ডাচদের বিপক্ষে হারে বিদায়ের পথে টাইগাররা!

কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে এবারের বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় জয়ের লক্ষ্যে মাঠে নামে বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডস। 

শুধুমাত্র ১ জয়ে টেবিলের তলানিতে থাকা ডাচরা মুখিয়ে ছিল বাংলাদেশকে হারিয়ে আরও এক চমক উপহার দেওয়ার আশায়। 

যেখানে, এখন পর্যন্ত টানা ৪ হারের পর জয়ের মুখ দেখতে নেদারল্যান্ডসকে হারানো ছাড়া বিকল্প ছিলনা কোচ চান্ডিকা হাথুরুসিংহের শিষ্যদের। 

টসে হেরে বোলিং করতে নামা বাংলাদেশের একাদশে ছিল ২ পরিবর্তন। নাসুম আহমেদ ও হাসান মাহমুদের পরিবর্তে সুযোগ পান শেখ মাহেদী ও তাসকিন আহমেদ।

নেদারল্যান্ডস দলেও আসে ২ পরিবর্তন। তেজা নিদামানারু ও রিলফ ভ্যান ডার মারউইর জায়গায় ডাচ একাদশে জায়গা করে নেন ওয়েসলে বারেসি ও শারিজ আহমেদ।

বাংলাদেশ একাদশ: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), লিটন কুমার দাস, তানজিদ হাসান তামিম, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মেহেদী হাসান মিরাজ, শেখ মাহেদী, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম।

নেদারল্যান্ডস একাদশ: স্কট এডওয়ার্ডস (অধিনায়ক), বিক্রমজিৎ সিং, ম্যাক্স ও’দউদ, ওয়েসলে বারেসি, কলিন এ্যাকারমেন, ব্যাস ডি লিড, সিব্র্যান্ড এ্যাঙ্গেলব্রেক্ট, লোগান ভ্যান ভিক, শারিজ আহমেদ, আরিয়ান দত্ত, পল ভ্যান মিকরেন।

ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েও চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ নেদারল্যান্ডসের

ইনিংসের শুরুতেই মাত্র ৩ রান করে তাসকিন আহমেদের শিকার হন ডাচ ওপেনার বিক্রমজিৎ সিং। প্রথম উইকেট যাওয়ার রেশ কাটতে না কাটতেই তার বদলি হিসেবে নামা ম্যাক্স ও’দউদ শূন্য করে সাজ ঘরে ফিরেন। 

আরেক ডাচ ওপেনার ওয়েসলে বারেসি এবং ব্যাটার কলিন এ্যাকারমেন দলের হাল ধরে খেলতে থাকেন। তবে, এই দুজনের জুটি টিকেনি বেশিক্ষণ। পরপর ২ ওভারে মুস্তাফিজ ও সাকিবের শিকার হন বারেসি ও এ্যাকারমেন। 

৬৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে আইসিসির সহযোগী সদস্যভুক্ত দেশটি। এরপর, দলকে এগিয়ে নেন ব্যাস ডি লিড ও অধিনায়ক স্কট এডওয়ার্ডস।

মাঝে ব্যাস ডি লিড ১৭ রানে আউট হলেও অধিনায়কের দায়িত্ব ঠিকই পালন করেন এডওয়ার্ডস। টাইগার বোলারদের দেখেশুনে খেলে তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি।

অপরপাশ থেকে তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন সিব্র্যান্ড এ্যাঙ্গেলব্রেক্ট। উভয় ব্যাটার নিজেদের উইকেট হারানোর পূর্বে দলীয় সংগ্রহে যথাক্রমে ৬৮ ও ৩৫ রান যোগ করেন। 

শেষে লোয়ার অর্ডারে লোগান ভিকের ২৩, শারিজ আহমেদের ৬ ও আরিয়ান দত্তের ৯ রানে ৫০ ওভার শেষে সব উইকেট হারিয়ে ২২৯ রানের সংগ্রহ পায় নেদারল্যান্ডস।

ডাচদের বোলিং তোপের মুখে ধরাশায়ী বাংলাদেশের ব্যাটিং ইনিংস

টাইগারদের নিয়মিত ওপেনিংয়ে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও হতাশা উপহার দেন লিটন দাস। ৩ রানে আউট হওয়া লিটনের দেখানো পথেই পরের ওভারে ১৫ রানে ফিরেন তানজিদ তামিম।

দুই ওপেনারের পরিবর্তে ক্রিসে আসেন যথাক্রমে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মেহেদি হাসান মিরাজ। দুজনের জুটি কিছুটা আশার আলো দেখালেও নাজমুল শান্ত থিতু হতে পারেননি দীর্ঘক্ষণ। 

শান্তর পরপরই ৫ রানে মিকরেনকে উইকেট দিয়ে এবারের বিশ্বকাপে নিজের বাজে ফর্ম বজায় রাখেন ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান।

সাকিবকে অনুসরণ করেন ক্রিসে থাকা আরেক অলরাউন্ডার মেহেদী মিরাজ। সাকিবের ফেরত যাওয়ার পরের ওভারে ৩৫ রানে মিরাজকে প্যাভিলিয়নের পথ দেখান ডি লিড।

পরে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে লাল-সবুজরা। দলের শেষ ভরসা হিসেবে মাঠে ছিলেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ। তবে, দলের আস্থার প্রতিদান দিতে ব্যর্থ হন উভয়েই। 

মুশফিকের ১ রানের অবদানের পর শেখ মাহেদীকে নিয়ে শেষ চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ। শেখ মাহেদীর রান আউটের পর দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে শতক হাঁকানো রিয়াদ থামেন মাত্র ২০ রান করে।

এরপর, দলের বোলারদের আসা যাওয়ার মাঝে তাসকিন আহমেদের ১১ ও মুস্তাফিজের ২০ রানের পরও ৮৭ রানে পরাজয় স্বীকার করে নেয় বাংলাদেশ।

নেদারল্যান্ডসের হয়ে বোলিংয়ে ১০ উইকেটের মধ্যে ৪ উইকেট শিকার করে নেওয়া পল ভ্যান মিকরেন হয়েছেন ম্যাচ সেরা।

ম্যাচ স্কোরবোর্ড (Match Scoreboard)

নেদারল্যান্ডস    ২২৯/১০ (৫০ ওভার)

স্কট এডওয়ার্ডস – ৬৮ (৮৯)

মুস্তাফিজুর রহমান – ২/৩৬ (১০ ওভার)

বাংলাদেশ    ১৪২/১০ (৪২.২ ওভার)

মেহেদী হাসান মিরাজ – ৩৫ (৪০)

পল ভ্যান মিকরেন – ৪/২৩ (৭.২ ওভার)

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top