আইপিএল ২০২২

আইপিএল ২০২২ মেগা অকশ্যানে ১০ দল জানুন বিস্তারিত!

পৃথিবীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোর মধ্যে একটি হলো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল)। প্রতি বছর বিশ্বের সবচেয়ে নামি-দামি সব ক্রিকেটারদের হাঁট বসে এই আইপিএলে। তাই, আইপিএলকে বিশ্বের কঠিনতম ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগও বলা হয়। 

২০০৮ সালে ৮টি দল নিয়ে আইপিএলের প্রথম আসর অনুষ্ঠিত হয়। ২০১১ সালে চতুর্থ আসরে প্রথম বার ১০টি দল নিয়ে আইপিএল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। কিন্তু, এর পরের দুই বছর অর্থাৎ পঞ্চম ও ষষ্ঠ আসরে ৯টি দল নিয়ে আইপিএল অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ২০১৪ সালে সপ্তম আসর থেকে যথাক্রমে আগের মতোই ৮টি দল নিয়ে আইপিএল অনুষ্ঠিত হতে থাকে। 

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ২০২২ সাল থেকে আবার ১০টি দল নিয়ে আইপিএল করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) নতুন দুইটি দলের মালিকানার জন্য আহ্বান জানায় এবং দল কেনার জন্য নিলামের ব্যবস্থা করা হয়। 

গত ২৫ অক্টোবর ২০২১ নিলামে আরপিএসজি গ্রুপ এবং সিভিসি ক্যাপিটাল নিলাম জিতে যায়। আরপিএসজি গ্রুপ ৭০৯০ কোটি (ইন্ডিয়ান রুপি) দিয়ে লক্ষ্ণৌ এবং সিভিসি ক্যাপিটাল ৫৬২৫ কোটি (ইন্ডিয়ান রুপি) দিয়ে আহমেদাবাদ এই দুইটি দলকে কিনে নেয়। যেহেতু, আহমেদাবাদ ও লক্ষ্ণৌ দল দুইটি নতুন তাই বিসিসিআই সিদ্ধান্ত নেয় যে ১০টি দলের সমন্বয়ে নতুন করে মেগা অকশ্যান অনুষ্ঠিত হবে। 

মেগা অকশ্যানের নিয়মানুযায়ী, আইপিএলের আগের দলগুলো অর্থাৎ  মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স, চেন্নাই সুপার কিংস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, রাজস্থান রয়্যালস, সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ, দিল্লি ক্যাপিটালস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং পাঞ্জাব কিংস এই ৮টি দলের প্রতিটি দল আগের আসরে খেলা তাদের সর্বোচ্চ ৩ জন দেশি খেলোয়াড় এবং সর্বোচ্চ ২ জন বিদেশি খেলোয়াড় দলে রেখে দিতে পারবে। 

নতুন ২টি দল আহমেদাবাদ এবং লক্ষ্ণৌ মেগা অকশ্যানের আগে সর্বোচ্চ ২জন দেশি ও ১জন বিদেশি করে খেলোয়াড়কে সরাসরি দলে নেওয়ার সুযোগ পাবে। মেগা অকশ্যানের জন্য ১০টি দলের প্রত্যেকটিকে দেওয়া হয় ৯০ কোটি ইন্ডিয়ান রুপি। প্রত্যেক দল নিজেদের দল তৈরী করতে ৯০ কোটি রুপির থেকে বেশি খরচ করতে পারবে না।

সবধরনের অর্গানিক ফুড, ২০০+ আয়ুর্বেদ ঔষধ ও খেলার সামগ্রী ঘরে বসেই অর্ডার করুন  আমাদের শপ থেকে- https://shop.healthd-sports.com

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স : 

আইপিএলের সবচেয়ে সফলতম দল হলো মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। আইপিএলে সর্বোচ্চ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়া দলটি ২০১৩, ২০১৫, ২০১৭, ২০১৯ এবং ২০২০ সালসহ এই পর্যন্ত মোট পাচঁ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। মুম্বাইয়ের পাঁচটি শিরোপাই এসেছে ভারতীয় জাতীয় দলের ওপেনার রোহিত শর্মার নেতৃত্বেই। 

মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স ৪২ কোটি খরচ করে ৪ জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছে। মেগা অকশ্যানের জন্য মুম্বাইয়ের ৪৮ কোটি রুপি বাকি রয়েছে। মুম্বাইয়ের রিটেইন করা খেলোয়াড়রা হলেন:

দেশি খেলোয়াড় :

১. রোহিত শর্মা (১৬ কোটি)

২. সূর্য কুমার যাদব (৮ কোটি)

৩. জাসপ্রিত বুমরাহ (১২ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৪.কাইরন পোলার্ড (৬ কোটি) [ওয়েস্ট ইন্ডিজ]

চেন্নাই সুপার কিংস :

আইপিএলের দ্বিতীয় সফলতম দল হলো চেন্নাই সুপার কিংস। চেন্নাই সুপার কিংস আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন। আইপিএলে মুম্বাইয়ের পর সর্বোচ্চ ৪টি শিরোপা রয়েছে চেন্নাই সুপার কিংসের। চেন্নাই ২০১০,২০১১,২০১৮ এবং ২০২১ এর ১৪তম আসরে চতুর্থ শিরোপা ঘরে তুলে নেয়। ভারত জাতীয় দলের সাবেক বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনির নেতৃত্বেই চেন্নাই সুপার কিংস ৪ বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। 

চেন্নাই সুপার কিংসও ৪২ কোটি খরচ করে ৪ জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছে। মেগা অকশ্যানের জন্য চেন্নাইয়েরও ৪৮ কোটি রুপি বাকি রয়েছে। চেন্নাইয়ের রিটেইন করা খেলোয়াড়রা হলেন :

দেশি খেলোয়াড় :

১. মহেন্দ্র সিং ধোনি (১২ কোটি)

২. রবিন্দ্র জাদেজা (১৬ কোটি)

৩. রুতুরাজ গায়কেওয়াদ (৬ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৪. মঈন আলি (৮ কোটি) [ইংল্যান্ড]

কলকাতা নাইট রাইডার্স : 

আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্স ২০১২ সালে প্রথমবার এবং ২০১৪ সালে দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এরপর আর শিরোপা ছুয়ে দেখা হয়নি শাহরুখ খানের দলের। কলকাতা, ভারতের সাবেক ওপেনার গৌতম গম্বিরের নেতৃত্বেই দুইবার শিরোপা ঘরে তুলেছিল। 

কলকাতা ৩৪ কোটি খরচ করে ৪ জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছে। মেগা অকশ্যানের জন্য কলকাতার ৪৮ কোটি রুপি বাকি রয়েছে। কলকাতার রিটেইন করা খেলোয়াড়রা হলেন:

দেশি খেলোয়াড় :

১. ভেঙ্কেটেশ আইয়ার (৮ কোটি)

২. বরুণ চক্রবর্তী (৮ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৩. আন্দ্রে রাসেল (১২ কোটি) [ওয়েস্ট ইন্ডিজ]

৪. সুনিল নারিন (৬ কোটি) [ওয়েস্ট ইন্ডিজ]

রাজস্থান রয়্যালস :

রাজস্থান রয়্যালস আইপিএলের প্রথম আসরেই শিরোপার দেখা পায়। ২০১৩ সালে আইপিএলের এক কেলেঙ্কারি ঘটনার জন্য বিসিসিআই ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে ২ বছরের জন্য রাজস্থানের উপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল। নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ২০১৮ সাল থেকে রাজস্থান আবার আইপিএলে অংশগ্রহণ করে। 

২৮ কোটি খরচ করে ৩ জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছে রাজস্থান রয়্যালস। মেগা অকশ্যানের জন্য রাজস্থানের ৬২ কোটি রুপি বাকি রয়েছে। রাজস্থান রয়্যালসের রিটেইন করা খেলোয়াড়রা হলেন :

দেশি খেলোয়াড় :

১. সানজু স্যামসন (১৪ কোটি)

২. ইয়াশাসভি জয়সওয়াল (৪ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৩. জস বাটলার (১০ কোটি) [ইংল্যান্ড]

সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ :

সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ ২০১৩ সালে প্রথমবারের মতো আইপিএলে অংশগ্রহণ করে। ২০১৬ সালে আইপিএলের নবম আসরেই হায়দ্রাবাদ প্রথমবার ফাইনালে উঠে এবং সেইবার রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুলে নেয়। 

মোট ২২ কোটি খরচ করে ৩ জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছে সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ। মেগা অকশ্যানের জন্য হায়দ্রাবাদের ৬৮ কোটি রুপি বাকি রয়েছে। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের রিটেইন করা খেলোয়াড়রা হলেন :

দেশি খেলোয়াড় :

১. আব্দুল সামাদ (৪ কোটি)

২. উমরান মালিক (৪ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৩. কেন উইলিয়ামসন (১৪ কোটি) [নিউজিল্যান্ড]

পাঞ্জাব কিংস :

পাঞ্জাব কিংস আইপিএলে প্রথম আসর থেকে নিয়মিত খেলে আসলেও এখনো একবারও শিরোপার দেখা পায়নি। আইপিএলের সপ্তম আসরে পাঞ্জাব প্রথমবারের মতো ফাইনালে উঠলেও কলকাতার কাছে হেরে শিরোপা স্বপ্নভঙ্গ হয় দলটির। পাঞ্জাব ২০০৮-২০২০ পর্যন্ত আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব নামে অংশগ্রহণ করে এবং আইপিএলের ১৪তম আসরে তারা দলের নতুন নামকরণ করে পাঞ্জাব কিংস রাখে। 

মোট ১৬ কোটি খরচ করে শুধুমাত্র ২ জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছে পাঞ্জাব কিংস। কিন্তু, কোনো বিদেশি খেলোয়াড়কে রিটেইন করেনি। মেগা অকশ্যানের জন্য পাঞ্জাবের ৭২ কোটি রুপি বাকি রয়েছে। পাঞ্জাবের রিটেইন করা খেলোয়াড়েরা হলেন :

দেশি খেলোয়াড় :

১. মায়াঙ্ক আগারওয়াল (১২ কোটি)

২. আর্শদ্বীপ সিং (৪ কোটি)

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু :

আইপিএলে এখন পর্যন্ত শিরোপা ঘরে তোলা হয়নি রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর। ২০০৯, ২০১১ এবং ২০১৬ সালে দলটি ফাইনালে গেলেও ৩ বারই ফাইনালে হেরে চ্যাম্পিয়ন হওয়া হয়নি। 

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু ৩৩ কোটি খরচ করে ৩ জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছে এবং মেগা অকশ্যানের আগে বেঙ্গালুরুর ৫৭ কোটি রুপি বাকি রয়েছে। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর রিটেইন করা খেলোয়াড়রা হলেন :

দেশি খেলোয়াড় :

১. বিরাট কোহলি (১৫ কোটি)

২. মোহাম্মদ সিরাজ (৭ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৩. গ্ল্যান ম্যাক্সওয়েল (১১ কোটি) [অস্ট্রেলিয়া]

দিল্লি ক্যাপিটালস :

পাঞ্জাব কিংস, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর মতোই শিরোপার স্বাদ এখনো নেওয়া হয়নি দিল্লি ক্যাপিটালসের। দিল্লি ২০০৮ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত দিল্লি ড্যার্ডেভিলস নামে আইপিএলে অংশগ্রহণ করলেও, ২০১৯ সালে তারা দলের নাম পরিবর্তন করে দিল্লি ক্যাপিটালস রাখে। 

দিল্লি ক্যাপিটালস ৩৯ কোটি খরচ করে ৪ জন খেলোয়াড়কে রিটেইন করেছে। মেগা অকশ্যানের জন্য দিল্লির ৪৭.৫ কোটি রুপি বাকি রয়েছে। দিল্লি ক্যাপিটালস যেসব খেলোয়াড়দেরকে রিটেইন করেছে তারা হলেন :

দেশি খেলোয়াড় :

১. রিশাব পান্ত (১৬ কোটি)

২. আক্সার পাটেল (৯ কোটি)

৩. পৃথ্বি শ (৭.৫ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৪. আনরিচ নোর্কিয়া (৬.৫ কোটি) [দক্ষিণ আফ্রিকা]

আহমেদাবাদ :

আরপিএসজি গ্রুপের মালিকানায় ২০২২ সালের আইপিএল আহমেদাবাদ প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করবে। নতুন দুই দলের জন্য বিসিসিআই-এর নিয়মানুযায়ী,  আহমেদাবাদ অকশ্যানের আগে ২ জন দেশি ও ১ জন বিদেশি খেলোয়াড় সরাসরি দলে নিয়েছে। আহমেদাবাদের দলে নেওয়া তিনজন খেলোয়াড় হলো :

দেশি খেলোয়াড় :

১. হার্দিক পান্ডিয়া (১৫ কোটি)

২. শুভমান গিল (৭ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৩. রশিদ খান (১৫ কোটি) [আফগানিস্তান]

লক্ষ্ণৌ : 

সিভিসি ক্যাপিটালের অধীনস্থ লক্ষ্ণৌ দলও ২০২২ সালের আইপিএলে প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছে। নতুন দুই দলের জন্য বিসিসিআই-এর নিয়মানুযায়ী, লক্ষ্ণৌও মেগা অকশ্যানের আগে সর্বোচ্চ ২ জন দেশি ও ১ জন বিদেশি খেলোয়াড় সরাসরি দলে নিতে পারবে। লক্ষ্ণৌ-এর দলে নেওয়া তিন খেলোয়াড় হলো :

দেশি খেলোয়াড় :

১. লোকেশ রাহুল (১৫ কোটি)

২. রভি বিশনয় (৪ কোটি)

বিদেশি খেলোয়াড় :

৩. মার্কাস স্টোইনিস (১১ কোটি) [অস্ট্রেলিয়া)

আইপিএলের ১৫তম আসরের ১০ দলের মেগা অকশ্যান অনুষ্ঠিত হবে বেঙ্গালুরুতে আগামী ১২ এবং ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২২। 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top