সোরিয়াসিস থেকে মুক্তির উপায়

সোরিয়াসিস রোগ কেন হয়? এই রোগ থেকে মুক্তির উপায় জানুন!

সোরিয়াসিস থেকে মুক্তির উপায় : সোরিয়াসিস রোগ কেন হয় তা অনেকেরই অজানা। এটি আমাদের ত্বকের একটি রোগ যা ছোট থেকে বড় সবারই হতে পারে। সারা বিশ্বের মতো আমাদের দেশেও সোরিয়াসিস রোগী রয়েছে। আজ আমরা সোরিয়াসিস রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানবো। 

সোরিয়াসিস থেকে মুক্তির উপায়

কী এই সোরিয়াসিস রোগ

সোরিয়াসিস একটি বিশেষ ক্রুনিক বা দীর্ঘমেয়াদি চর্মরোগ। এটি ত্বকের এক ধরনের  প্রদাহজনিত রোগ যা কোষের বৃদ্ধি অস্বাভাবিকভাবে বাড়িয়ে দেয় এবং শরীরে স্তর পড়তে থাকে। 

সোরিয়াসিস হলে ত্বকের উপরে গোল গোল ও চাকার মতো দাগ তৈরি হয়। এরপর সেখানকার ত্বক থেকে মাছের আঁশের মতো চামড়া উঠতে থাকে। আক্রান্ত স্থান খসখসে হয়ে যায় এবং চুলকানি হয়। সাধারণত কনুই, হাঁটু, মাথার উপরের অংশ, হাত ও পায়ের নখ সোরিয়াসিস রোগে আক্রান্ত হয়।

মূলত সোরিয়াসিস আক্রান্ত স্থানের কোষগুলোর জীবনচক্র দ্রুত শেষ হয়। সোরিয়াসিস রোগীদের ক্ষেত্রে এই মারা যাওয়া কোষের সংখ্যা ও বিস্তারের মাত্রা অস্বাভাবিক হয়ে ওঠে। তবে এটি ছোয়াচে বা সংক্রামক নয়।

সোরিয়াসিস রোগ কেন হয়

এই সোরিয়াসিস সংক্রামক নয়। তাই সংস্পর্শে আসার কারনে ছড়ায় না। নারী পুরুষ সবারই এই রোগ হতে পারে। তবে ত্রিশ বছরের বেশি বয়সীদের এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন। 

সোরিয়াসিস ত্বকের একটি দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তাই এটি একবার হলে দ্রুত সেরে উঠে না। সোরিয়াসিস কেন হয় তা এখনো বৈজ্ঞানিকভাবে স্পষ্ট নয় তবে পরিবারে কারো থাকলে এ রোগ হতে পারে। এছাড়াও সোরিয়াসিস রোগের জন্য কিছু কারণকে দায়ী করা যেতে পারে। যেমন:

বংশগত কারণ

সোরিয়াসিস রোগের কারণ হিসেবে সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয় বংশগত বা জিনগত কারণকে। পরিবারের কারো সোরিয়াসিস থাকলে জিনগত কারণে যে কেউ সোরিয়াসিসে আক্রান্ত হতে পারে। 

মানসিক চাপ

জিনগত কারণ ছাড়াও মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা মাঝে মাঝে ত্বকের সংক্রমণকে উস্কে দেয়। তার মধ্যে সোরিয়াসিস অন্যতম। যেকোন ধরনের মানসিক চাপ সোরিয়াসিস বাড়ায়।  মস্তিষ্কের জন্যে ক্ষতিকর অভ্যাস গুলো দূর করে নিজেকে পরিবর্তন করার উপায়

স্থুলতা বা অতিরিক্ত ওজন

সোরিয়াসিসের আরেকটি কারণ স্থুলতা। শরীরে অতিরিক্ত মেদ থাকলে সোরিয়াসিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। 

দূর্ঘটনা বা পরিবেশগত কারন

কোন দূর্ঘটনার কারনে ত্বকে ক্ষত হলে বা পুড়ে যাওয়ার কারনে সোরিয়াসিস হতে পারে। এছাড়া রোদে পুড়ে যাওয়া বা পরিবেশের ক্ষতিকর প্রভাবে সোরিয়াসিস হতে পারে। 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

সোরিয়াসিস রোগের আরেকটি কারণ অটো ইমিউনিটি। আমাদের দেহের  রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার বিচ্যুতি ঘটলে সোরিয়াসিস হতে পারে।

ধুমপান বা ওষুধ সেবন

ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস ও ছত্রাকজনিত সংক্রমণ, অথবা আবহাওয়ার কারণে সোরিয়াসিস হতে পারে। এছাড়া ধূমপান, মদ্যপান, উচ্চ রক্তচাপের বিশেষ ওষুধ সেবন, ম্যালেরিয়ার ওষুধ সেবন এবং স্টেরয়েড-জাতীয় ঔষধের কারণেও সোরিয়াসিস হতে পারে।

সোরিয়াসিস রোগের লক্ষণ

মূলত সোরিয়াসিস দ্রুত সারে না। সারলেও বার বার ফিরে আসে। তাই সোরিয়াসিস নিয়ে অবহেলা করা উচিত নয়। শুরুতেই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী জীবনযাপন করতে হবে । 

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

সোরিয়াসিস কেন হয় তা জানার সাথে এর উপসর্গগুলোর ব্যাপারেও সচেতন থাকা প্রয়োজন। সোরিয়াসিসের লক্ষণ ব্যক্তিবিশেষে একেকরকম হতে পারে। সাধারণ উপসর্গ গুলো হল:

  • ত্বকের ওপর লাল লাল দাগ হয় যা মাছের মতো খসখসা আঁশ দিয়ে ঢাকা থাকে। 
  • লালা চাকা চাকা দাগ হয় এবং ত্বক ফুলে যায়।
  • আক্রান্ত ত্বকে চুলকানি হয়।
  • যন্ত্রণাদায়ক ক্ষত হতে পারে। 
  • অতিরিক্ত শুকনো হয়ে যাওয়ার কারণে বা চুলকানির জন্য ত্বক থেকে রক্ত ঝরে। 
  • নখের সোরাইয়াসিস হলে নখ মোটা হয়ে যায়, নখে ক্ষত হয় এবং নখের রং পাল্টে যায়। কখনও কখনও চামড়া থেকে নখ আলগা হয়ে যায়।
  • ত্বকে চাকা চাকা দাগ গুলো লাল রং হয়। এছাড়া ছোট ছোট পুজ ভর্তি ফুসকুড়ি দেখা যায়।

এসব উপসর্গ গুলো কখন বাড়ে বা কখনো কমে। খাবার ও জীবন যাপনের ধরনের পরিবর্তনের কারনে কমতে বা বাড়তে পারে। সোরিয়াসিস ত্বকের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা একারনে উপসর্গ কম্লেও পরে আবার ফিরে আসতে পারে।

ভিডিওঃ জাঙ্ক ফুড খেয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে যা করবেন।

পরিশেষ

সোরিয়াসিস রোগ কেন হয় তা নির্দিষ্ট করে বিশেষজ্ঞরা বলতে পারেননি। তবে দীর্ঘমেয়াদি রোগগুলোর মত ডাক্তারের পরামর্শে এর উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রনে রাখা যায়। তাই ত্বকে অস্বাভাবিক দাগ বা চুল্কানির মত উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। 

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top