bangladesh vs sl 3rd odi rishad

টি টোয়েন্টির ব্যর্থতার পর ওয়ানডেতে লঙ্কানদের হারিয়ে সিরিজ জয় টাইগারদের!

প্রথম ওয়ানডেতে জয় তুলে নিয়ে সিরিজ জয়ের স্বপ্ন দেখলেও দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভালো খেলেও ম্যাচ হাত ছাড়া হয় বাংলাদেশের। যেখানে, দ্বিতীয় ওয়ানডেতে জয়ের কাছাকাছি এসেও ৩ উইকেট হারের মুখ দেখে বাংলাদেশ। 

চট্টগ্রামে সিরিজের সমতা দাঁড়ায় ১-১ ব্যবধানে। সিরিজ জয়ের লক্ষ্য নিয়ে তৃতীয় ওয়ানডেতে মাঠে নামে দুই দল। টস ভাগ্য বিপক্ষে যায় বাংলাদেশের। ফলে, টসে জিতে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুশল মেন্ডিস। 

বাংলাদেশ একাদশ : নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), সৌম্য সরকার, এনামুল হক বিজয়, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম, তাওহীদ হৃদয়, রিশাদ হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, শরীফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান। 

শ্রীলঙ্কা একাদশ : কুশল মেন্ডিস (অধিনায়ক), পাথুম নিসাঙ্কা, আবিষ্কা ফার্নান্দো, চারিথ আসালাঙ্কা, সাদিরা সামারাউইকরামা, জানিথ লিয়ানাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, দুনিথ উইল্লালাগে, মাহিশ থিকশানা, প্রমোদ মাধুশান, লাহিরু কুমারা।

জানিথ লিয়ানাগের একক প্রচেষ্টায় শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ ২৩৫ রান

শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক কুশল মেন্ডিসের ব্যাটিং করার সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণিত করেন বাংলাদেশের তাসকিন আহমেদ। গত ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান পাথুম নিসাঙ্কাকে নিজের প্রথম ওভারেই তুলে নেন তাসকিন।

নিসাঙ্কার সঙ্গী ওপেনার আবিষ্কা ফার্নান্দোকে মাত্র ৪ রানে ফিরিয়ে নিজের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত করেন তাসকিন আহমেদ। অধিনায়ক মেন্ডিস এবং সাদিরা সামাউইকরামা দলের হাল ধরার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। 

সামাউইকরামা ১৪ রানে সাজ ঘরে ফিরলে কুশল মেন্ডিসও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। মেন্ডিস ফিরেন ২৯ রান করে। ভালো পার্টনারশিপ গড়ে তুলেন দলের দুই মিডল অর্ডার ব্যাটার জানিথ লিয়ানাগে ও চারিথ আসালাঙ্কা। 

আসালাঙ্কা ৩৭ রানে প্যাভিলিয়নে ফিরলেও দেখেশুনে ভালোভাবেই নিজের খেলা চালিয়ে যান জানিথ লিয়ানাগে। সঙ্গী হিসেবে দুনিথ উইল্লালাগে, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গাকে পেলেও কেউ যোগ্য সঙ্গ দিতে পারেননি। 

মাহিশ থিকশানা কিছু সময় ক্রিসে থাকলেও দলের রানের চাকা সচল রাখেন লিয়ানাগে। পাশাপাশি ওয়ানডেতে নিজের চতুর্থ অর্ধশতক তুলে নেন তিনি। থিকশানা ১৫ রান করে আউট হলেও অপরপ্রান্তে ঠিকই নিজের প্রথম ওয়ানডে শতক পূর্ণ করেন জানিথ লিয়ানাগে। 

ইনিংসের শেষ ওভারে দুই উইকেটের পতন ঘটলেও ২৩৫ রানের প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ টার্গেট দাঁড় করায় শ্রীলঙ্কা। ১০২ রান করে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন তরুণ ব্যাটার জানিথ লিয়ানাগে। 

তানজিদ, রিশাদের ব্যাটে জয় নিশ্চিত টাইগারদের

২৩৬ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে এনামুল হক বিজয়ের সাথে মাঠে নামেননি প্রথম ইনিংসে ফিল্ডিংয়ে আহত হওয়া সৌম্য সরকার। তার পরিবর্তে ওপেনিংয়ের সূচনা করেন তানজিদ হাসান তামিম।

কনকাশন সাবে সুযোগ পাওয়া তানজিদ তামিম শুরু থেকেই সুযোগ ভালোভাবে কাজে লাগাতে থাকেন। অপরদিকে, বিজয় খেলতে থাকেন ধীরে সুস্থে।

দুজনের জুটি ভালোভাবে আগাতে থাকলেও শ্রীলঙ্কার হয়ে প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন লাহিরু কুমারা। এনামুল হককে ফেরান মাত্র ১২ রান করে।

তামিমকে মাঠে রেখে বিজয় ফিরলে ক্রিসে তার স্থলাভিষিক্ত হন নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু, তিনিও মাঠে দীর্ঘক্ষণ থিতু হতে পারেননি। সেই লাহিরু কুমারার কাছেই ১ রানে নিজের উইকেট বিলিয়ে আসেন টাইগার অধিনায়ক।

এরপর, দুই সাবেক অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জয়ীদের উপর ভর করে আর বেগ পেতে হয়নি বাংলাদেশের। তাওহীদ হৃদয় ও তানজিদ তামিমের সাবলীল ব্যাটিংয়ে রান আসতে থাকে নিয়মিতভাবে।

ওয়ানডেতে নিজের দ্বিতীয় হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন জুনিয়র তামিম। দুইজনের ৪৯ রানের পার্টনারশিপ ভেঙে তাওহীদ হৃদয়কে নিজের তৃতীয় শিকারে পরিণত করেন লাহিরু কুমারা।

অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহও ভালো কিছু উপহার দিতে পারেননি। ১ রানের অবদানে সাজ ঘরে ফিরেন “সাইলেন্ট কিলার”। নিজের ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরির আশা জাগিয়েও শ্রীলঙ্কান লেগি ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার কাছে কাঁটা পড়েন তানজিদ তামিম।

পরে ৫ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া হাথুরুসিংহে শিষ্যদের হয়ে হাল ধরেন মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী মিরাজ। দুজনের দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে জয়ের দিকে এগিয়ে যেতে থাকে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

দলীয় ১৭৮ রানে মিরাজ নিজের উইকেট হারালেও এরপর রিশাদ হোসেনের ঝড়ো ইনিংসে আর জয়ের জন্য শঙ্কায় পড়তে হয়নি বাংলাদেশকে। রীতিমতো ম্যাচ দ্রুত শেষ করার তাড়ায় নামা রিশাদ হোসেনের চার-ছক্কার ফুলঝুরিতে নাস্তানাবুদ হয় শ্রীলঙ্কার বোলাররা।

হাসারাঙ্গার ৯ম ওভারে একাই ২৪ রান তুলেন রিশাদ। ফলে, মুশফিকের অপরাজিত ৩৭ ও রিশাদ হোসেনের ৪৮*(১৮) রানের দুর্দান্ত ইনিংসে সাগরিকায় সিরিজে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ।

ম্যাচে বোল হাতে ১ উইকেট ও ব্যাটিংয়ে দলের জয়ে ৪৮ রানের অবদানে ম্যাচ সেরা হয়েছেন রিশাদ। ৩ ম্যাচে মোট ১৬৩ রান সংগ্রহে সিরিজ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।

স্কোরবোর্ড (Match Scoreboard)

শ্রীলঙ্কা    ২৩৫/১০ (৫০ ওভার)

জানিথ লিয়ানাগে – ১০১*(১০২)

তাসকিন আহমেদ – ৩/৪২ (১০ ওভার)

বাংলাদেশ    ২৩৭/০৬ (৪০.২ ওভার)

তানজিদ হাসান তামিম – ৮৪ (৮১)

লাহিরু কুমারা – ৪/৪৮ (৮ ওভার)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top