ম্যাচ শেষে টপ বারো দল নিয়ে শুরু হয়েছে টি টুয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপ। বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচে আজ মুখোমুখি হয়েছিল নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে। প্রস্তুতি ম্যাচে কোন প্রকার সুবিধা করতে পারেনি টাইগাররা। তাই আজকে বেশ ভালো প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমেছিল টাইগাররা।
ব্লান্ডস্টোন এরিনা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় নেদারল্যান্ডস। এতে বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার। দুজনেরই ধীরে সুস্থে দলকে এগিয়ে নিতে থাকে। তবে তাদের জুটি শীঘ্রই ভেঙে যায়। ষষ্ঠ ওভারে পল ভান মিকেরেনের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে ১৪ বলে ১৪ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে। সৌম্য ফেরার পরের ওভারেই আরেক নাজমুল হোসেন শান্তকেও তুলে নেয় টিম প্রিঙ্গেল। ২০ বলে ২৫ রানের ইনিংস লোগানের হাতে ক্যাচ তুলে সাজঘরে ফিরেন।
এরপর লিটন দাস ও সাকিব আল হাসান নামলে খুব দ্রুতই তারা বিদায় নেয়। নবম ওভারে লোগানের বলে লিটন দাস আউট হয়। তার পরের ওভারে সিরাজ আহমেদের প্রথম বলেই সাকিবকে তুলে নেয়। এরপর ইয়াসির আলী নেমে খুব দ্রুতই বিদায়।
দলের এই অবস্থায় আফিফ হোসেন ও নুরুল হাসান দলকে টানতে শুরু করে। নুরুল হাসান তেমন সুবিধা করতে না পারলেও আফিফ হোসেন দলকে টানতে থাকে ধীর গতিতে। শেষ পর্যন্ত ১৮তম ওভারে বাস ডি লিডের প্রথম বলেই পলের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ১৮ বলে ১৩ রানের ধীর ইনিংস খেলে সাজঘরে ফুরে নুরুল হাসান। একই ওভারের শেষ বলে দলকে টানতে থাকা আফিফ হোসেনও স্কট এডওয়ার্ডের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে। ২৭ বলে ৩৮ রানের ইনিংস খেলে ফিরে আফিফ।
এরপর মোসাদ্দেক হোসেনের ঝড়ো ইনিংসে লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় বাংলাদেশ। মোসাদ্দেকের ঝড়ো ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৪৪ রান। ১২ বলে ২০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল। নেদারল্যান্ডের পক্ষে দুটি করে উইকেট নেয় মিকারেন ও লিডে।
১৪৫ রানের টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে নেদারল্যান্ড। ভিকরামজিত সিং ও ম্যাক্স ও’দউদ ওপেনিং জুটিতে নামে। বোলিংয়ে প্রথমেই সাফল্য এনে দেয় তাসকিন আহমেদ। ইনিংসের প্রথম বলেই তুলে নেন সিং-কে। তারপর লিডে নামলে দ্বিতীয় বলে তাকেও তুলে নেন। এতে হ্যাটট্রিকের চান্স পায় তাসকিন। হ্যাট্রিক করতে ব্যর্থ হলেও নেদারল্যান্ডের ব্যাটিং লাইন গুড়িয়ে দেয়।
এরপর চতুর্থ ওভারে সাকিব আল হাসান বলে আসে। সাকিবের দ্বিতীয় বলে রান আউট হয়ে ম্যাক্স ও’দউদ আউট হয়। একই ওভারে চতুর্থ বলে টম কুপারও রান আউটের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে। এক প্রান্তে ক্রমাগত উইকেট পড়লেও অন্য প্রান্ত আগলে রেখেছিল কলিন একারম্যান।
একারম্যানকে সঙ্গ দিতে ক্রিজে নামে স্কট এডওয়ার্ড। দুজনে মিলে দলকে এগিয়ে নিতে থাকলে। একারম্যান রান তুললেও তেমন সুবিধা করতে পারছিল না স্কট। শেষ পর্যন্ত বারোতম ওভারে সাকিব আল হাসানের বলে হাসান মাহমুদের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ২৪ বলে ১৬ রানের ইনিংস খেলে বিদায় স্কট।
এরপর আবারও নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারানো শুরু করে নেদারল্যান্ডস। অপর প্রান্তে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে রাখলেও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয় একারম্যান। একারম্যানকে শিকার করে চারটি উইকেট তুলে নেয় তাসকিন আহমেদ। মোসাদ্দেক হোসেনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ৪৮ বলে ৬২ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে একারম্যান।
একারম্যানের পর আর কেউ টিকতে পারেনি। মিকারেন একটু মারকুটে ব্যাটিং করলেও শেষ পর্যন্ত লক্ষ্য পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়। ১৪ বলে ২৪ রানের ইনিংস খেলে মিকারেন আউট হলে সকল উইকেট হারায় নেদারল্যান্ডস। বিশ ওভার শেষে ১০ উইকেট হারিয়ে নেদারল্যান্ডের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩৫ রান। বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪ টি উইকেট শিকার করে তাসকিন আহমেদ। এটি তার ক্যারিয়ারের সেরা বোলিং। দুটি উইকেট পেয়েছেন হাসান মাহমুদ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ -১৪৪/৮ (২০)
আফিফ হোসেন ৩৮
নাজমুল হোসেন শান্ত ২৫
মোসাদ্দেক হোসেন ২০
পল ভান মিকারেন ২/২১
বাস ডে লাডে ২/২৯
নেদারল্যান্ডস – ১৩৫/১০ (২০)
কলিন একারম্যান ৬২
পল ভান মিকারেন ২৪
স্কট এডওয়ার্ড ১৬
তাসকিন আহমেদ ৪/২৫
হাসান মাহমুদ ২/১৫
ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে তাসকিন আহমেদ।