হাঁটার উপকারিতা

জেনে নিন হাঁটার নানাবিধ উপকারিতা সমূহ!

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে হাঁটার উপকারিতা জানা থাকলেও আলসেমি ও ব্যস্ততার কারণে অনেকেই হাঁটাহাঁটি এড়িয়ে চলেন। কিন্তু আপনি জানেন কি যত প্রকার ব্যায়াম আছে তার মধ্যে হাঁটা অন্যতম একটি সহজ ব্যায়াম! জেনে নিন হাঁটলে আপনার শরীরে কী কী উপকারিতা হতে পারে। 

হাঁটার উপকারিতা 

সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটাহাঁটি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অনুশীলন। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটলে শরীরের নানাবিধ উপকারিতা সাধিত হয়। তাই ছোট বড় সকলেরই উচিৎ নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা। 

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় 

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে হাঁটার বিকল্প নেই। নিয়মিত হাঁটলে রক্তে শ্বেত কনিকা তৈরি হয়। ফলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও নিয়মিত হাঁটাহাঁটি করলে ঠান্ডা জনিত বিভিন্ন সমস্যা দূর হয়। 

২. বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি পায় 

নিয়মিত হাঁটায় বিপাক ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়। এতে হজম পদ্ধতি উদ্দীপ্ত হয় এবং পাকস্থলী থেকে রস বের করতে সাহায্য করে। ফলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায়। খাওয়ার পর কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করলে পাচনতন্ত্রে খাবার খুব সহজেই হজম হয়। তাই হজমের সমস্যা দূর করতে দৈনিক কিছু সময় হাঁটাহাঁটি করুন। 

৩. মানসিক চাপ কমায় 

হাঁটলে মানসিক চাপ কমে। মনকে প্রফুল্ল রাখতে তাই হাঁটার অভ্যাস একটি কার্যকরি অনুশীলন। নিয়মিত হাঁটলে মনের বিষন্নতা দূর হয় ফলে মেজাজ ভালো থাকে। এছাড়াও হাঁটার ফলে মনের দুশ্চিন্তা কমে এবং মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করে। 

৪. হৃদপিণ্ড ভালো রাখতে 

হাঁটাহাঁটি করলে হৃৎস্পন্দন ভালো থাকে। নিয়মিত হাঁটলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। এছাড়াও রক্তে ব্যাড কোলেস্টেরল কমাতে এবং গুড কোলেস্টেরল বজায় রাখতে হাঁটাহাঁটি প্রয়োজন। এতে হৃদপিণ্ড ভালো থাকে ফলে হার্ট এট্যাক এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি থাকে না। 

৫. উচ্চ রক্তচাপ কমায় 

উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে খাদ্যাভাসের পাশাপাশি নিয়মিত শরীরচর্চা করা খুবই প্রয়োজন। তাই অতিরিক্ত রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। এতে উপকার পাবেন। 

৬. হাড়কে মজবুত ও পেশিকে দৃঢ় করে

হাড়ের ক্ষয়রোধ কমাতে নিয়মিত হাঁটুন। হাড়কে মজবুত এবং পেশিকে দৃঢ় করতে সুষম খাদ্যের পাশাপাশি হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ হাঁটা হাড়ের ক্ষয়রোধ করে হাড়কে শক্তিশালী করে এবং পেশির দৃঢ়তা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও হাঁটা হাড়ের শুস্কতা রোধে সাহায্য করে। 

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন হেলদি-স্পোর্টস শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

৭. হাঁটলে ঘুমের সমস্যা দূর হয় 

ঘুমের সমস্যা রয়েছে যাদের অর্থাৎ যারা সহজে ঘুমাতে পারে না,তাদের জন্য নিয়মিত হাঁটা অত্যন্ত ফলদায়ক। কারণ হাঁটলে শরীর থেকে ঘাম বের হয় এবং শরীরে ক্লান্তিবোধ আসে ফলে সহজেই ঘুমের তাড়না থাকে। তাই ঘুমের সমস্যা দূর করতে নিয়মিত হাঁটুন।

৮. ওজন নিয়ন্ত্রণে 

ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে হাঁটা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অনেকে ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য ডায়েট করে থাকেন। তবে এতে হিতে বিপরীত হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে,খাদ্যের মাধ্যমে যে ক্যালরি আমরা গ্রহণ করি তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ক্যালরি আমাদের শরীর থেকে ক্ষয় করতে হবে। আর এর জন্য উত্তম উপায় হলো হাঁটা। 

৯. হাঁটা ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে  

ডায়াবেটিস রোগীদের ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হাঁটার অভ্যাস খুবই কার্যকর। হাঁটলে পেশিতে ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত হাঁটা উচিৎ। 

১০. ক্যান্সার প্রতিরোধে 

নিয়মিত হাঁটলে স্তনক্যান্সার সহ বিভিন্ন ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি হ্রাস পায়। কারণ হাঁটার সময় হৃৎস্পন্দন আর শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বৃদ্ধি পায়। ফলে হৃদযন্ত্র আর ফুসফুসে রক্ত সরবরাহ বাড়ে। নিয়মিত হাঁটার ফলে এই দুই যন্ত্রের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এবং ক্যান্সারের মতো মরণব্যাধি থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।  

ভিডিওঃ ৯ টি সেরা ম্যারাথন টিপস যা আপনাকে ম্যারাথনে সহজে ও দ্রুত দৌড়াতে সাহায্য করবে ।। 9 Best Marathon Tips

হাঁটার সঠিক সময় 

ছোট বড় সকলের নিয়মিত হাঁটাহাঁটির অভ্যাসটি নিয়ম করে পালন করা উচিৎ। কারণ শারীরিক ব্যায়াম সবার ক্ষেত্রে সম্ভব হয় না। তাই সকলেরই নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা উচিৎ। 

হাঁটার জন্য  উপযুক্ত সময় হলো সকাল। খোলামেলা উদ্যানে ভোরের আলোতে দূষণ মুক্ত পরিবেশে হাঁটাহাঁটি করুন। এতে মনে যেমন এক ধরনের প্রশান্তি কাজ করবে তেমন বিশুদ্ধ বাতাস গ্রহণ করা হবে।  

ব্যস্ততার কারণে যাদের সকালে হাঁটার জন্য সময় হয়ে ওঠে না তারা বিকেলে একটি উপযুক্ত সময় বেছে নিন। দৈনিক কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে হাঁটুন। একবারে ৩০ মিনিট হাটঁতে না পারলে ১০ মিনিট করেও হাঁটা যেতে পারে। 

তবে মনে রাখতে হবে ভরা পেটে হাঁটা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই খাবার  গ্রহণের পর কিছুক্ষন বিশ্রাম নিয়ে হাঁটা শুরু করুন। ঢিলেঢালা পোশাক ও জুতো পড়ে হাঁটুন। হাঁটার শুরুতে ও শেষে পানি পান করুন।  নিয়মিত ব্যায়াম করলে যে ১০টি উপকারিতা পাবেন!

শেষ কথা 

পরিশেষে বলা যায় শরীরকে যথাযথ কর্মক্ষম রাখতে হাঁটার উপকারিতা অনেক। ছোট বেলা থেকেই তাই দৌড়ানো, সাঁতার, হাঁটাহাঁটি, সাইক্লিং ইত্যাদি নিয়মিত অনুশীলন করা উচিৎ। এতে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ সুদৃঢ়ভাবে গড়ে ওঠে। স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে তাই সপ্তাহে ৪ থেকে ৫ দিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটার অভ্যাস গড়ে তুলুন। 

আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকলে এখানে ক্লিক করুন!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top