরাং এ্যালার্জিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে। পুরনো লেপ, তোষক পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে সেই সাথে বাড়ি ঘরের আসবাব পত্রও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। 

[বিঃ দ্রঃ এ্যালার্জি সর্দি থেকে মুক্তি পেতে এন্টি-হিস্টামিন এবং স্টেরয়েড জাতীয় নাকের স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন। (ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত গ্রহণযোগ্য নয়)]

সর্দি হলে কী খাওয়া উচিৎ 

নিয়মিত শরীরচর্চা, পুষ্টিকর খাবার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম আমাদের দেহে রোগ প্রতিরোধ  ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কিন্তু আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে সর্দি,কাশি, ঠান্ডা লাগা অস্বাভাবিক নয়। তবে কিছু খাবার আছে যা খেলে সর্দি,কাশি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যেমন-

গাজর

গাজর একটি পুষ্টিকর খাবার। এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন ও মিনারেল যা দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই গাজরকে সুপার ফুড বলা হয়। আর তাই সর্দি হলে গাজর সেদ্ধ করে খান উপকার পাবেন। 

ডিম

সর্দি, কাশির কারনে গলায় ব্যথা হয় এবং গলার ভেতরে গ্লান্ড ফুলে যায়। এই সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে ডিমের সাদা অংশ। ডিমের সাদা অংশ গলার সংক্রমণ দূর করে। 

মুরগির স্যুপ

সর্দি এবং খুসখুসে কাশির জন্য দায়ী ভাইরাস এবং মিউকাস কমাতে সাহায্য করে মুরগির স্যুপ। কারন মুরগির স্যুপে রয়েছে এ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল এবং এ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান। তাই সর্দি-কাশি দূর করতে মুরগির স্যুপ খান।  

মধু ও লেবু

সর্দি,কাশি দূর করতে মধু এবং লেবুর মিশ্রণ বেশ কার্যকর। সমপরিমাণ লেবুর রসের সাথে মধু মিশিয়ে খান গলার সংক্রমণ কমে যাবে।  

কলা

কলা হলো নন-এ্যাসিডিক এবং লো-গ্লাইসেমিক খাবার যা ঠান্ডা লাগা সর্দি, কাশি এবং গলা খুসখুস দূর করতে বিশেষভাবে কার্যকরী।

এছাড়াও ভিটামিন সি যুক্ত ফল, শাক-সবজী এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। 

শেষ কথা 

পরিশেষে বলা যায়, বর্তমানে সর্দি,কাশি,গলা খুসখুস নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার। এ থেকে মুক্তি পেতে বিভিন্ন ধরনের ঔষধও সেবন করা হয়। তবে উল্লেখিত ঘরোয়া প্রতিকার গুলো সর্দি থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে বেশ কার্যকর। এছাড়াও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া বাঞ্ছনীয়। 

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে ক্লিক করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top