আফগানিস্তানের বিপক্ষে

রেকর্ড ৫৪৬ রানের বিশাল জয়ে একমাত্র টেস্টে বিজয়ের হাসি হাসলো টাইগাররা!

মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্টে প্রথম দিনেই দূর্দান্ত ব্যাটিং প্রদর্শন করেন দুই বাংলাদেশী ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত এবং মাহমুদুল হাসান জয়। 

প্রথম দিনে আফগানিস্তান বোলারদের ছন্নছাড়া বোলিংয়ে শান্ত নিজের ক্যারিয়ারের তৃতীয় শতক পূর্ণ করেন। তাকে সঙ্গ দেওয়া মাহমুদুল হাসান জয়ও নিজের অর্ধ শতক তুলে নেন। 

নাজমুল হোসেন শান্তর দৃষ্টিনন্দন সেঞ্চুরি এবং মাহমুদুল হাসান জয় ফিফটি এবং মুশফিক ও মিরাজের ছোট ছোট ইনিংসে ৩৮২ রান করে নিজেদের প্রথম ইনিংস শেষ করে টাইগাররা। 

নিজেদের প্রথম ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশের পেসারদের সামনে ভালো ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হন আফগান ব্যাটাররা। ইবাদত, তাসকিন, শরীফুল ও মিরাজদের দারুণ বোলিংয়ে মাত্র ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারীরা।

দ্বিতীয় দিনে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামা বাংলাদেশ এবারও দারুণ ব্যাটিং উপহার দেয় দর্শকদের। প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান নাজমুল হোসেন শান্ত এবার নিজের জুটি বাঁধেন আরেক তরুণ ওপেনার জাকির হাসানের সাথে। 

শান্ত দ্বিতীয় ইনিংসে শতক করে সাজ ঘরে ফিরলেও ছন্দশীল ব্যাটিং করে নিজের ১২তম টেস্ট শতক তুলে নেন বাংলাদেশের লিটল মাস্টার মুমিনুল হক। মুমিনুল হকের সেঞ্চুরির পর ৬৬১ রানের লিড নিয়ে ইনিংস ঘোষণা করে টাইগাররা।

৬৬২ রানের রেকর্ড সমান টার্গেট তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় আফগানরা। ইনিংসের প্রথম দুই ওভারেই দলের দুই ওপেনার আউট হয়ে সাজ ঘরে ফিরলে তৃতীয় দিনের খেলা শেষ হয়।

চতুর্থ দিনের শুরুতে আবারও ব্যাটিং ব্যর্থতায় পড়ে আফগানিস্তান। টাইগার পেসারদের বোলিংয় তোপে একের পর এক আফগান ব্যাটার প্যাভিলিয়নের পথে যেতে থাকেন। আগের দিন চোট পেয়ে মাঠ অধিনায়ক হাসমাতুল্লাহ শহিদী আর মাঠে নামতে পারেননি।

একপ্রান্ত আগলে রেখে প্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করেন রহমত শাহ। কিন্তু, তিনিও তাসকিন আহমেদের বলে ৩০ রান করে প্যাভিলিয়নে ফিরলে আর কোনো আফগান ব্যাটার মাঠে বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি।

এরপর, নিয়মিত বিরতিতে করিম জানাত, আমির হামজা ও ইয়ামিন আহমেদজাইরা আউট হয়ে মাঠ ছাড়তে থাকেন। আফগান দলের শেষ ব্যাটার জহির খান চোট পেয়ে আউট হলে ১১৫ রানেই গুটিয়ে যায় সফরকারীরা। 

ফলে, ৫৪৬ রানের বিশাল জয়ে মিরপুরে সিরিজের একমাত্র টেস্ট জয় করলো বাংলাদেশ। লিটন দাসের নেতৃত্বে এই টেস্টের মধ্য দিয়ে ৪ বছর আগে ২০১৯ সালে ২২৪ রানে আফগানদের কাছে টেস্ট হারের প্রতিশোধ নিলো স্বাগতিকরা। 

টাইগারদের ৫৪৬ রানের জয় টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় সর্বোচ্চ। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো ৫০০ থেকে বেশি রানের জয় দেখলো ক্রিকেট বিশ্ব। এশিয়ান দল হিসেবে সর্বোচ্চ রানের জয়ের রেকর্ডও এখন বাংলাদেশের নামে। 

লিটন দাসের অধীনে এই প্রথম বার টেস্টে নেমে প্রথমবারেই টেস্ট জয় করলো বাংলাদেশ। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে দ্বিতীয় ব্যাটার হিসেবে এক ম্যাচের দুই ইনিংসেই শতক হাঁকানো নাজমুল হোসেন শান্ত হন প্লেয়ার অফ দ্যা ম্যাচ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top
Scroll to Top