Ban vs Afg

Ban vs Afg বিশাল জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করল আফগানিস্থান!

বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্থানের ওয়ানডে সিরিজের প্রথম ম্যাচে অসাধারণ জয় পায় আফগানরা। দ্বিতীয় ম্যাচে সিরিজে টিকে থাকার লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামে বাংলাদেশ। তামিমের পরিবর্তনে দলে জায়গা পেয়েছে মোহাম্মদ নাঈম এবং তাসকিনের পরিবর্তে দলে এসেছে এবাদত হোসেন। 

টসে জিতে প্রথমে বোলিং করার সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ। আফগানিস্থানের পক্ষে ওপেনিংয়ে মাঠে নামে রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান। দুজনের অসাধারণ ওপেনিংয়ে দ্রুত রান এগোতে থাকে আফগানিস্থানের।

বাংলাদেশের বোলাররা কোনভাবেই সফলতা পাচ্ছিল না। দুই ওপেনারের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দলীয় দুইশত রান পার করে দ্রুতই। এরইমধ্যে সেঞ্চুরি তুলে নেয় গুরবাজ। অপরদিকে হাফ সেঞ্চুরি পার করে সেঞ্চুরির দিকে এগোচ্ছে জাদরান। 

সাকিব আল হাসান প্রথম সফলতার দেখা পান। তবে ততক্ষণে বেশ অনেকটাই দেরী হয়ে গিয়েছে। ৩৬ ওভারে আফগানদের দলীয় সংগ্রহ ২৫৬ রান। গুরবাজ একাই ১২৫ বলে ১৪৫ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছে।

১৩ টি চার ও ৮ টি ছক্কায় ১৪৫ রানের ইনিংস নিয়ে সাকিবের বলে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয়ে সাজঘরে ফিরে গুরবাজ। এরপর দ্রুতই আরও দু’টি উইকেট হারায় আফগানিস্থান। ২ রানের ইনিংস খেলে এবাদতের বলে মুস্তাফিজের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে রহমত শাহ্। পরের ওভারে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে বোল্ড হয় হাসমতউল্লাহ শহীদি। 

এরপর নাজিবুল্লাহ জাদরান কিছুক্ষণ স্থায়ী হলেও তাকেও সাজঘরে ফেরায় মিরাজ। এরপর মোহাম্মদ নবী আসে জাদরানকে সঙ্গ দিতে। মোহাম্মদ নবীকে সাথে নিয়ে সেঞ্চুরি সম্পূর্ণ করে জাদরান। তবে সেঞ্চুরি করেই ফিরতে হয় তাকে।

১১৯ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে শান্তর হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফিরে জাদরান। এরপর আর কেউ ক্রিজে দাঁড়াতে পারেনি। একে একে উইকেট হারাতে থাকে আফগানিস্থান। 

নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারিয়ে আফগানিস্থানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩৩১ রান। ১৫ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত ছিল মোহাম্মদ নবী। বাংলাদেশের পক্ষে দু’টি করে উইকেট শিকার করে মুস্তাফিজ, হাসান মাহমুদ, সাকিব ও মিরাজ। 

৩৩২ রানের লক্ষ্যে তাড়া করতে বাংলাদেশের পক্ষে ওপেনিংয়ে নামে মোহাম্মদ নাঈম ও লিটন দাস। তবে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। ৫ম ওভারেই প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১৫ বলে ১৩ রানের ইনিংস খেলে ফাজালহক ফারুকীর বলে মোহাম্মদ নবীর হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে অধিনায়ক লিটন দাস।

পরের ওভারেই মাত্র ১ রানের সংগ্রহ নিয়ে মুজিব উর রহমান এর বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে নাজমুল হোসেন শান্ত। আরেক ওপেনার নাঈম টিকে থাকলেও তেমন সুবিধা করতে পারছিলো না। অবশেষে তাকেও তুলে নেয় ফারুকী। ২১ বলে ৯ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় নাঈম। 

এরপর দলের হাল ধরে তৌহিদ হৃদয় ও সাকিব আল হাসান। তবে তাদের জুটিও লম্বা হতে দেয়নি রশিদ খান। ৩৪ বলে ১৬ রান করে রশিদ খানের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরে হৃদয়। পরের ওভারেই আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তে এলবিডব্লিউয়ের শিকার হয় সাকিব।

২৯ বলে ২৫ রানের ইনিংস খেলে বিদায় নেয় সাকিব আল হাসান। সাকিব ফেরাতে আফিফ নামে মাঠে কিন্তু প্রথম বলেই শূন্য রানে সাজঘরে ফিরে আফিফ। 

মাত্র ৭৬ রানে ৬ উইকেট হারালে পরাজয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে যায়। তাও লড়াইয়ের চেষ্টা করে মুশফিকুর রহিম ও মেহেদী হাসান মিরাজ। কিন্তু আর সম্ভব হয়নি। ৪৮ বলে ২৫ রানের ধীর ইনিংস খেলে সাজঘরে ফিরে মিরাজ। এরপর হাসান মাহমুদ নেমে ৪ রানের ইনিংস নিয়ে বিদায় নেয়। অপর প্রান্তে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ন করে মুশফিক।

অবশেষে ফারুকীর শিকারে পরিণত হয় মুশফিকও। ৮৫ বলে ৬৯ রানের ইনিংস খেলে ফারুকীর বলে মুজিবের হাত বন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরে মুশফিক। ইনজুুরির কারণে ক্রিজে আসতে ব্যর্থ হয় এবাদত হোসেন। 

এতে মাত্র ৪৩.২ ওভারেই ৯ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। মোট সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৮৯ রান। এতে ১৪২ রানের বিশাল জয়ে সিরিজ নিশ্চিত করে আফগানিস্থান। আফগানদের পক্ষে সর্বোচ্চ তিনটি করে উইকেট শিকার করে ফাজালহক ফারুকী ও মুজিব উর রহমান এবং দুটি উইকেট শিকার করে। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর : 

আফগানিস্থান – ৩৩১/৯ (৫০) 

রহমানউল্লাহ গুরবাজ ১৪৫ (১২৫)

ইব্রাহিম জাদরান ১০০ (১১৯)

মোহাম্মদ নবী ২৫ (১৫)

সাকিব আল হাসান ২ – ৫০ – ১০

মেহেদী হাসান মিরাজ ২ – ৬০ – ১০

মুস্তাফিজুর রহমান ২ – ৬০ – ১০

বাংলাদেশ – ১৮৯/৯ (৪৩.২)

মুশফিকুর রহিম ৬৯ (৮৫)

সাকিব আল হাসান ২৫ (২৯)

মেহেদী হাসান মিরাজ ২৫ (৪৮)

ফাজালহক ফারুকী ৩ – ২২ – ৭.২

মুজিব উর রহমান ৩ – ৪০ – ১০

রশিদ খান ২ – ২৮ – ৯

ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছে রহমানউল্লাহ গুরবাজ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top