বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের ২৩তম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয় সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ফরচুন বরিশাল। পয়েন্ট টেবিলে সমান পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষ দুই পজিশনে রয়েছে সিলেট ও বরিশাল। আজকের ম্যাচের মাধ্যমেই একজন এগিয়ে যাবে পয়েন্ট টেবিলে।
মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় ফরচুন বরিশালের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। সিলেটের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে আসে নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকির হাসান।
প্রথম ওভার থেকেই অসাধারণ শুরু করে শান্ত। দ্বিতীয় ওভারে স্ট্রাইকে গিয়ে প্রথম বলেই গোল্ডেন ডাকে সাজঘরে ফিরে জাকির হাসান। এরপর মাঠে নামে নামে তৌহিদ হৃদয়। নেমে একটি চার হাঁকিয়ে একই ওভারে পঞ্চম বলে তাকেও সাজঘরে ফেরায় মোহাম্মদ ওয়াসিম। তারপরের বলে মুশফিকুর রহিমকেও শূন্য রানে সাজঘরে ফিরিয়ে এক ওভারেই তিন উইকেট তুলে নেয় ওয়াসিম।
দ্বিতীয় ওভারেই মাত্র ১৫ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় সিলেট। এরপর শান্তকে সঙ্গ দিতে মাঠে আসে টম মোরেস। মোরেস ও শান্ত দ্রুত দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তাদের পার্টনারশিপ ভাঙে সাকিব আল হাসান।
সাকিবের অসাধারণ ডেলিভারিতে এগিয়ে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিংয়ের শিকার হয়ে ৩০ বলে ৪০ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে টম মোরেস।
একদিকে উইকেট পড়তে থাকলেও অপর প্রান্তে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেয় নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে আসে থিসারা পেরেরা। এসেই আগ্রাসী ব্যাটিং করতে শুরু করে। ১৬ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে কামরুল হাসানের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে থিসারা পেরেরা।
শান্তর অসাধারণ ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭৩ রান। ৬৬ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল নাজমুল হোসেন শান্ত।
বরিশালের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করে মোহাম্মদ ওয়াসিম। সাকিব আল হাসান ও কামরুল হাসান পেয়েছে একটি করে উইকেট।
১৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে বরিশালের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে সাইফ হাসান ও ইব্রাহিম জাদরান। নেমে আগ্রাসী ব্যাটিং শুরু করে সাইফ হাসান। বরিশালের রান খুবই দ্রুত এগোতে থাকে। অবশেষে সাইফকে থামাতে সক্ষম হয় তানজিম হাসান সাকিব।
চারটি ছক্কায় ১৯ বলে ৩১ রানের ইনিংস খেলে মুশফিকুর রহিমের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে সাইফ হাসান। এরপর মাঠে নামে এনামুল হক। তবে তার ইনিংসও দীর্ঘ স্থায়ী হতে দেয়নি তানজিম হাসান। ৭ম ওভারের শেষ বলে ৮ বলে ৩ রানের ইনিংস খেলে ফিরতে হয় এনামুল হককে।
এরপর ইব্রাহিম জাদরান ও সাকিব আল হাসান মিলে তৃতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। দু’জনে মিলে রান এগিয়ে নিতে শুরু করে আবার। অবশেষে তাদের পার্টনারশিপ থামাতে সক্ষম হয় রেজাউর রহমান রাজা।
১৪তম ওভারে তৃতীয় বলে ৩৭ বলে ৪২ রানের ইনিংস খেলে বোল্ড হয় ইব্রাহিম জাদরান। একই ওভারের শেষ বলে সাকিল আল হাসানকেও তুলে নেয় রেজাউর রহমান। ১৮ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে বোল্ড হয় সাকিব আল হাসান।
এরপর ইফতিখার আহমেদ ও করিম জানাত নেমেই দলকে টানতে শুরু করে। মাশরাফির ওভারে তিন বলে তিন ছক্কা হাঁকায় করিম জানাত। তারপরই করিম জানাতকে তুলে নেয় মোহাম্মদ আমির। এরপর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নেমে একটা ছাক্কা মারলে তাকেও সাজঘরে ফেরায় আমির।
শেষ ওভারে বোলিংয়ে যায় রেজাউর রহমান রাজা। তখন বরিশালের প্রয়োজন ১৫ রান। প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ক্যাচ আউট হয় ইফতিখার আহমেদ। পরের বলেই স্ট্রাইকে যাওয়ার চেষ্টায় রান আউট হয় মেহেদী হাসান মিরাজ। এরপর মোহাম্মদ ওয়াসিম চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত সফল হতে পারেনি।
নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে বরিশালের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৭১ রান। এতে ২ রানে জয় পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। সিলেটের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট শিকার করে রেজাউর রহমান রাজা। দু’টি করে উইকেট শিকার করে মোহাম্মদ আমির ও তানজিম হাসান সাকিব।
সংক্ষিপ্ত স্কোর :
সিলেট স্ট্রাইকার্স – ১৭৩/৫ (২০)
নাজমুল হোসেন শান্ত ৮৯ (৬৬)
টম মোরেস ৪০ (৩০)
থিসারা পেরেরা ২১ (১৬)
মোহাম্মদ ওয়াসিম ৩/৩৪
সাকিব আল হাসান ১/১১
ফরচুন বরিশাল – ১৭১/৮ (২০)
ইব্রাহিম জাদরান ৪২ (৩৭)
সাইফ হাসান ৩১ (১৯)
সাকিব আল হাসান ২৯ (১৮)
রেজাউর রহমান রাজা ৩/৪১
মোহাম্মদ আমির ২/২৪
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন নাজমুল হোসেন শান্ত।