সাম্বা ড্যান্সে সুইস জয়

সাম্বা ড্যান্সে সুইস জয়!

প্রথম ম্যাচে সার্বিয়া বধের পর স্বাভাবিকভাবেই সিলেসাওদের কনফিডেন্ট ছিলো তুঙ্গে। তাই সুইজারল্যান্ডের সাথে ব্রাজিলের জয় যেন অনুমিতই ছিলো। কিন্তু ম্যাচের ফলাফল কী হয়েছে দর্শকদের চাহিদা মতো? 

আপনি যদি ম্যাচ দেখে না থাকেন তাহলে হয়তো বলবেন ব্রাজিল জিতেছে কোনোরকমে। আসলেই কী তাই? কী হয়েছিলো মাঠে? কেন প্রথমার্ধ ছিলো গোলশূন্য? নেইমারের অনুপস্থিতি কী ভুগিয়েছে টিটের শিষ্যদের? প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজেছে হেলদিস্পোর্টস। 

  • সুইজারল্যান্ড ফরমেশন

সার্বিয়ার সাথে প্রথম ম্যাচে ব্রাজিল তাদের দুই wing players ব্যবহার করে আক্রমণ চালিয়েছিলো প্রতিপক্ষ সিবিরে। সুইজারল্যান্ড এটা জানতো যে ঠিক একই কৌশলে ব্রাজিল এগোতে পারে বল নিয়ে। তাই ৪-৩-৩ অথবা ৪-৩-২-১ ফরমেশনে তারা দুটো উইং প্লেয়ারের জন্য রেখেছিলো প্যারালাল হিসেবে দুটো করে প্রোটেকশন। ফলাফল গোলশূন্য প্রথমার্ধ। 

সার্বিয়ার বিপক্ষে যে আক্রমণাত্মক খেলা খেলেছিলো ব্রাজিল তা সুইজারল্যান্ডের সাথে খেলতে পারেনি। এর চাক্ষুষ উদাহরণ মিলে দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১৫-২০ মিনিটে। সেন্টার-ফিল্ড বা তারও একটু পেছন থেকে দুই উইং বরাবর খুবই অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় ৫/৬টা লং পাশ বাড়ানো হয় ভিনসেন্ট ও রাফিনহার দিকে। এর কারণ মিডফিল্ডে সুবিধা কর‍তে না পারা। 

  • সুইস টুইস্ট 

মিডফিল্ড থেকে বল বানিয়ে ব্রাজিল যে টিপিকাল ফুটবল খেলে থাকে তা নষ্ট করাই যেন ছিলো সুইসদের মূল লক্ষ্য। আপনি যদি খেয়াল করেন, সুইজারল্যান্ড তাদের নিজেদের ডি-বক্সের একটু সামনে ও ব্রাজিলের ডি-বক্সের একটু পেছনের জায়গাটায় বল নিয়ে খেলার চেষ্টা করেছে বেশ লম্বা একটা সময়।

এমনকি আক্রমণের সময়ও তাদের লং পাশ অথবা শট নেওয়ার ক্ষেত্রে দ্বিধায় পড়তে দেখা যায়। এর কারণ একটাই, ফলাফল যাই হোক, ব্রাজিলকে তাদের সুবিধামতো খেলতে না দেওয়া। তাই, ম্যাচের গোলসংখ্যা কম হওয়ার কৃতিত্ব অবশ্যই সুইজারল্যান্ডের। 

  • নেইমারের অভাব

নেইমারের অভাব কী অনুভব করেছিলো ব্রাজিল দল? অনেকে দ্বিমত পোষণ করলেও উত্তরটা হ্যাঁ। নেইমার যেভাবে প্রতিপক্ষকে ভড়কে দিয়ে এক অদম্য ক্ষিপ্রতায় বল বের করে নিতো, তা নিশ্চয় মিস করেছে হলদেটে জার্সিধারিরা। এর প্রমাণ হলো, নেইমারের জায়গায় খেলতে নামা ফ্রেডকেও একটা সময় বদলি করা হয় অন্য একটি ফুটবলারের জায়গায়।

  • প্লেয়ার বদল

প্রথমার্ধের শুরু থেকেই মিডফিল্ডে জায়গা বের করা নিয়ে যে কষ্টকর বিভীষিকায় সময় পার করছিলো ব্রাজিল দল, তা অল্প অল্প করে কাটতে শুরু করে দ্বিতীয়ার্ধে প্লেয়ার বদলের সাথে সাথে। মূলত এটাই ছিলো ক্যাসিমিরো ক্যারমা অথবা ‘আ মোমেন্ট অব ম্যাজিক’ এর সূচনালগ্ন। 

  • ক্যাসেমিরো ক্যারমা 

প্লেয়ার বদলের সময় আন্তেনিও, গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও রদ্রিগোকে নামানোর পর থেকেই আস্তে আস্তে ব্রাজিলের জায়গা বের করার ব্যাপারটা লক্ষণীয় হয়ে ওঠে। তখন দেখা যায় আগের চেয়ে একটু হলেও ব্রাজিলের প্লেয়াররা জায়গা ম্যানেজ করতে পারছে। ফলাফল ক্যাসেমিরোর এক অসাধারণ ফিনিশিং। 

  • আ মোমেন্ট অব ম্যাজিক

খেলা চলাকালীন একটা সময় কমেন্টারেরা বার বার বলছিলো এ ধরনের সিচুয়েশনে দরকার হয় জাস্ট একটা মোমেন্ট অব ম্যাজিক। ক্যাসেমিরোর সেই গোল যেন সেই ম্যাজিক হিসেবেই ধরা দিলো।

ঠিক যেভাবে যে সিচুয়েশনে তিনি বলটা পেয়েছিলেন এবং যেভাবে শটটা নিয়েছিলেন তা এক কথায় অসাধারণ। এবং সেই ম্যাজিক মোমেন্ট এর জন্যই ব্রাজিল সুইজারল্যান্ড দ্বৈরথ শেষ হলো ঐতিহাসিক সাম্বা ড্যান্সের মাধ্যমে।

লিখেছেন: আরিফুল আবির। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top